দ্য হিন্দুকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জেনারেল মুনিরুজ্জামান- বাংলাদেশের রাজনীতি আর আগের অবস্থানে নেই এ চ্যালেঞ্জ বুঝেই ভারতকে কাজ করতে হবে


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৪, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ /
দ্য হিন্দুকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জেনারেল মুনিরুজ্জামান- বাংলাদেশের রাজনীতি আর আগের অবস্থানে নেই এ চ্যালেঞ্জ বুঝেই ভারতকে কাজ করতে হবে

বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটে গেছে তা মেনে নিতে হবে ভারতকে। প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে প্রলোভন এড়িয়ে ভারতকে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (বিআইপিএসএস)-এর প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল এ.এন.এ. মুনিরুজ্জামান (অব:)। দ্য হিন্দুকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন অভিমত প্রকাশ করেন বাংলাদেশের এ নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

ভারতকে বাংলাদেশের সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে হবে, এমন তাগিদ দিয়ে মুনিরুজ্জামান বলেন, ভারত-বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা এড়িয়ে ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের ভিন্ন চিন্তা করার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর দিল্লির সাথে ঢাকার সম্পর্কের বাঁক পরিবর্তন শুরু হয়েছে। কেননা দিল্লি বরাবরই শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগকে তাদের প্রধান মিত্র ভেবেছে। যার ফলে ভারত হাসিনার সব কাজেই সমর্থন দিয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে তারা ন্যায়-অন্যায় বিচার করেনি। এতে হাসিনার সাথে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের সমর্থন হারিয়ে বেশ চিন্তাতেই পড়েছে দিল্লি। তারা সার্বক্ষণিক বাংলাদেশের রাজনীতি এবং সামাজিক পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর জারি করেছে। কেননা দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ বাংলাদেশের বিগত সরকারই ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিল।

মুনিরুজ্জামান মনে করেন ভারতকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের সব পক্ষের সাথে সম্পৃক্ত হতে হবে। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের ঘটনার পর বাংলাদেশের রাজনীতি আর আগের অবস্থানে নেই এবং এ পরিস্থিতিতে এক পক্ষীয় কূটনীতি পরিচালনা করা যায় না এবং ভারতকে দ্রুত এ বিষয়টি উপলব্ধি করতে হবে। ঢাকার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক বিনির্মাণে নতুন করে ভাবতে হবে।

জেনারেল মুনিরুজ্জামান বলেন, হাসিনা সরকারের পতনকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সমাপ্তি বলে ব্যাখ্যার দরকার নেই বিধায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বাংলাদেশের জনগণের সাথে সম্পৃক্ততা বাড়ানো উচিত।

শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে নজির স্থাপন হয়েছে সেটাই বলে দিচ্ছে দেশটির রাজনৈতিক লক্ষ্য এখন আর আগের স্থানে নেই। বর্তমানে অর্ন্তবর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। এ সরকারে ছাত্রদের একাধিক প্রতিনিধি দায়িত্ব পালন করছেন। বিশেষ করে যে সুশীল সমাজ এবং ছাত্র নেতারা হাসিনার পতনকে ত্বরান্বিত করেছিল তারাই অন্তর্বর্তী সরকারে রয়েছেন। আশা করা যায় এ সরকার গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনতে অধিক সহায়ক হবে। ৫ আগস্ট আকস্মিকভাবে শেখ হাসিনার শাসনের অবসানের আগাম সতর্কবার্তা দিল্লির মনোযোগ আকর্ষণ করেনি। তারা বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থকে পাত্তা দেয়নি। তিনি আরো বলেন, ভারতকে বাংলাদেশের সাথে জড়িত থাকতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে প্রলোভন এড়িয়ে যেতে হবে। ভারতকে বাংলাদেশের ইতিহাসের সঠিক দিকটিতে থাকতে হবে। বাংলাদেশ যে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে ভারতকে তা সৃজনশীল পদ্ধতিতে মোকাবেলা করতে হবে।