পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে দুই যুগের পর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ৫, ২০২৫, ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ /
পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে দুই যুগের পর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি

গঙ্গার পানি বণ্টন নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের দুই যুগ পার হয়ে গেছে। এ দীর্ঘ সময়ে পানির ন্যায্য হিস্যা পায়নি বাংলাদেশ। তবে পানির ন্যায্য হিস্যা না পেলেও এ বছর ঈশ^রদীর পাকশীতে পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে সর্বোচ্চ পরিমাণ পানি প্রবাহিত হয়েছে। রোববার সরেজমিন পানি পরিমাপ করার পর এ অবস্থার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

পাউবোর হাইড্রোলজি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ-ভারত পানি চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের পদ্মা ও গঙ্গায় যৌথভাবে পানি পর্যবেক্ষণ শুরু হয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ২০২৩ সালের তুলনায় বেশি ছিল। গত ১ জানুয়ারি সকাল ৯টায় পাবনার ঈশ^রদীর পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ও ভারতের গঙ্গার ফারাক্কা পয়েন্টে দুই দেশের প্রতিনিধি দল এ পর্যবেক্ষণ শুরু করে। এ সময় সেখানে পানির পরিমাণ ছিল ৫ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার। গত বছর এদিনে ছিল ৫ দশমিক ৬২ সেন্টিমিটার।

ভারতীয় প্রতিনিধি দলের কর্মকর্তারা হলেন-দেশটির সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মুত্তাত লিও ফ্রাংলিন ও সহ-পরিচালক রিতেশ কুমার। তিন সদস্যের বাংলাদেশ টিমে রয়েছেন উত্তরাঞ্চলীয় পানি বিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোফাজ্জল হোসেন ও উপসহকারী প্রকৌশলী ইলিয়াস হোসেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে কর্তব্যরত উপসহকারী প্রকৌশলী ইলিয়াস হোসেন। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ পানি চুক্তির পর থেকে প্রতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত এ পর্যবেক্ষণ চলে। চুক্তি অনুযায়ী ভারতের ফারাক্কা পয়েন্ট ও বাংলাদেশের হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পর্যবেক্ষণ চলে থাকে।

প্রকৌশলী ইলিয়াস হোসেন জানান, চলতি বছর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি। গত বছর এ সময়ে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ ছিল ৭৮ হাজার ৫০০ কিউসেক। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ছিল ৮৫ হাজার কিউসেক।

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, প্রথম ১০ দিন ফারাক্কায় ৭০ হাজার কিউসেক বা তার কম পানির প্রবাহ থাকলে বাংলাদেশ ও ভারত উভয়েই ৫০ শতাংশ করে পানি পাবে। দ্বিতীয় ১০ দিন ফারাক্কা পয়েন্টে ৭০ হাজার কিউসেক পানিপ্রবাহ থাকলে বাংলাদেশ ৩৫ হাজার কিউসেক পানি পাবে। তৃতীয় ১০ দিন ফারাক্কা পয়েন্টে ৭৫ হাজার কিউসেক বা তার বেশি পানিপ্রবাহ থাকলে ভারত পাবে ৪০ হাজার কিউসেক পানি, বাকিটা পাবে বাংলাদেশ। তবে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ১১ মার্চ থেকে ১০ মে পর্যন্ত বাংলাদেশ-ভারত উভয় দেশ ৩ দফা ১০ দিনের হিসাবের ক্রমানুসারে ৩৫ হাজার কিউসেক করে পানি পাবে।

১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর উভয় দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব নয়াদিল্লিতে একটি ৩০ বছরের সামগ্রিক চুক্তি স্বাক্ষর করেন। চুক্তি অনুযায়ী ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ফারাক্কা থেকে দুই দেশের মধ্যে পানি বণ্টন করা হতে থাকে। পূর্ববর্তী ৪০ বছরের গড় মাত্রা অনুযায়ী ভারত গঙ্গার পানির ভাগ পেতে থাকে।