পদ্মা সেতুর নিরাপত্তায় দুই পাশে দুটি নতুন থানা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এরমধ্যে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং প্রান্তের থানাটির নাম হচ্ছে ‘পদ্মা সেতু উত্তর থানা’ এবং শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টেরটি ‘পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা’ নামে ব্যবহৃত হবে। শুধু সেতুর নয়, দুই পারের মানুষের নিরাপত্তাও দেবে থানা দুটি। প্রায় ৩২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে চারতলা এই ভবন দুটি নির্মাণ করেছে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ।
এক জন সহকারী পুলিশ সুপারসহ ৪০ জন করে পুলিশ সদস্য থাকবেন প্রতিটি থানায়। সংযোগ সড়কের টোলপ্লাজার পাশে থানা ভবনের অবকাঠামো নির্মাণ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।
জানা গেছে, সেতুর দুই প্রান্তেই দুটি করে ইউনিয়ন এই থানা দুটির অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। লৌহজংয়ের মাওয়া প্রান্তের থানার আওতায় থাকবে মেদেনীমণ্ডল ও কুমারভোগ ইউনিয়ন। জাজিরা পয়েন্টের থানার আওতায় থাকবে পূর্ব নাওডোবা ও পশ্চিম নাওডোবা ইউনিয়ন। পদ্মা সেতু প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধনের পর ঐ সেতু দিয়ে দিনে-রাতে ২৪ ঘণ্টায় যানবাহন চলাচল করবে।
সারা দেশের মানুষ ও পর্যটকরা সেতু দেখতে যাবেন। ঐ সময় সেতু এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা ফোর্স থাকবে। পুলিশ ছাড়াও অন্যান্য বাহিনীর লোকজন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। চলবে নিরাপত্তা কঠোর নজরদারি। তারা পোশাকে ও সাদা পোশাকে সর্বক্ষণ খোঁজখবর রাখবেন বলে সূত্র জানায়।
আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগেই থানা দুটি উদ্বোধন হতে পারে বলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার সূত্র জানায়। পুলিশের নতুন থানাসমূহের যে টাইপ প্ল্যান রয়েছে সে প্ল্যান মোতাবেক জনগণকে সেবা দেওয়াসহ সব সুযোগ-সুবিধা রেখেই থানা দুটির নির্মাণকাজ করা হয়েছে।
পদ্মা নদীর উভয় প্রান্তের এই এলাকা একসময় বলতে গেলে জনশূন্য ছিল। তবে সরেজমিনে দেখা যায়, পদ্মা সেতুকে ঘিরে দুই পারের জীবনযাত্রা পালটে গেছে। নতুন নতুন জনবসতি তৈরি হচ্ছে, নতুন নতুন হাটবাজার বসছে। মানুষজন এখানে বসবাস করতে শুরু করেছে।
তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশের প্রশাসনিক কার্যক্রম দরকার ছিল। মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার মেদেনীমণ্ডলে পদ্মা সেতুর টোলপ্লাজার অদূরে এই থানা ভবন দেখে খুশি এলাকার মানুষজন।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল ও শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে উভয়েই জানান, জনবল অনুমোদন হয়েছে এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। মাওয়া প্রান্তের থানা ভবনটি নির্মাণে খরচ হয়েছে ১৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, জাজিরা প্রান্তে ১৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
প্রায় দুই বছর আগে ভবন দুটির নির্মাণ শেষ হয়। এতদিন থানা দুটি ট্রাফিক পুলিশ ব্যবহার করেছে। সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, থানা দুটির কাজ শুরু হলে পদ্মা সেতুর আশপাশে দুর্ঘটনা প্রতিরোধসহ দুর্ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। সর্বোপরি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সম্ভব হবে।