শেখ নাজমুল ইসলাম, শার্শা যশোর: এক বছরে দুই খান খুশী আমরা মুসলমান ৷ একখান হলো রমজানের ঈদ আর এক খান কুরবান ৷
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৯১ ভাগ মুসলিমের ধর্মীয় বড় উৎসব দুটির মধ্যে অন্যতম ঈদ উল আজহা বা কোরবানীর ঈদ ৷ ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশে প্রতিবছর ১কোটির ও বেশী পশু কোরবানী করা হয়ে থাকে ৷
কোরবানী উপলক্ষে পশু কেনা বেচার জন্য স্থায়ী পশু হাট ছাড়া ও দেশ ব্যাপী অনেক যায়গায় অস্থায়ী হাট বসানো হয় ৷ পশু হাট গুলোতে সাধারন ক্রেতাদের ঠকানোর জন্য অংখ্য দাদাল ওত পেতে থাকে ৷ সাধারনত কোরবানীর জন্য যারা পশু ক্রয় করতে যায় তারা বছরে শুধু এই সময়টাতে হাটে যায়৷ তাই ঐ সব পশু সস্পর্কে তাদের তেমন ধারনা থাকে না ৷
দাদালরা সেই সুযোগ টা কাজে লাগিয়ে সাধারন ক্রেতাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় ৷ তাই সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে পশু ক্রয় বিক্রয়ে লাইভ ওয়েট পদ্বতি চালু করা দরকার ৷
একটি গরু বিক্রয়ের জন্য হাটে আনা হলে হাট কতৃপক্ষ গরুটা স্কেলে ওজন করে তার গলায় একটা টোকেন ঝুলিয়ে দিবে ৷ টোকেনে গরুর ওজন সহ গ্রেট লেখা থাকবে ৷ যেমন : ষাড় গরুর গ্রেট ধরা হলো A ৷
এবার ৫০ থেকে ১৫০ কেজি ওজনের গরু গুলোর গ্রেট A-1, ১৫০ থেকে ২৫০ কেজি পর্যান্ত A-2 , ২৫০ থেকে তদুর্ধ A-3 ৷ গ্রেট করা হলো ৷
বকনা বা গাভীর ক্ষেত্রে গ্রেট ধরলাম B . ওজন অনুযায়ী এখানে ও B-1, B-2 এবং B -3 গ্রেট করা হলো ৷ একই ভাবে বলদ গরুকে আমরা C গ্রেট দিয়ে ওজন অনুসারে C-1, C-2, C-3 গ্রেট করতে পারি ৷
এবার হাটের প্রতেক টি গরুর গলায় তার গ্রেট ওজন সহ টোকেন গলায় ঝুলানো থাকলো ৷ বিক্রেতা তার গরুর চেহারা ও স্বাস্থ্য অনুযায়ী বিক্রেতার কাছে কেজি প্রতি দাম চাইবে ৷
ধরা যাক বড় মাপের ষাড় গরুর দাম চাইলো কেজি প্রতি ৭৫০ টাকা ,মাঝারি সাইজের ৭০০ এবং ছোট সাইজের গরু ৬০০ টাকা ৷ একই ভাবে গাভী বকনা ও বলদ গরুর দাম ও চাইতে হবে ৷ এই পদ্বতি চালু হলে ক্রেতা তার বাজেট অনুয়ায়ী অল্প সময়ের ভিতর কোন প্রকার প্রতারনার শিকার না হয়ে গরু ক্রয় করে চলে যেতে পারবে ৷
বাংলাদেশে কিছু বড় বড় খামার মালিকরা এই লাইভ ওয়েট পদ্ধতিতে গুরু বিক্রয় শুরু করছে ৷ কিন্ত এই পদ্ধতি রাষ্টিয় ভাবে সারা দেশ ব্যাপি চালু করার ব্যাবস্থা নেওয়া দরকার ৷ আমরা একে অপারকে ঠকানোর যে প্রতিযোগিতায় নেমেছি তার থেকে পরিত্রানের জন্য এভাবে একটা একটা সেক্টরে পরিবর্তন আনতে হবে ৷
জীবন্ত গরুর ওজন করে জবাই করার পর ৬০% সলিট মাংশ পাওয়া যায় ৷ তাছাড়া হাড় মাথা ভুড়ি পায়া পাওয়া বাবে ৷ সেই হিসেব করে একজন ক্রেতা গরুর দাম বলতে পারবে তাতে ক্রেতার ঠকার সম্ভাবনা কম থাকবে ৷
এক শ্রেনীর লোক আছে যারা সাধারন ক্রেতাদের ঠকিয়ে আসছে , তারা বলবে এটা কোন দিন সম্তব না ৷ আমরা বাজার থেকে হাঁস মুরগী যদি লাইভ ওয়েট পদ্ধতিতে ক্রয় বিক্রয় করতে পারি তবে গরু ছাগল বা মহিষের বেলায় কোন সস্তব নয় ৷ হাঁস মুরগী আকারে ছোট আর গরু ছাগল মহিশ আকারে বড় এটাই পার্থক্য ৷
আসুন আমরা যারা সাধারন লোক, যারা কাউকে ঠকাতে চাইনা এবং নিজেরা ও ঠকতে চাইনা , তারা যার যার যায়গা থেকে আওয়াজ তুলি ৷ ” দূর্নিতী কে পিছনে ফেলি, পশু হাটে লাইভ ওয়েট পদ্ধতি চালু করি ” ৷ আমার সাথে একমত হলে বিষয়টি শেয়ার করে প্রশাসনের দৃস্টি আকর্শনের চেষ্টা করি ৷
আপনার মতামত লিখুন :