জেনিনে অভিযানের সময় ইসরাইলি সৈন্যরা- ছবি সংগৃহীত
অধিকৃত পশ্চিমতীরের জেনিন শহরে অভিযানের সময় ইসরাইলি সৈন্যরা দুই ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছে। ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুসারে, তারা সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণের চেষ্টা করেছিলেন। সে সময় তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) জেনিনের সাংবাদিকদের সূত্রে আল জাজিরার নুর ওদেহ জানিয়েছেন, ওই দুই ব্যক্তি ‘তাদের শার্ট টেনে তুলে দেখিয়েছিলেন যে তারা নিরস্ত্র’। কিন্তু তারা যে ভবনে লুকিয়ে ছিলেন সেখানে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ইসরাইলি বাহিনী এবং সে সময়ই তাদের গুলি করে হত্যা করে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের নাম আল-মুনতাসির বিল্লাহ আবদুল্লাহ (২৬) এবং ইউসুফ আসাসা (৩৭)।
এদিকে ইসরাইলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, তাদের সৈন্যরা জেনিন এলাকায় ‘একটি সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত’ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় এবং আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়া শুরু করে যা কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভবন থেকে বেরিয়ে আসার পর ‘সন্দেহভাজনদের দিকে গুলি চালানো হয়’। ’ঘটনাটি মাঠ পর্যায়ে থাকা কমান্ডাররা পর্যালোচনা করছে এবং তা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোতে হস্তান্তর করা হবে।’ কিন্তু ওদেহ উল্লেখ করেন, ফিলিস্তিনিদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ইসরাইলি পর্যালোচনা সাধারণত ‘অভিযোগ বা ফৌজদারি তদন্তের মাধ্যমে শেষ হয় না’।
অন্যদিকে, এই গুলিবর্ষণকে ‘জঘন্য বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ এবং ‘ইচ্ছাকৃত ইসরাইলি যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ‘ইসরাইলের হত্যাযজ্ঞ বন্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়ার’ আহ্বান জানায়।
রাজনৈতিক দল প্যালেস্টাইন ন্যাশনাল ইনিশিয়েটিভের প্রধান মুস্তাফা বারঘৌতিও জেনিনে প্রাণঘাতী গুলিবর্ষণের ঘটনাকে ‘মর্মান্তিক অপরাধ’ বলে নিন্দা জানান। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া বার্তায় বলেন, ‘ইসরাইলি সেনাবাহিনী ক্যামেরার সামনে দুই ফিলিস্তিনিকে আত্মসমর্পণ করার পর এবং গ্রেফতার করার পরও তাদের হত্যা করে। ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কে কেউ কিভাবে চুপ থাকতে পারে?’
ইসরাইলের কট্টরপন্থী জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এই হত্যাকাণ্ডকে স্বাগত জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, ‘ইসরাইলি বাহিনী তাদের কাছ থেকে ঠিক যেমনটি প্রত্যাশা করা হয় তেমন আচরণই করেছে- সন্ত্রাসীদের অবশ্যই মরতে হবে!’
সূত্র : আল জাজিরা