স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, পুলিশ বাহিনীকে সেবা প্রদানের মাধ্যমে নিজেদের প্রমাণ করার এখনই উপযুক্ত সময়। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন অরাজনৈতিক সরকারের প্রেক্ষাপট এনে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত এ সরকারের আমলে সততা, দক্ষতা ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এটিকে কাজে লাগিয়ে পুলিশ বাহিনীকে দেশ ও জাতির সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে।’
উপদেষ্টা আজ দুপুরে বরিশাল পুলিশ লাইন্সের গ্রাটিটিউড হলে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), কোস্টগার্ড, আনসার ও ভিডিপি, কারা অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং প্রশাসনের উর্ধবতন কর্মকর্তাগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সেজন্য বাহিনীর সদস্যদের চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে এবং নিজেদেরও এটি থেকে দূরে থাকতে হবে। তা না করতে পারলে বাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন হবে এবং ৫ আগস্টের শহিদদের রক্ত বৃথা যাবে। এ সময় তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কমিউনিটি পুলিশিংয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সাদা পোশাকে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। পরিচয় ছাড়া কাউকে আইনের আওতায় আনা যাবে না। তিনি বলেন, পুলিশের বিভিন্ন থানায় থাকা, খাওয়া ও শৌচাগারের অবস্থা ভালো নয়। পুলিশ সদস্যদের এসব সমস্যা-সমাধানে মনোনিবেশ করতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করেন তিনি ।
উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা প্রদানের জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে ২ মাসের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছিল। যার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হবে এবং এতে বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে অন্তর্ভুক্ত করার চিন্তা-ভাবনা সরকারের রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মতবিনিময় সভা শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার পুলিশকে জনবান্ধব বাহিনীকে পরিণত করতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠনসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, অন্যান্য এলাকার চেয়ে বরিশালের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলনামূলক ভালো। তিনি আরও বলেন, মাঝে মধ্যে বিভিন্ন দাবি-দাওয়াকে কেন্দ্র করে রাস্তা অবরোধ করা হয়। তিনি এটিসহ বিভিন্ন জনভোগান্তি রোধে পুলিশকে আরো সচেষ্ট হওয়ার নির্দেশ দেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. ময়নুল ইসলাম, র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাওছার, পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. মঞ্জুর মোর্শেদ আলম, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।
সূত্র: বাসস