কম্পেসন ইন্টারন্যাশনাল ঠিকরাবাদ অফিসের ম্যানেজার ডলফিন বিশ্বাসের অধিনস্ত চাকুরি করাকালিন রাজ বিশ্বাস স্কুলছাত্রী সাথীকে ট্রাপে ফেলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক শারীরিক সম্পর্কে গড়ালে স্কুলছাত্রী রাজ বিশ্বাসকে বিয়ের চাপ দিলে রাজ বিশ্বাস সাথীকে কয়েক দফায় বেধড়ক মারপিট করে। বিষয়গুলো ডলফিন বিশ্বাসকে জানালেও তিনি রাজ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।
গত শনিবার (১৫ জুন) রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে যে কোন সময়ে সে প্রেমিক রাজকে ভিডিও কলে রেখে সে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মৃত্যুবরন করার পরে নড়েচড়ে বসেছেন ডলফিন বিশ্বাস। তিনি নিজেকে রাজ বিশ্বাসকে সেভ করতে যারপর নাই দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন।

প্রেমিক রাজ বিশ্বাস- সাবা
মৃত্যুর তিনদিন আগে সাথী আক্তার তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছিলো “আহা শখের পুরুষ, তুমি যে পরিমাণ খেলা দেখাইলা, সে খেলায় মির্জাফরও ফেল__ ” আর ১৪ জুন লিখেছিলো “আমারে দেখিবার আইসো শেষ জানাযার আগে যেন পরকালে তোমায় দেখার একটু স্বাদ না জাগে…!” এর আগে ৩ জুন লিখেছে “আমি তোমাকে ভিষন ভালো বাসি,,,আর শুধু এই জন্ম না প্রিয় আমি যত বার জন্ম নিব ততবার তোমার প্রেমে পরতে চাই,, তুমি সেই পুরুষ যে আমাকে খুব করে আগলে রাখো,,, হয়তো মাঝে মাঝে একটু বেশিই মারো কিন্তু তার পর ও তো তুমি আমাকে ভালো বাসো R ”। ৩ জুনের স্ট্যাটাসের শেষে ”R” এর পুরো নাম রাজ বিশ্বাস।ডলফিন বিশ্বাসের সাথে কথা বললেন তিনি জানান, রাজ বিশ্বাসকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সাথীর পরিবারের সাথে যোগাযোগের বিষয় সম্পর্কে তিনি জানান, উর্ব্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তিনি বিষয়টি নিয়ে কাজ করছিলেন। যেহেতু থানা পুলিশ হয়েছে সেহেতু তিনি এবিষয়ে আর সামনে এগুবেন না বলে জানান।
স্কুলছাত্রীর ফেসবুক বন্ধ:
স্কুলছাত্রী সাথীর ফেসবুক আইডি লক করে রেখেছে প্রতারক রাজ বিশ্বাস। সাথীর ঘনিষ্টরা জানান, সাথীর ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড ছিলো প্রতারক রাজের কাছে। অন্যকারো সাথে সাথী কথা বলে কি না –সেটা দেখভালের জন্য সাথীর ফেসবুক আইডি সব সময় মিনিটরিং করেতো রাজ বিশ্বাস। সাথীর আত্মহননের পর থেকে রাজ বিশ্বাস পলাতক আছে। তার ব্যবহৃত মোবাইল ( 01305230436) নম্বরটিও বন্ধ রয়েছে। রাজ বিশ্বাস চার্চ অফ দ্য নাজারেন ইন্টারন্যাশনাল-বাংলাদেশ দক্ষিণ জেলার হিসাবরক্ষক পদে কর্মরত। ফেসবুক আইডিতে যেহেতু সাথীর অনেক স্ট্যাটাস ছিলো সেগুলো আড়াল করতেই ফেসবুক ডিএক্টিভ করে রেখেছে রাজ বিশ্বাস।
সাথীর বাবার বক্তব্য:
প্রেমিক রাজ বিশ্বাসের প্রতারনার শিকার স্কুলছাত্রী সাথী আক্তারের পিতা ইউসুফ শেখ বলেন, হরিনটানা থানায় তার মেয়ের আত্মহত্যার বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিকভাবে অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে মামলা দায়ের হবে আমরা পুলিশের দিকে তাকিয়ে আছি। তারা মামলা রেকর্ড না করলে আমরা আদালতে যাবো। ডলফিন বিশ্বাসের ব্যাপারে তিনি জানান, ডলফিন বিশ্বাসের অধিনস্ত ছিলো রাজ বিশ্বাস। রাজের ব্যাপারে আমরা ম্যানেজার ডলফিনকে বারবার জানিয়েছি কিন্তু তিনি কোন ব্যবস্থা নেয়নি। সাথীর আত্মহত্যার পরে বিভিন্নভাবে আমাদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদের টাকার প্রস্তাব দিচ্ছেন। ডলফিন বিশ্বাস আমার মেয়ের মৃত্যুর দায় এড়াতে পারেন না। তিনি আরো জানান, সাথীর ব্যবহৃত মোবাইলে অনেক ডকুমেন্ট আছে। মোবাইলটি থানায় পুলিশের হেফাজতে আছে।
পুলিশের বক্তব্য:
স্কুলছাত্রী সাথীর আত্মহত্যার ব্যাপারে হরিনটানা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম বলেন, থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে যাচ্ছি অনেক তথ্য উপাত্ত পেয়েছি। স্কুলছাত্রীর বাবা মা ও বন্ধবীদের সাথে কথা হয়েছে। শীঘ্রই পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।