বগুড়া সদরের ইসলামপুর (হরিগাড়ি) পশ্চিম পাড়ায় নিজ বাড়িতে লাইলী বেওয়া (৮০) নামের এক বৃদ্ধা এবং তার নাতিবউ হাবিবা ইয়াসমিন (২১) দুর্বৃত্তরা কে নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যা করেছে। এই ঘটনায় বন্যার সাবেক প্রেমিক সৈকত ইসলাম নামের এক যুবককে দায়ী করেছেন স্বজনরা। বগুড়া সদরের ইসলামপুর (হরিগাড়ি) পশ্চিম পাড়ায় নিজ বাড়িতে নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যার শিকার হয়েছেন লাইলী বেওয়া (৮০) নামের এক বৃদ্ধা এবং তার নাতিবউ হাবিবা ইয়াসমিন (২১)।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৯টার দিকে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই যুবতী গৃহবধূর কিশোরী ননদ বন্যাকেও (১৫) ছুরিকাঘাতে জখম করা হয়। এই ঘটনায় বন্যার সাবেক প্রেমিক সৈকত ইসলাম নামের এক যুবককে দায়ী করেছেন হতাহতদের স্বজনরা।
নিহত হাবিবা ইয়সমিন ওই এলাকার পারভেজ ইসলামের স্ত্রী। লাইলী বেওয়া ছিলেন পারভেজের দাদি এবং আহত বন্যা তার ছোট বোন। ছুরিকাহত বন্যা বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
পারভেজের পরিবারের সদস্যরা জানায়, বন্যা এবারের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। স্কুলে পড়ার সময় প্রতিবেশী সৈকত নামের এক যুবকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সৈকত নেশাগ্রস্ত হওয়ায় বিষয়টি জানার পর পরিবারের চাপে তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বন্যা। তার পর থেকেই সৈকত মেয়েটিকে প্রায়ই উত্যক্ত এবং বিয়ের জন্য পরিবারের ওপর চাপ দিয়ে আসছিল।
ঘটনার সময় বন্যার বাবা বুলবুল ও মা পারভীন—দুজনেই বাড়ির কাছে তাদের মুদি দোকানে ছিলেন। তাদের দুই ছেলের মধ্যে ছোট ছেলে কৌশিক প্রাইভেট পড়তে গিয়েছিল; পারভেজও বাড়ির বাইরে ছিলেন। বাড়িতে তখন লাইলী বেওয়া, হাবিবা ইয়াসমিন, বন্যা ও হাবিবার সাত মাসের শিশুসন্তান।
স্থানীয়দের বর্ণনা অনুযায়ী, ছুরিকাহত অবস্থায় বন্যা চিৎকার করতে করতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা দৌড়ে এসে দেখতে পান বারান্দায় বেসিনের কাছে হাবিবার নিথর দেহ পড়ে আছে। তার গলা কাটা, সেখান থেকে রক্ত বেরিয়ে মেঝে ভিজে গেছে। ঘরের ভেতরে ছিল লাইলীর গলাকাটা অচেতন দেহ। আর হাবিবার সাত মাস বয়সী শিশুসন্তানটি রক্তের মধ্যে গড়াগড়ি খাচ্ছিল। প্রতিবেশীরা দ্রুত তাদের হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে লাইলী ও হাবিবার আগেই মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন চিকিৎসক এবং আহত বন্যাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
বগুড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সুফিয়ান জানিয়েছেন, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য ইতোমধ্যে অভিযান শুরু হয়েছে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :