বছরের ভরা পর্যটন মৌসুমেও কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশ’ পর্যটন এলাকা দারুণ দর্শনার্থী সংকটে!


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪, ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ /
বছরের ভরা পর্যটন মৌসুমেও কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশ’ পর্যটন এলাকা দারুণ দর্শনার্থী সংকটে!

বছরের ভরা পর্যটন মৌসুমেও কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশ’ খ্যাত পর্যটন এলাকাগুলো ব্যাপক দর্শনার্থী সংকটে ভুগছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেখানকার পর্যটন ব্যবসায় প্রাণ ফিরে পাবারও কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। রোববার (২৯ ডিসেম্বর) টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দুদেশের মধ্যে চলমান অস্থিরতায় বাংলাদেশি পর্যটকরা ভারত ভ্রমণ বয়কট করে চলেছেন। ফলে কলকাতার আবাসিক হোটেলগুলো প্রায়ই খালি পড়ে থাকছে। সাথে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন খাবার হোটেলগুলোও।

কলকাতার ব্যস্ততম মারকুইস স্ট্রিট, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট, কিড স্ট্রিট এবং সাডার স্ট্রিটে এখন যেন শুনশান নিরবতা। পর্যটক শূন্যতায় ভুগছে আশেপাশের অঞ্চলগুলিও। ফলে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা এখন বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করছেন।

হোটেল মালিক এবং খুচরা বিক্রেতাদের মতে, ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি হচ্ছে পর্যটনের ভরা মৌসুম। এসময় দর্শনার্থীদের পদচারনায় কলকাতায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। বাংলাদেশে বছরের শেষের ছুটির কারণে প্রচুর সংখ্যক পর্যটক ঘুরতে আসেন।

ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী খান বলেন, পিক সিজনে হোটেলগুলি সাধারণত পূর্ণ থাকে এবং খাবারের দোকানগুলিতেও জায়গা পাওয়া কঠিন। এখানকার আবহাওয়া এবং উৎসব আমেজের কারণে বাংলাদেশি পর্যটকরা তাদের বছরের শেষের ছুটি কলকাতায় কাটাতে পছন্দ করেন। কিন্তু এই বছর অস্থিরতার কারণে ব্যবসা বাজেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এখন এমনই অবস্থা যে, মধ্য কলকাতা এলাকার অনেক হোটেল রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কমাতে পুরো ফ্লোর বন্ধ করে দিয়েছে। যে কক্ষগুলি শেষের দিকে পুরো সপ্তাহের জন্য বুক করা হত সেগুলি এখন স্বাভাবিকের অর্ধেক টাকায় পাওয়া যায়৷

“অন্যান্য বছর এই সময়ের মধ্যে রুমের ভাড়া ২০ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু এখন সেগুলির ভাড়া ব্যাপকভাবে কমে গেছে,” কথাগুলি বলছিলেন সবুজ তালুকদার নামে একজন হোটেল রিসেপশনিস্ট।

টাঙ্গাইলের একজন দর্শনার্থী আবু হামিস বলেন, এই সময়ে রুম সত্যিই অনেক কম পাওয়া যায়। মির্জা গালিব স্ট্রিটে যে ঘরটি আমি গত বছর প্রতিদিন ২ হাজার রুপিতে ভাড়া নিয়েছিলাম এখন তার ভাড়া ৮০০ টাকা।

বাংলাদেশি পর্যটকদের অনুপস্থিতি স্থানীয় খুচরা এবং খাদ্য শিল্পের উপরও প্রভাব ফেলেছে। ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন পাঁচ শতাধিক হোটেল মালিক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করে। সংগঠনটির যুগ্ম সম্পাদক মোঃ সাইফ শামীম বলেন, ভারতীয় এবং ইউরোপীয় পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে আমরা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছি। কারণ বাংলাদেশ থেকে পর্যটক আগমনের হার খুবই কম।

একজন ট্রাভেল এজেন্ট অনিল দাস জানান, গত বছর তারা ডিসেম্বর এবং জানুয়ারিতে ঘুমানোর সময় পাননি। মানি এক্সচেঞ্জগুলো প্রায়শই গভীর রাত পর্যন্ত ভ্রমণকারীদের সেবা দিত।তাদের সেই ব্যবসায় এখন পতন দেখা যাচ্ছে।

মানি এক্সচেঞ্জার মনোরঞ্জন রায় বলেন, “ঢাকার একটি পরিবার গত বছর রুম খুঁজে না পাওয়ায় আমার দোকানে রাত কাটিয়েছিল।”