দেহব্যবসা করাতে বাংলাদেশি ২৩ তরুণীকে নেওয়া হয়েছে ভারতে। দেশ থেকে তাদের নেওয়া হয় চাকরির কথা বলে। মাসে ৬০ হাজার রুপি বেতন দেওয়া হবে, এমন প্রলোভনে ভারতে নেওয়া হয় ওই তরুণীদের। কিন্তু সেখানে নিয়ে আটকে রাখা হয় তাদের। পরানো হয় যৌন আবেদনময়ী সব পোশাক। এরপর ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপে তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় খদ্দেরের কাছে।
হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো ছবি থেকে পছন্দের তরুণীকে বাছাই করেন খদ্দেররা। এরপর কথামতো বাংলাদেশি ওই তরুণীদের পাঠানো হয় আবাসিক কোনো হোটেল বা রিসোর্টে, বাধ্য করা হয় পতিতাবৃত্তিতে।
দিনের পর দিন এভাবেই জোর করে বাংলাদেশি ২৩ তরুণীকে দিয়ে দেহব্যবসা করিয়ে আসছে একটি চক্র। সম্প্রতি ভারতের ওড়িশার রাজ্যের রাজধানী ভুবনেশ্বরে চক্রটির সন্ধান পেয়েছে সেদেশের পুলিশ।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ওড়িশা টিভি রোববার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে- এই তরুণীরা বড় ধরনের মানবপাচারের শিকার। তাদের দৈনিক ২ হাজার রুপি বেতনের কাজের লোভ দেখিয়ে ভুবনেশ্বরে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাদের দিয়ে যৌন ব্যবসা করানো হচ্ছে।
এই যৌন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকা দালালরা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে খদ্দেরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যখন কোনো খদ্দের আগ্রহ প্রকাশ করেন তখন তাদের বাংলাদেশি তরুণীদের ছবি পাঠানো হয়। সেখান থেকে যে কোনো একজনকে বেছে নেয় তারা। এরপর আগেই অর্থ পরিশোধ করতে হয়। সর্বশেষে ওই খদ্দেরকে হোটেলের ঠিকানা দেওয়া হয় যেখানে নির্দিষ্ট তরুণী অপেক্ষা করেন।
ওড়িশাটিভি জানিয়েছে, কোটাক থেকে এক অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীকে উদ্ধারের পর পুরো বিষয়টি সামনে আসে। ওই কিশোরীকে লিংক রোডের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর তদন্ত শুরু হয়—কীভাবে বাংলাদেশি তরুণীদের ওড়িশায় নিয়ে আসা হচ্ছে।
পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া এক যৌনকর্মী জানান, নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তিনি এই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। তিনি এখানে আটকা পড়ে গেছেন। উদ্ধারকৃত ওই যৌনকর্মী জানান, পুরো বিষয়টি পরিচালনা করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
প্রতারণার শিকার এই তরুণীদের কয়েক বছর ধরে আটকে রেখেছে চক্রটি। যারা এরসঙ্গে জড়িত তাদের ধরে বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা চলছে। স্থানীয় যেসব দালাল এই যৌনব্যবসায় জড়িত, তাদের খুঁজে বের করতে অভিযান শুরু করেছে স্থানীয় পুলিশ।
ভুবনেশ্বরের উপপুলিশ কমিশনার পিনাক মিশ্রা ওড়িশাটিভিকে বলেন, এ ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ডের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। এসব বিষয়ে পর্যাপ্ত গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, যারা এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রমে জড়িত, শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।