বাগেরহাটের কচুয়ায় বিএনপির সম্মেলন ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত বিএনপি নেতা শওকত হোসেন (৫০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। ১১ ফেব্রুয়ারি উপজেলার ধোপাখালী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে দেপাড়া বাজার এলাকায় নিজ দলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনি গুরুতর আহত হন।
নিহত শওকত হোসেন কচুয়া উপজেলার ছিটাবাড়ি গ্রামের ইমান উদ্দিন শেখের ছেলে। তিনি কচুয়া উপজেলার ধোপাখালী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
ধোপাখালী ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনে শওকত হোসেনের ভাই মো. লিয়াকত হোসেন সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। ওই সংঘর্ষে শওকত, লিয়াকত হোসেনসহ অন্তত ১৫ জন গুরুতর আহত হন। শওকতকে প্রথমে বাগেরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় লিয়াকত হোসেন বাদী হয়ে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সভাপতি প্রার্থী আফজাল হাওলাদারসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ এবং ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। তবে এখন পর্যন্ত এ মামলায় কাউকে আটক করেনি পুলিশ।
এদিকে শওকত হোসেনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দেপাড়া বাজার এলাকায় তাঁর স্বজন ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বিক্ষুব্ধ জনতা প্রতিপক্ষ আফজালের অনুসারী হায়দার আলীর বাড়ি ঘেরাও করেন। তখন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত সেখানে পৌঁছে হায়দারকে আটক করেন। এরপর সন্ধ্যায় দেপাড়া বাজার থেকে সদর থানা-পুলিশ বিএনপির আরও দুজনকে আটক করেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের নাম ও পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।
দেপাড়া বাজারে বিএনপির নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। আতঙ্কে বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন ওই এলাকার ব্যবসায়ীরা।
নিহত বিএনপি নেতা শওকত হোসেনের ভাই বিএনপি নেতা লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আফজাল হাওলাদারের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আমাদের ওপর হামলা চালায়। দীর্ঘ ৯ দিন চিকিৎসার পর আমার ভাই মারা গেল। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে আছি। কচুয়া, বাগেরহাট সদর থানা-পুলিশ ও সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে আছেন। পরিস্থিতি এখনো পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আফজাল গ্রুপের সদস্য হায়দার আলীকে তাঁর বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। বাগেরহাট সদর থানা-পুলিশ আরও দুজনকে আটক করেছে। এ ব্যাপারে পরে বিস্তারিত জানাব।’
আপনার মতামত লিখুন :