বাঘারপাড়ায় কৃষক দলের সমাবেশে কেন্দ্রীয় সভাপতি, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বিজ্ঞান ভিত্তিক আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে


Al Amin প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ৭, ২০২৫, ১২:০৩ অপরাহ্ণ /
বাঘারপাড়ায় কৃষক দলের সমাবেশে কেন্দ্রীয় সভাপতি, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বিজ্ঞান ভিত্তিক আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের বাঘারপাড়ায় কৃষক সমাবেশে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন বলেছেন, জনগণের সমর্থনে বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে কৃষিখাতে এমন নীতি নেওয়া হবে যাতে সারা বছর কৃষকের মুখে হাসি থাকে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরিকল্পনায় জাতীয় বাজেটের ৮ শতাংশ কৃষি খাতে বরাদ্দ দেয়া হবে। দুর্বিপাক থেকে চাষিকে বাঁচাতে শস্য বীমা চালু করা হবে। ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র খোলা হবে। শহীদ জিয়ার খাল খনন কর্মসূচি আবার শুরু করে কৃষিকে আধুনিক ব্যবস্থাপনার মধ্যে নিয়ে যাওয়া হবে।

(০৬ জানুয়ারি) সোমবার বাঘারপাড়া উপজেলার সাইটখালি গ্রামেে মাঠে জামদিয়া ইউনিয়ন কৃষক দল আয়োজিত ঐতিহাসিক কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। সমাবেশে হাজার হাজার কিষাণ-কিষাণী যোগ দেন। কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন বলেন, সমবায় ভিত্তিক কৃষি ও কৃষি ভিত্তিক শিল্প স্থাপনে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোগী না হলে দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি কৃষি বাঁচবেনা। বিএনপিকে জনগণ ক্ষমতায় আনলে বিনা বা স্বল্পসুদে কৃষিঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। গ্রামাঞ্চলে গড়ে তোলা হবে বীজ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থা। খাস জমি ভূমিহীন কৃষকের জন্য দেওয়া হবে। স্থাপন করা হবে বীজ ব্যাংক। বিজ্ঞান ভিত্তিক আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা গড়তে তোলা হবে। সেই ব্যবস্থায় যুক্তকরা হবে নারীদেরও। সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তৃতায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, কৃষকের সন্তানেরা মেধা ও যোগ্য থাকার সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের রাজনীতি না করার কারণে বিগত ১৬ বছর কোন সরকারি চাকরি পায়নি। আপনাদের (কৃষক) সন্তানদের মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচাতে ঈদের আগের দিনও হালের গরু পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। আপনারা বছরের পর বছর পুলিশ ফাঁড়ির দারোগাকে মাসোয়ারা দিয়ে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আগামীতে বিএনপি জনগণের ভোটে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে অস্বচ্ছল পরিবারের জন্য পারিবারিক কার্ড প্রদান করা হবে। এটি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষণা। সেই কার্ডের বিনিময় প্রতি পরিবারকে আর্থিক অবস্থান অনুযায়ী দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা প্রদান করা হবে। এই পারিবারিক কোন পুরুষের নামে হবে না এটি হবে মহিলাদের নামে। যাতে করে সেই টাকা দিয়ে ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ এবং বৃদ্ধ পিতা মাতার ওষুধপত্র কেনার খরচ যোগান দিতে পারেন।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, নির্বাচন হলে জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতা যাবে। এজন্য একটি গোষ্ঠীর ঘুম হারাম হয়ে গেছে। বিএনপিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। নির্বাচনকে প্রলম্বিত করছে।

সমাবেশে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-সম্পাদক প্রকৌশলী টি এস আইয়ূব বলেন, বিএনপি যখনই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেছে তখনই কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করেছে। আগামীতে বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গেলেও কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের প্রয়োজনীয় সবকিছু করবে।

জামদিয়া ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি শামসুর রহমানের সভাপতিত্বে এই সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ওসমান আলী, দপ্তর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মমিনুল ইসলাম, যশোর জেলা সভাপতি উপাধ্যক্ষ মকবুল হোসেন, বাঘারপাড়া উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি মশিউল আজম প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাঘারপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি তানিয়া রহমান, সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান।

আরও উপস্থিত ছিলেন, যশোর জেলা কৃষক দলের সদস্য-সচিব শিকদার সালাহউদ্দিন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-আহবায়ক হাবিবুল ইসলাম কচি, যুগ্ম আহবায়ক মোঃ আমিরুল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, যুগ্ম- আহবায়ক শেখ জাকির হোসেন, যুগ্ম-আহবায়ক মোঃ আলমগীর হোসেন, শার্শা উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান, বেনাপোল পৌর কৃষক দলের সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ জামাল উদ্দিন, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মোঃ হাসান ইমাম, সহ-সভাপতি মফিজুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাহেদ আলী সবুজ, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজিজুর রহমান সহ যশোর জেলার সকল উপজেলা ও পৌর কৃষক দলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কৃষক সমাবেশকে কেন্দ্র করে সাইটখালি গ্রামে রীতিমতো মেলা বসে। রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ছাড়াও আশেপাশের গ্রামের বহু মানুষ এতে যোগ দেন।