বালাগাল উলা বিকামালিহি কাসাফাদ্দোজা বিজামালিহি, হাসানাত জামিউ খেসালিহি সাল্লু আলাইহে ওয়ালিহি’


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : আগস্ট ২৮, ২০২৫, ৮:১৬ পূর্বাহ্ণ /
বালাগাল উলা বিকামালিহি কাসাফাদ্দোজা বিজামালিহি, হাসানাত জামিউ খেসালিহি সাল্লু আলাইহে ওয়ালিহি’

নূরনবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.) কৈশোরকাল অতিক্রম করে ধীরে ধীরে যৌবনকালে উপনীত হয়েছেন। গোটা হিজাজ এমনকি বহির্বিশ্বেও তাঁর চারিত্র্যিক সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁর নৈতিক ও ব্যবহারিক জীবনের সুখ্যাতিতে আকর্ষিত হয়ে মক্কার কুলীন, সম্ভ্রান্ত ও ধনী মহিলা খাদিজা বিনতে খুয়াইলিদ স্বীয় বাণিজ্য প্রতিনিধিরূপে সিরিয়া, ইয়ামেন ইত্যাদি স্থানে প্রেরণ করেন। খাদিজার এক ভৃত্য মাইসারা দু’বার সিরিয়া সফরে হযরত মোহাম্মাদ (সা.)-এর অনুগামী হয়েছিলেন।

মাইসারার মুখে বাণিজ্য প্রতিনিধির গুণপনা, সততা, নিষ্ঠা ও সদাচারের বিবরণ শ্রবণ করে তাঁর বাণিজ্য কুশলতা ও সত্যবাদিতার পরিচয় লাভ করে খাদিজা (রা.) যুবক মুহাম্মাদ (সা.)-এর প্রতি একান্তভাবে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। ইতিপূর্বে পরপর তাঁর দু’জন স্বামী মৃত্যুমুখে পতিত হন এবং তখন তাঁর বয়স হয়েছিল চল্লিশ বছর। আর হযরত মোহাম্মাদ (সা.)-এর বয়স হয়েছিল মাত্র পঁচিশ বছর। খাদিজা (রা.)-এর প্রস্তাব এবং আবু তালিবের সম্মতিক্রমে তাঁরা উভয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

আবু তালিব বিবাহের ইজাব অর্থাৎ প্রস্তাব স্বরূপ বিবাহ মজলিসে প্রদত্ত ভাষণে বলেছিলেন : সে মহান আল্লাহকে অসংখ্য ধন্যবাদ যিনি হযরত ইব্রাহীম (আ.)-এর বংশে হযরত ইসমাঈল (আ.)-এর শাখায় আমাদেরকে আবির্ভূত করেছেন। যিনি আমাদেরকে জনগণের নেতা ও সেবকরূপে নির্বাচিত করেছেন। আমার ভ্রাতুষ্পুত্র হযরত মোহাম্মাদ (সা.)-কে আপনারা ভালো করেই চিনেন এবং জানেন। জ্ঞান-গরিমা ও চরিত্র মাহাত্ম্যে অন্য কেউই তাঁর তুল্য হতে পারে না, যদিও তাঁর সম্পদ নগণ্য। দ্বাদশ উকিয়া মাহর দানে সম্মত হয়ে হযরত মোহাম্মাদ (সা.) আপনাদের বিদূষী কন্যা খাদিজা (রা.)-এর সাথে বিবাহপ্রার্থী।

এরপর ওয়ারাকা ইবনে নাওফেল অনুরূপভাবে আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা বর্ণনা করলেন এবং কুরায়েশ বংশের মর্যাদার উল্লেখ করে আবু তালিবের প্রস্তাব সমর্থন করলেন। খাদিজার পিতা খুওয়ালিদের মৃত্যু বহু পূর্বেই হয়েছিল। চাচা আমর ইবনে আসাদ ওয়ালীও অভিভাবকরূপে কনে সম্প্রদান করলেন। নিষ্কলঙ্ক ও নির্মল চরিত্রের জন্য খাদিজা (রা.) গোটা আরবে ‘তাহিরা’ নামে বিখ্যাত ছিলেন। এখন তিনি আস-সাদিক, আল আমীন রূপে খ্যাত হযরত মোহাম্মাদ (সা.)-এর সহিত পরিণীতা হলেন।

হযরত মোহাম্মাদ (সা.)-এর পুত্র ও কন্যা সকলেই হযরত খাদিজা (রা.)-এর গর্ভজাত সন্তান। কেবলমাত্র ‘ইব্রাহীম’ মারিয়ায়ে কিবতিয়ার গর্ভে জন্মলাভ করেছিলেন। জীবন ও যৌবনের স্বাভাবিক উদ্দামতা এবং তৎকালীন আরবে বহুবিবাহ প্রথার ব্যাপক প্রচলন সত্ত্বেও ৬৫ বছর বয়সে হযরত খাদিজা (রা.)-এর মৃত্যু পর্যন্ত হযরত মোহাম্মাদ (সা.) অন্য বিবাহ করেননি। তাঁদের দাম্পত্য জীবনের স্থায়িত্বকাল ছিল দীর্ঘ ২৫ বছর। এই ২৫টি বছরকে আমরা হযরত মোহাম্মাদ (সা.)-এর জীবনের স্বর্ণ যুগ হিসেবে স্মরণ করে তাঁর প্রতি এই প্রশান্তি নিবেদন করতে পারিÑ “বালাগাল উলা বিকামালিহি, কাশাফাদ্্ দুজা বিজামালিহি, হাসুনাত জামিউ খিসালিহি, সাল্লু আলাইহি ওয়া আলিহি।”