পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে ট্রেন হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনী ১৯০ জন যাত্রীকে সফলভাবে উদ্ধার করেছে। এই অভিযানে ৩০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে এবং অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ৩৭ জনকে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, তারা পুরো এলাকায় অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে যতক্ষণ না সব সন্ত্রাসী নির্মূল করা হয়। এই ঘটনার মাধ্যমে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর সক্ষমতা এবং দৃঢ়তার পরিচয় মিলেছে।
গত মঙ্গলবার বেলুচিস্তানের বোলান জেলার মুশকাফ এলাকায় এই হামলা ঘটে। সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানের জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা চালিয়ে ৪০০ জনেরও বেশি যাত্রীকে জিম্মি করে ফেলে। হামলার পর নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয় এবং ২৭ জন সন্ত্রাসীকে গুলি করে হত্যা করে। নিরাপত্তা বাহিনী তাদের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে যতক্ষণ না সব জঙ্গি শেষ হয়ে যায়।
নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, ট্রেনে হামলার পর সন্ত্রাসীরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে যায় এবং পালানোর চেষ্টা করে। উদ্ধার হওয়া ১৭ জন যাত্রীকে কোয়েটায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। এছাড়া, ২৩ জন যাত্রী মাচেতে অবস্থান করছেন এবং তাদের উদ্ধার করতে নিরাপত্তা বাহিনী কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পুরো এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে এবং অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীরা নারী ও শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীরা তিনটি ভিন্ন স্থানে নারী ও শিশুদের জিম্মি করেছে। আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীদের সাথে নারী ও শিশুদের উপস্থিতির কারণে অভিযানে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
বাহিনীর অভিযানে মুক্তি পাওয়া এক যাত্রী বলেন, গুলি চলছে, কিন্তু আল্লাহর শুকরিয়া যে, সেনাবাহিনী এবং এফসি সদস্যরা আমাদের নিরাপদে এখানে এনেছে।
হামলাকারীরা আফগানিস্তান থেকে পরিচালিত হয়ে স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক হ্যান্ডলারদের সাথে যোগাযোগ করছিল এবং নারী ও শিশুদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছিল। এতে নিরাপত্তা বাহিনীকে চরম সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়েছে। সন্ত্রাসীরা ট্রেনে হামলা চালানোর আগে রেললাইনে বোমা হামলা ও চালকের ওপর গুলিবর্ষণ করে, যার ফলে ট্রেনের চালক আহত হন।
নিরাপত্তা বাহিনী জানায়, হামলার ঘটনার পর তারা দ্রুত বেলুচিস্তান প্রদেশের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে অভিযান শুরু করে এবং সেখানে ট্রেনটি আটকে যায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ নেয়। তারা জানিয়েছে, সন্ত্রাসীরা পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং ইরান সীমান্তে অবস্থানরত কয়েকটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দ্বারা পরিচালিত হচ্ছিল।
এই ঘটনায় পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের দৃঢ়তা এবং দক্ষতা প্রদর্শন করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে তারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও পদক্ষেপ নেবে এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে রাখবে। পাকিস্তানের এই হামলা প্রমাণ করে যে সন্ত্রাসবাদকে মোকাবেলা করতে নিরাপত্তা বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নিতে সক্ষম। এই ধরনের হামলা দেশের নিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তবে পাকিস্তান আশা করে যে তারা খুব দ্রুত পরিস্থিতি শান্ত করতে পারবে। সূত্র : ডন।
আপনার মতামত লিখুন :