পাক সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানী খার।
পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরের কয়েকটি স্থানে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে দিয়েছে ভারত। গভীর রাতে আকস্মিক এ হামলায় ভারতের উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানী খার।
পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরের কয়েকটি স্থানে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে দিয়েছে ভারত। গভীর রাতে আকস্মিক এ হামলায় দেশের হয়ে ভারতের উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানী খার। পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোকে ‘আগুন নিয়ে খেলা’র সঙ্গে তুলনা করেছেন তিনি।
বুধবার (৭ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হিনা রব্বানী বলেছেন, আগুন নিয়ে খেলা করছে ভারত। পাকিস্তানে তাদের এই হামলা অযৌক্তিক, ভিত্তিহীন এবং আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, ভারতের এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে যে, তারা নিজেদের বিচারক, জুরি ও শাস্তিদাতা হিসেবে ভাবছে। পারমাণবিক শক্তিধর আরেকটি রাষ্ট্রের ভেতরে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়তে দ্বিধা করছে না তারা। কারণ, ভারত মনে করছে যে কোনও ফল ভোগ না করেই পার পেয়ে যাবে তারা।
পাকিস্তানের সাবেক এ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, পাকিস্তান বহুবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে ভারতের আগ্রাসন নিয়ে সতর্ক করেছিল। সতর্কতার সব লক্ষণই স্পষ্ট ছিল, আর এখন ভারত সেটিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত, এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় দেশটি। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। স্থগিত করে দেওয়া হয় ভারতের সঙ্গে সবরকম বাণিজ্যও।
এরপর থেকে দুদেশের পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করে পরিস্থিতি, রীতিমতো যুদ্ধের রূপ ধারণ করেছে যা এখন। বুধবার (৭ মে) সকালে এক ব্রিফিংয়ে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর কোটলি, ভাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাগ ও মুজাফফরাবাদে ‘কাপুরুষোচিত’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। ইতোমধ্যে এর বদলা নিতে শুরু করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
সবশেষ প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পাকিস্তানি সেনাদের গোলাবর্ষণে অন্তত ১০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন; সেইসঙ্গে আহত হয়েছেন অন্তত ৩২ জন।
এর আগে, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে হামলার পর ভারত সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, ভারতের সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’ শুরু করেছে। এর আওতায় পাকিস্তান ও পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরের ৯টি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে।
তবে, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কোনো স্থাপনাকে এ অভিযানে নিশানা বানানো হয়নি উল্লেখ করে ভারত দাবি করছে, মূলত পাকিস্তানের অভ্যন্তরে লস্কর-ই-তৈয়বা, জইশ-ই-মোহাম্মদ এবং হিজবুল্লাহ মুজাহিদীন গোষ্ঠীর অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে তারা, যেখানে অন্তত ৭০ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :