ভেঙে গেছে সেতুর ২টি পিলার, তার ওপর দিয়েই যানবাহন চলছে !


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জুন ৩০, ২০২২, ৮:৩২ অপরাহ্ণ /
ভেঙে গেছে সেতুর ২টি পিলার, তার ওপর দিয়েই যানবাহন চলছে !

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গলিয়ারচর ও ছান্দ্রা গ্রামের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে কালাডুমুর নদী। এই দুই গ্রামকে এক করতে প্রায় ২০ বছর আগে ওই নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন কয়েকটি গ্রামের শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ চলাচল করে। সম্প্রতি সেতুটির দুই পাশের দুইটি পিলার ভেঙে যায়। বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতুটির ওপর দিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয় বসিন্দারা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার জিংলাতলী ইউনিয়নে কালাডুমুর নদীর ওপর নির্মিত সেতুর মাঝখানে চারটি পিলারের মধ্যে দুইটি পিলার ভেঙে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি মাঝের অংশে একটি করে দুইটি পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে আছে।

আরও কয়েকটি পিলারের সিমেন্টের ঢালাই খসে পড়ে রড বেরিয়ে গেছে। মরণফাঁদে পরিণত হওয়া সেতুটির ওপর দিয়েই ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল করে ৪-৫টি গ্রামের শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ।

এই নদীপথ দিয়ে ইট ও বালুবাহী ছোট-বড় বাল্কহেড এবং মালামাল বহনকারী ট্রলার সেতুর নিচ দিয়ে চলাচল করার কারণে বাল্কহেড ও ট্রলারের ধাক্কায় সেতুর পিলারগুলো ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।

সেতুর একপাশে দুইটি পিলারের কোনো অস্তিত্ব নেই। তাই যেকোনো সময় সেতুটি ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সেতুর নিচ দিয়ে বাল্কহেড, ট্রলার ও নৌ চলাচল যেন না করে এবং সেতুর ওপর দিয়ে মানুষের চলাচল বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয়রা।

জানা যায়, উপজেলার জিংলাতলী ইউনিয়নের মানুষের অল্প সময়ের মধ্যে দ্রুত চলাচলের জন্য গলিয়ারচর ও ছান্দ্রা রাস্তাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ইউনিয়নের আওতাভুক্ত গ্রাম চান্দেরচর, গলিয়ারচর চর চারিপাড়াসহ আরো কয়েকটি গ্রামের জনসধারণ কালাডুমুর নদীর ওপর নির্মিত সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করে গৌরীপুর বাজার এবং রায়পুর হয়ে অনেক পথ পাড়ি দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে হয়।

মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে জরাজীর্ণ সেতুটি ভেঙে নতুন করে সেতু পুননির্মাণের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া ও উপজেলা চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

জাতীয় পরিবেশ পদকপ্রাপ্ত উপজেলার আদমপুর গ্রামের মতিন সৈকত বলেন, সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সেতুর ওপর দিয়ে হাজারো মানুষ উপজেলার বড় বাজার গৌরীপুরে যাতায়াত করে। কিন্তু ওই সেতু বর্তমানে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সেতুটি যথাসম্ভব পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন সেতু নির্মাণ করা দরকার।

জিংলাতলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন মোল্লা বলেন, কালাডুমুর নদীর ওপর নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন সেতু নির্মাণের জন্য উপজেলা সমন্বয় সভায় উত্থাপন করা হবে এবং এলজিইডি’র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হবে।

দাউদকান্দি উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. আফসার হোসেন খন্দকার আমাদের সময়কে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ওই সেতুটি দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।