বাংলাদেশ রেলওয়ের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে টানা ১৬ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে কথা বলেন তিনি।
এর আগে গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় রাজধানীর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রনির অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে সহজ ডটকমকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করে। জরিমানার পুরো অর্থের ২৫ শতাংশ (৫০ হাজার টাকা) মহিউদ্দিন রনি পাবেন বলেও জানান ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা। রনি রেলওয়ের অনিয়ম নিয়ে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। তিনি জানান, তার একটি দাবি পূরণ হলেও বাকি পাঁচটি দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
তারই ধারাবাহিকতায় আজ বৃহস্পতিবার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অবস্থান নিয়ে মহিউদ্দিন রনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আসবে যখন আমাকে তারা মারবে, আমি মার খাবো তখন বাংলাদেশের মানুষ আসবে। যখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ঘোষণা দিয়েছিল তখন সবাই আসছে, দেশ স্বাধীন করেছে। আজকে বাংলাদেশ স্বাধীন।’
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা চলে গেছে কিন্তু তাদের প্যাটার্ন, তাদের যে রক্তবীজ, তাদের ভ্রূণ বাংলার মাটিতে সর্ষে খেতে সর্ষের মধ্যে পুতে রেখে গেছে যার ফলে বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী চালাচ্ছে এই দুর্নীতিবাজরা। দেখেন রেলওয়ে পুলিশ সদস্যরা আজকে হেলমেটে পড়ে আসছে।’
মহিউদ্দিন রনি বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আসছি। এখানে হেলমেট বাহিনী পাঠানো হয়েছে কেন? এতদিন তো হেলমেট বাহিনী ছিল না। আপনারা বলতে পারেন আমি বিক্ষুব্ধ হচ্ছি কেন? কিন্তু ধৈর্য্যের একটা সীমা আছে। আর কতক্ষণ সহ্য করবো? আজকে ১৬ দিন হচ্ছে আমি এখানে অপেক্ষা করছি। উনারা আমাকে ঢুকতে দিচ্ছে না। আমার স্বাধীনতা খর্ব করেছে, বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা খর্ব করেছে। উনারা এই জায়গাটাকে জিম্মি করে রেখেছে।’
তিনি বলেন, ‘এতদিন আমি একা ছিলাম। আজকে থেকে সদলবলে যে যেখানে যে অবস্থায় আছেন ভুক্তভোগী, আপনারা সবাই সব স্টেশনগুলোতে দুর্বার, অপ্রতিরোধ্য দুর্গ গড়ে তোলেন। সবাই একটা একটা করে অভিযোগপত্র দেন। প্রত্যেক রেলওয়ে স্টেশনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, কলেজ শিক্ষার্থী, স্কুলশিক্ষার্থী সবাই দাঁড়িয়ে যান। সবাই দাঁড়িয়ে ওখানে একটা অভিযোগ বক্স করেন। সেখানে যাত্রী সাধারণ যারা আছে তারা যে ভোগান্তির শিকার হয়েছে তাদের স্বীকারোক্তি, তাদের লেখা, তাদের অভিযোগপত্র জমা করেন।’
রনি কষ্ট নিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আসবে কিন্তু কখন আসবে জানেন? যখন আমি মার খাবো। উনারা আমাকে মারবে তখন তারা তামাশা দেখতে আসবে। আমি মার খাওয়ার আগে আপনারা সবাই চলে আসেন এই আহ্বান জানাব। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’