সাজ্জাদ ও তার তিন বোন
গোপালগঞ্জঃ সপ্তাহ তিনেক আগে মারা যান শিশু সাজ্জাদ মোল্লার (১৩) মা সাথী বেগম। তার সপ্তাহখানেক আগে তিনি যমজ কন্যা শিশু প্রসব করেছিলেন। আর সম্প্রতি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন সাজ্জাদের বাবা, দিনমজুর জামাল মিয়া। এমন অবস্থায় সদ্যোজাত দুই বোনসহ তিন বোনকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে সাজ্জাদ। বোনদের মুখে দিতে পারছে না খাবার।- পত্রিকায় প্রকাশিত এই ঘটনা নজরে নিয়ে শিশুদের দেখভাল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। এতে স্থানীয় সমাজসেবা অধিদপ্তর ও গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসককে (ডিসি) এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়কে আদালতে আদেশের কথা সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে সাজ্জাদের বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনেন আইনজীবী ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ, ব্যারিস্টার নাজিয়া কবির ও ব্যারিস্টার সিফাত মাহমুদ শুভ। আর শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান, সাজিয়া আফরিন, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সাজ্জাদ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার চিত্রাপাড়া গ্রামের জামাল মিয়ার বড় সন্তান। সে স্থানীয় এম এম খান উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
জানা গেছে, দিনমজুর জামাল মিয়ার স্ত্রী সাথী বেগম একমাস আগে যমজ কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। এর ছয়দিন পর তিনি মারা যান। স্ত্রীর মৃত্যুর পর সদ্য জন্ম নেওয়া দুগ্ধপোষ্য দুই কন্যাসহ চার ছেলেমেয়ে ও অসুস্থ মাকে দিন কাটছিল জামালের। এমন অবস্থায় গত শুক্রবার দিবাগত রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থানা পুলিশ। পরে তাকে গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
পরের দিন শনিবার গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ জামালকে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার দেখায়। এরপর তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
জামাল মিয়ার ভাই মনির মিয়া বলেন, ‘আমার ভাই কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নেই। একসময় তিনি আমতলী ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পুলিশ কী কারণে আমার ভাইকে ধরে নিয়ে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছে, তা আমাদের জানা নেই। তার সন্তানদের ঘরে খাবার নেই। কষ্টে দিন পার করছে তারা। এর মধ্যে নবজাতক দুই শিশুর অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।’
আপনার মতামত লিখুন :