অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে চায়। তিনি দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে এই আদর্শকে পথপ্রদর্শক হিসেবে বিবেচনা করছেন।
২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে সোমবার (২৪ মার্চ) এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংস হত্যাযজ্ঞের কথা স্মরণ করে বলেন, সেই কালরাতে ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর চালানো বর্বরোচিত হামলা ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ গণহত্যা। তিনি বলেন, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুধু ১৯৭১ সালেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হয়েছে বারবার।
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, স্বাধীনতার পর স্বৈরশাসনের শিকার হয়েছিল বাংলাদেশ। মৌলিক মানবাধিকারের অভাব, গণতন্ত্রহীনতা ও নিপীড়নের শিকার হয় সাধারণ মানুষ। কিন্তু ছাত্র-জনতার বীরত্বে সংঘটিত জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতি স্বৈরশাসনের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে। এ চেতনাকে সামনে রেখে সরকার নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকাসহ সারা দেশে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। অপারেশন সার্চলাইটের নামে সেনাবাহিনী পিলখানা, রাজারবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে হাজারো নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। এই ভয়ংকর গণহত্যা শুধু বাংলাদেশ নয়, বরং বিশ্ব ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়।
ড. ইউনূস বলেন, এই আত্মত্যাগের পথ ধরেই ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। নতুন বাংলাদেশকে শক্তিশালী, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলাই সরকারের লক্ষ্য।
তিনি ২৫ মার্চের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তাদের আত্মত্যাগ জাতির চেতনায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি সব শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং দেশবাসীকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের চেতনাকে ধরে রাখার আহ্বান জানান।
আপনার মতামত লিখুন :