মৌলভীবাজারে ফেসবুকে খলিফা হযরত উমর (রা.) এবং সাহাবি হযরত মুয়াবিয়া (রা.)সহ ইসলামের নানা অপব্যাখা দিয়ে নিজের মনগড়া বক্তব্য, কটূক্তি ও কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস দেন উমায়রা ইসলাম নামের এক আইনজীবী। এর জেরে গত শনিবার বিকাল থেকেই জেলার আলেম-ওলামা, ছাত্র-জনতাসহ সর্বস্তরের মুসলিম ধর্মপ্রাণ জনতার মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আইনজীবীকে বাসা থেকে আটক করে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ।

গত শনিবার রাত প্রায় ৮টার দিকে শহরের ক্লাব রোডের তার বাসা থেকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। জানা যায়, থানায় নিয়ে ওই আইনজীবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় বিপুলসংখ্যক বিক্ষুব্ধ মুসলিম ধর্মপ্রাণ জনতা থানার সামনে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে রাত প্রায় সাড়ে ১০টার দিকে কটূক্তিকারী ওই মহিলাকে জেলা পুলিশ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। উপস্থিত জনতাও জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ছুটেন। অনেকেই পুলিশ সুপার এম. কে. এইচ. জাহাঙ্গীর হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় তিনি তাদেরকে আইনি সহায়তা ও আশ্বস্ত করে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন।

রাতে সর্বদলীয় ইসলামী সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে পরবর্তী করণীয় কর্মসূচি নির্ধারণে বসেন। রাত প্রায় ১টা পর্যন্ত চলা বৈঠক শেষে সিদ্ধান্ত নেন সর্বোচ্চ শাস্তি ও ব্লাসফেমি আইন বাস্তবায়নের দাবিতে মৌলভীবাজার প্রেস ক্লাবের সামনে রোববার বিকালে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল হয়। রোববার বিকালে খণ্ড খণ্ড মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসতে থাকেন নানা শ্রেণি ও পেশার ধর্মপ্রাণ মুলমানরা। মিছিলে মিছিলে উত্তাল হয়ে ওঠে প্রেস ক্লাব মোড় ও আশপাশ এলাকা।

আরও জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে উমায়রা ইসলাম তার ফেসবুক আইডিতে ইসলাম এবং আলেম-ওলামা বিদ্বেষী বিভিন্ন লেখালেখি করে আসছেন। গত শনিবার খলিফাতুল মুসলিমীন হযরত উমর রা. ও সাহাবি আমিরে মুয়াবিয়া রা. নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ভাষার একটি পোস্ট তার নিজের ফেসবুক আইডিতে দিলে অনেক ধর্মপ্রাণ মানুষের দৃষ্টিগোচর হয়। বিষয়টি মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে। এরই প্রেক্ষিতে জোরালো দাবি ওঠে অভিযুক্ত নারীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির।

মৌলভীবাজার মুসলিম কমিউনিটি, জেলার আলেম-ওলামা, সর্বদলীয় ইসলামী সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দসহ ধর্মপ্রাণ ছাত্র-জনতা সোচ্চার হয়ে ওঠেন ওই আইনজীবীকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে। অবশেষে নবী-সাহাবি নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে উমায়রা ইসলামকে পুলিশ আটক করে মডেল থানা হেফাজতে নিয়ে আসে। এ বিষয়ে মডেল থানার ওসি গাজী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ফেসবুকে নবীর সাহাবিদের নিয়ে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে এক নারীকে আটক করে পুলিশি হেফাজতে আনা হয়েছে। এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।