আগামী ১০ জুলাই যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে ঈদুল আজহার নামাজ শুরু হবে সকাল সাড়ে সাতটায়। রোববার বিকেলে ঈদগাহ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে কালেক্টরেট সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া, মুসল্লিদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ।
গত ঈদুল ফিতরে নামাজের শেষদিকে হঠাৎ বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো মুসল্লি। মোনাজাত না করেই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছোটাছুটি করেন সবাই। ওইসময় পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকেই। সেই অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নেয় পৌর কর্তৃপক্ষ।
এ কারণে আসন্ন ঈদুল আজহায় এমন প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে না পৌরবাসী। ঈদের দিন বৃষ্টি হলেও নামাজ আদায়ে হবে না কোনো সমস্যা। পুরো ঈদগাহ ময়দান ঢেকে দেয়া হচ্ছে ত্রিপল ও সামিয়ানা দিয়ে। এক মাস আগে থেকেই ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। ১০ জুলাই সুসজ্জিত ঈদগাহ ময়দানে নামাজ আদায় করবেন ১০ হাজার মুসল্লি।
শনিবার ঈদগাহ ময়দানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চলছে বিরাট এক কর্মযজ্ঞ। নির্মাণ করা হচ্ছে বিশাল প্যান্ডেল। প্যান্ডেলের ভেতর আলোকসজ্জা না থাকলেও থাকছে বৈদ্যুতিক ফ্যানের ব্যবস্থা ও সাউন্ড সিস্টেম। ১৬-১৮ জন শ্রমিক খুঁটি বসানোর কাজ শেষ করে প্যান্ডেলে সামিয়ানা ঢাকতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
শ্রমিকরা জানান, প্যান্ডেল তৈরির জন্য গত ৮ জুন তারা বিপুল পরিমাণ বাঁশ এনে জড়ো করেছিলেন ঈদগাহ ময়দানে। গর্ত খোঁড়া ও খুঁটির বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। পুরো মাঠের মাঝখানে উঁচু বাঁশ দিয়ে সাতটি সারি করা হয়েছে। বাঁশের সাথে বাঁশ বেঁধে কাঠামো নির্মাণ শেষ করে এখন সামিয়ানা লাগানোর কাজ শেষের পথে। বাকি কাজ তিনদিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করেন শ্রমিকরা।
প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম শরীফ হাসান বলেন, গত ঈদুল ফিতরে পুরো ঈদগাহের দেয়ালে উন্নতমানের রং লাগানো হয়েছিল। এবার ঈদগাহের মাটি লেভেলিং ড্রেসিং করে তারপর প্যান্ডেলের কাজ করা হচ্ছে।
ফলে, কাজ শেষ করার আগে পানি হলেও নীচে পানি জমবে না। গরম নিবারণে ভেতরে থাকবে ফ্যান ও নিরাপত্তায় সিসি টিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা। ঈদগাহের পুরো জায়গায় বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষ করে ঈদগাহ মাঠ প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
পৌরসভার মেয়র হায়দার গণি খান পলাশ বলেন, মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্যে ২২ লাখ টাকা খরচ করে বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করছে পৌরসভা। প্রস্তুতি প্রায় শেষের পথে। ৮ জুলাইয়ের মধ্যে প্যান্ডেল, সিসি টিভি ক্যামেরা ও সামিয়ানা টাঙানো এবং বৈদ্যুতিক ফ্যান ও সাউন্ড সিস্টেমের কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
গত ঈদুল ফিতরে মোনাজাতের আগে বৃষ্টি হওয়ায় নানা সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ কারণে পৌরবাসীর কথা চিন্তা করে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলায় ঈদগাহে সবধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান মেয়র।