ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েলের হামলা থামছে না। সর্বশেষ হামলায় পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর থাকার পরও প্রতিদিনের হামলা গাজার সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলছে। ইতোমধ্যে প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় ৪৮,৪৬০-এ পৌঁছেছে, যা এই সংঘাতের ভয়াবহতা প্রকাশ করে।
রোববার (৯ মার্চ) ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বশেষ হামলায় পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হন এবং আহত হন আরও ৩৭ জন। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে মৃতের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সংঘাতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১১ হাজার ৮৯৭ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে বহু মানুষ আটকা থাকায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও ইসরায়েল নিয়মিত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এই চুক্তির মধ্যে বন্দি বিনিময়, স্থায়ী শান্তি, যুদ্ধের স্থায়ী অবসান এবং ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে যুদ্ধবিরতির শর্ত মানা হয়নি, বরং ইসরায়েলের হামলায় গাজার অবকাঠামো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের এই আগ্রাসনে গাজার ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং ভূখণ্ডটির ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।
গাজার মানবিক পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে। চিকিৎসাসেবা, খাদ্য, পানি এবং বিদ্যুতের সংকটে লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে রয়েছেন। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বারবার যুদ্ধবিরতি মেনে চলার আহ্বান জানালেও ইসরায়েল তা উপেক্ষা করছে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই সংকট কেবল ফিলিস্তিনের জনগণের নয়, বরং গোটা মানবতার জন্যই এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। অবিলম্বে শান্তি স্থাপন এবং যুদ্ধের স্থায়ী অবসান না হলে গাজার বিপর্যয় আরও তীব্র হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই মানবিক বিপর্যয় রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি
আপনার মতামত লিখুন :