নিজস্ব প্রতিবেদক: চৌগাছার শীর্ষ সন্ত্রাসী, একাধিক মামলার আসামি সেলিম রেজা (৩৮)কে অস্ত্র-গুলি ও ম্যাগজিনসহ বৃহস্পতিবার ভোরে গ্রেফতার করেছে যৌথবাহিনী। আটক সন্ত্রাসী সেলিম রেজা উপজেলার ধুলিয়ানী ইউনিয়নের ভাদড়া গ্রামের শামসুর রহমানের ছেলে।
চৌগাছা থানা সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যশোর পুলেরহাট সেনাক্যাম্পের মেজর সঞ্চয়নের নেতৃত্বে যৌথবাহিনীর সদস্যরা চৌগাছা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তারা উপজেলার ধুলিয়ানী ইউনিয়নের ভাদড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন পুকুরপাড় এলাকা থেকে সন্ত্রাসী সেলিম রেজাকে আটক করে। যৌথবাহিনীর সদস্যরা এ সময় তার কাছ থেকে একটি দেশি পিস্তল, ২ রাউন্ড তাজা বুলেট, একটি ম্যাগাজিন, ৬ টি দেশি ধারালো অস্ত্র, রাম দা, ২টি মোবাইল ফোন ও একটি চাকু উদ্ধার করেন। পরে তাকে যশোর আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে চৌগাছা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর বিএনপি দলীয় সন্ত্রাসী সেলিম রেজা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তার চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। উপজেলা বিএনপির এক নেতার ভাই তাকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয় বলে অভিযোগও রয়েছে।
সেলিম গত তিন মাসে অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ভাদড়া গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে রেফাউনের নিকট থেকে নগদ তিন লাখ ২০ হাজার টাকা ও ১৫ বিঘা জমির মাছের ঘের। একই গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে ইসরাফিলের নিকট থেকে নগদ তিন লাখ টাকা, একটি পালসার মোটর সাইকেল ও একটি মোবাইল ফোন সেট, মৃত আব্দুল বারিকের ছেলে বজলুর রহমানের নিকট থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকা, আনোয়ার ও শামিরুলের ১২ বিঘা মাছের ঘের দখল, পান্নু মেম্বরের নিকট তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলে তিনি পরিবারসহ গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান। ভাদড়া গ্রামের আব্দুল্লাহর ছেলে শামীমের নিকট থেকে ৪৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায়। একই গ্রামের কুড়োন মন্ডলের ছেলে ইয়ামিনের নিকট থেকে এক লাখ টাকা চাঁদা আদায়, ভাদড়া গ্রামের মসলেমের ছেলে মিঠুর কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা চাঁদা আদায়, একই গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে রফিকুলের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় এবং গ্রামের শাহিনুর খার ১৫০ বিঘা জমির মাছের ঘের দখল। এছাড়া গ্রামের আরো নির্যাতিত মানুষেরা চাঁদাবাজির শিকার হলেও তার ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না।
চৌগাছা থানার ওসি পায়েল হোসেন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।