শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। – ছবিঃ সংগৃহীত
ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই একটি মধ্যমপন্থী রাজনৈতিক দল ঘোষণা করবে ছাত্ররা। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুরের কাউনিয়া বাজারে গণসংযোগকালে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন এ কথা বলেন। এ সময় রংপুরের সংগঠক আলমগীর নয়ন, এম আলমগীর কবির, ইঞ্জিনিয়ার শেখ রেজওয়ান, এম আই সুমন, খন্দকার ময়নুল হক মীম, রিফাত হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আখতার হোসেন বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে একটি রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব হতে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি, ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ওই রাজনৈতিক দলের দেখা আমরা পাব। এর মধ্যেই ২০০ থানা কমিটি আমরা করেছি। জানুয়ারি মাসের মধ্যে ৪ শতাধিক থানা কমিটি হয়ে যাবে। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে দল ঘোষণা করব। অনেক নাম প্রস্তাবনা এসেছে। যাছাই-বাছাই শেষে ফাইনাল করা হবে।’
নতুন দলের আদর্শ তুলে ধরে আখতার বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি মধ্যমপন্থী রাজনৈতিক চর্চা থেকে এই দলের আবির্ভাব হবে। বাংলাদেশ দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা ইসলাম বিদ্বেষ যেমন আমরা টলারেট করব না, একইভাবে হিন্দু, উগ্রবাদ কিংবা মুসলিম উগ্রবাদের যে জায়গাগুলো আছে সেগুলো আমরা বরদাশত করব না। বাংলাদেশের মানুষ সুখে শান্তিতে বসবাস করতে চায়, সম্প্রীতিতে বসবাস করতে চায়। সম্প্রীতির মধ্যমপন্থী এক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা স্বপ্ন দেখি। ওই জায়গা থেকেই আমাদের এই রাজনৈতিক দল।’
তিনি আরো বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে অনেকেই আওয়ামী লীগকে নিয়ে আসার পায়তারা করছে। এটা স্পষ্ট যে দিল্লীর সাথে সম্পর্ক থাকায় এ ধরনের কথা বলা সম্ভব। দিল্লীর মদদেই হয় তো এ ধরণের কথা বলা হচ্ছে।’
নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে রাজনীতি করতে দেয়া হবে না। যারাই আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধেই দেশের জনগণ সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দাড়াবে।’
গণসংযোগ শেষে আখতার বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ২৪-এর আন্দোলনে এসেছে। এর মাধ্যমে তারা বাংলাদেশকে নতুন রূপে গড়তে চেয়েছে। সেই গড়তে চাওয়ার জায়গা থেকে বাংলাদেশের মানুষ সংস্কারগুলো চায়। মানুষ একটা নতুন সংবিধান প্রত্যাশা করে। ওই জায়গা থেকে সংবিধান তৈরির ম্যান্ডেন্ট গণপরিষদের থাকে। একটি গণপরিষদ নির্বাচন যেন হয়, সেই কারণেই আমরা প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছি। আমরা মনে করি, বাংলোদেশের সামনের যে নির্বাচন আসতেছে, সেটা একটা গণপরিষদ নির্বাচন হবে।’
আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলছি, খুনি হাসিনা এবং তার দোসররা বাংলাদেশে যে নারকীয় গণতহত্যা করে গেছে তার বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে কোনোভাবেই আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে আমরা ফিরতে দেব না। বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একাট্রা হয়েছে, তাদেরকে যারা নির্বাচনে আনার পায়তারা করছেন তাদের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ সব শক্তি নিয়োগ করবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যদি পতিত ফ্যাসিবাদিদের কোনো রূপ, কোনো আস্তানা, কোনো আস্ফালন দেখি, সেটা ফেসবুকে বা অন্যত্র হোক, তাহলে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলব, তাদের বিরুদ্ধে যেন কার্যকর কঠিনতম ব্যবস্থা নেয়া হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপির অংশগ্রহণ ছিল না ১৪, ১৮ বা ২৪ এর নির্বাচনগুলোতে। তাতে করে সেসব নির্বাচনগুলোতে একতরফা নির্বাচন বলে সাব্যস্ত করা হয়েছে। অনেকেই ভাবছেন, আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনে না থাকে, তাহলে সেটাকেও একতরফা নির্বাচন বলে সাব্যস্ত করা হতে পারে। এমন ভাবনা ঠিক নয়।’
পরে তিনি কারমাইকেল কলেজ ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন।
আপনার মতামত লিখুন :