রেলের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আহবান জানাল মন্ত্রণালয়


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ২৮, ২০২৫, ৯:০৬ পূর্বাহ্ণ /
রেলের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আহবান জানাল মন্ত্রণালয়

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে রেলের রানিং স্টাফরা। আন্দোলনে যুক্ত থাকা নেতারা জানিয়েছেন, মূল বেতনের সাথে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা দেয়ার বিষয়ে জটিলতা নিরসন না হওয়ায় কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। এ দিকে রেলপথ মন্ত্রণালয় ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহবান জানিয়ে বলেছে, রানিং স্টাফদের দাবি আদায়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় যথেষ্ট আন্তরিক ও সচেষ্ট রয়েছে। তাদের অনেক দাবি ইতোমধ্যে পূরণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, রানিং স্টাফদের দাবির বিষয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের পাঠানো মতামতের ভিত্তিতে একটি সভা ডেকেছিল রেলপথ মন্ত্রাণালয়। কিন্তু সোমবারের (২৭ জানুয়ারি) সভায় যোগ দেননি রেলের রানিং স্টাফরা। একই সাথে মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির পূর্বঘোষিত যে ঘোষণা ছিল, তা বহাল রেখেছেন তারা।

এ সম্পর্কে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা রেল মন্ত্রণালয়ের সভা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমাদের কোনো কর্মচারী সভায় অংশগ্রহণ করেননি। আমরা জানতে পেরেছি আমাদের দাবি মানা হবে না। আমাদের কাছে আরো সময় চাওয়া হবে, সে জন্যই আমরা আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা মঙ্গলবার থেকে ট্রেন চালানো বন্ধ করে দিয়ে কর্মবিরতিতে যাব। আমাদের কর্মসূচি কাল থেকে চলতে থাকবে।’

আন্দোলনে যুক্ত থাকা নেতারা জানিয়েছেন, মূল বেতনের সাথে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা দেয়ার বিষয়ে জটিলতা নিরসন না হওয়ায় কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা।

এ ব্যাপারে সোমবার রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকীর পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফরা (চলমান ট্রেনে দায়িত্ব পালনকারী) ২৮ জানুয়ারি থেকে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে সারা দেশে রেল চলাচলে অচলাবস্থা ও চরম যাত্রী ভোগান্তির আশঙ্কা রয়েছে।

এক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও রেলপথ মন্ত্রণালয় তাদের দাবি-দাওয়া/চাহিদা পূরণে যথেষ্ট আন্তরিক ও সর্বোচ্চ সচেষ্ট। ইতোমধ্যে রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে রানিং স্টাফদের দাবি-দাওয়াগুলো অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে পত্র যোগাযোগের পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক আলোচনাও অব্যাহত আছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে ইতোমধ্যে তাদের রানিং এলাউন্স ৭৫ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।

এ ছাড়া মাইলেজ এলাউন্স পাবার জন্য সর্বনিম্ন ৮ ঘণ্টা ও ১০০ মাইল দূরত্বের শর্তও শিথিল করা হয়েছে। রানিং স্টাফদের অন্যান্য দাবি আদায়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় যথেষ্ট আন্তরিক ও সচেষ্ট রয়েছে। এ অবস্থায় পূর্বঘোষিত আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে রেলের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের আহবান জানানো হয়েছে রেল মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে।

এতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবাদান অব্যাহত রেখে ট্রেন পরিচালনা করাই রেলওয়ের মূল কাজ। সে লক্ষ্যে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিক কর্মচারীদের যেকোনো সমস্যা ও দাবি-দাওয়ার বিষয় সমাধানে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত আছে।

রানিং স্টাফদের দাবি-দাওয়া আদায়েও রেলপথ মন্ত্রণালয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাথে কার্যকর যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। এ অবস্থায়, যাত্রী সাধারণের ভোগান্তি বিবেচনা করে পূর্বঘোষিত আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার এবং আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে রানিং স্টাফরা উদ্যোগ নেবেন বলে মন্ত্রণালয় বিশ্বাস করে।