ছবি: সংগৃহীত
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার হুকুমদাতা ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিদেশে পলাতকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
রোববার ধানমণ্ডিতে ট্রাইব্যুনালের কার্যালয়ে এক বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে এ কথা জানান তিনি। অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিচারক নিয়োগ হলে এ সপ্তাহেই জুলাই গণহত্যায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হবে। শেখ হাসিনাসহ বিদেশে পলাতকদের ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিচারক নিয়োগ হওয়া মাত্রই ট্রাইব্যুনাল ফাংশনাল হবে। এরপর আমরা নেসেসারি কিছু অর্ডার চাইব। এ বিচার শুরুর আগে যেগুলো দরকার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, আসামিদের বিদেশ যাওয়া বন্ধ করা, অনেক রকমের তথ্য-উপাত্ত এগুলো সিজ করার জন্য অর্ডার লাগবে।’
‘তাদের দ্রুততার সঙ্গে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য লাগবে। সে ব্যাপারে ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে আদেশ আসবে। ইমপ্লিম্যান্ট করার দায়িত্ব কিন্তু ট্রাইব্যুনালের হাতে না, এর দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে’- বললেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। তিনি আরও বলেন, ‘মূলত যাদের নির্দেশে ও যাদের কারণে এ গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল তাদের আমরা অগ্রাধিকার তালিকায় শুরুতে নিয়ে এসেছি।
আইন অনুযায়ী তাদের গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের সাহায্য চাওয়া হবে। কোনো অপরাধী বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে থাকলে ইন্টারপোলের সিস্টেমের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা থাকায় তাদের গ্রেপ্তারে বাংলাদেশ ইন্টারপোলে রেড নোটিশ পাঠাতে পারে। আর এর কল্যাণে আমরা অনেককেই দেশে ফেরত আনতে পারব।’
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এখন পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ ৬০টির বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গেল জুলাই ও আগস্টে গণহত্যার অভিযোগ ওঠে।
এসব অভিযোগের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরই অংশ হিসেবে নতুন প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থা গঠিত হয়েছে। বিচারের জন্য আইন সংশোধন ও ভবন মেরামতের কাজও চলমান। এমন পরিস্থিতিতেই আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিয়োগ হবে।