নিউজ ডেক্সঃ শেখ হাসিনার রোষানল, গুম, খুন থেকে এমপি, ওয়ার্ড কাউন্সিলর কেউ রেহাই পায়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, জনবিছিন্ন হওয়ায় পাশের দেশ ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর সহযোগিতায় ক্ষমতায় ছিলেন স্বৈরাচার শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (০১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা রিকশাচালক সাইফুল ইসলামকে নতুন রিকশা প্রদান করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’। রিকশাটি কিনতে অর্থ সহযোগিতা করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম রবি।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার উপহার- গণতন্ত্রের কথা বললে হাত-পা ভেঙে দেওয়া, গুম-খুনের শিকার হওয়া। শেখ হাসিনার রোষানল-গুম থেকে এমপি, ওয়ার্ড কাউন্সিলর পর্যন্ত কেউ রেহাই পাননি। এগুলো সব করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে। এত দুর্নীতি- লুটপাট করেছেন কাউকে টুঁ-শব্দ পর্যন্ত করতে দেননি।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা হয়তো জানতেন কোনো দিন তার পালিয়ে যাওয়া লাগতে পারে। তাই তিনি তার কাছের আত্মীয়স্বজন ও লোকদের দিয়ে টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছেন।
তিনি আরও বলেন, বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ। শেখ হাসিনা ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে মেধাবীদের প্রাণ নিতেন। তিনি মেধাবীদের কখনো পছন্দ করতেন না। তার ছাত্রলীগকে দিয়ে তিনি মেধাবীদের প্রাণ নিতেন। কারণ, মেধাবীরা দেশ চালাবে, এটা হাসিনার পছন্দ নয়।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় থাকতে পাশের দেশ ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা সহযোগিতা করেছে। জনবিচ্ছিন্ন হওয়ায় ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার উপর নির্ভরশীল ছিলেন তিনি। তিনি মানতেন তাকে গোয়েন্দা সংস্থা ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখবে। এ জন্য কেউ ভারতের বিরুদ্ধে ‘টু’ শব্দ করলে তার রক্ষা ছিল না।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আপনাদের ভয় কীসে? আপনারা এখনো হাসিনার দোসরদের কেন ধরছেন না, পদচ্যুত করছেন না, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের বিলুপ্ত করছেন না কেন? এরাই তো খুনি, গুণ্ডা- এদের হাত দিয়ে শহীদ হয়েছে আমাদের ছাত্র-জনতা।
রিজভী বলেন, পতিত স্বৈরাচারের ষড়যন্ত্রের সুতা এখনো আছে। তার দোসররা একটি করে সুতা পাকাচ্ছে দেশকে অস্থিতিশীল করতে। প্রতিটা রাষ্ট্রীয় সেক্টরে আওয়ামী দোসররা ওত পেতে বসে আছে। দোসররা শুনছে যে, ‘দেশের কাছাকাছি পতিত শেখ হাসিনা আছে, সে ঢুকলে আবার মাথাচাড়া দিয়ে বেরিয়ে পড়বে।’ শেখ হাসিনা চিনতেন না জনগণকে, তিনি ব্যবহার করেছেন পুলিশ-র্যাবকে। এরা যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, কোনো কাজে আসবে না। জনগণ এই ষড়যন্ত্র রুখে দিবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী এবং জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক সিনিয়র সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম রবি।
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুলসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।