দ্রুত শেয়ার করুন-
আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে সম্মানিত করেছেন ওহির জ্ঞান দিয়ে। সেই ওহির জ্ঞান মানুষের কাছে পৌছাঁনোর জন্য যুগে যুগে তিনি অসংখ্য নবী রাসূল প্রেরণ করেছেন। নবুয়াতি এই ধারা হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু হয়ে সমাপ্ত হয়েছে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মাধ্যমে। তবে নবীজী (সা.) রেখে গিয়েছেন একদল হেদায়েতপ্রাপ্ত আলোকিত মানুষ। যাদের ব্যপারে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা দিয়েছেন “তারা আল্লাহর ওপর সন্তুষ্ট আল্লাহ তাদের ওপর সন্তুষ্ট”। তারা হলেন সাহাবায়ে কেরাম। তারা সরাসরি রাসুলুল্লাহ (সা.) এর কাছ থেকে কুরআন সুন্নাহর জ্ঞান লাভ করেছেন।
সাহাবায়ে কেরাম থেকে ইলমে ওহির উত্তারাধিকারী হয়েছেন তাবেঈন। তাবেঈন থেকে তাবে তাবেঈন। আর তাবে তাবেঈন থেকে নায়েবে রাসূল তথা উলামায়ে কেরাম। উলামায়ে কেরামের ত্যাগের বিনিময়ে দ্বীন ইসলাম আমরা পেয়েছি। দ্বীন ইসলামের প্রচার প্রসার ও রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে উলামায়ে কেরামের ভূমিকা ও অবদান অনস্বীকার্য।
ধর্মপ্রাণ মুসলমান এই ওহির জ্ঞান মসজিদ, মাদরাসা, খানকাহ, মাহফিল ও দাওয়াতে তাবলিগের মাধ্যমে অর্জন করে আসছেন। ওয়াজ মাহফিল ও ওয়ায়েজিনে কেরাম ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান দাওয়াত ও তাবলিগের অংশ। আল্লাহপাক বলেন, “তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা উচিত যারা জাতিকে কলাণের পথে আহ্বান করবে, সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎ কাজের নিষেধ করবে, আর তারাই সফলকাম -১০৪;৩।
উলামায়ে কেরামের মর্যাদা প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, “তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার এবং জ্ঞানপ্রাপ্ত হয়েছে আল্লাহ তাদের মর্যাদা উচুঁ করেছেন-১১;৫৮। নবীজী বলেন, “আমার পক্ষ হতে একটি বাণী হলেও পৌছেঁ দাও”- সহিহ বুখারী। রাসূল (সা.) বলেন, তোমাদের মাঝে উত্তম যারা কুরআন মজিদ শিক্ষা করে এবং শিক্ষা দেয়।
দেড় হাজার বছর ধরে যারা আল্লাহ ও রাসূলের (সা.) এই আদেশ পালন করে চলেছেন তারাই হলেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুসলিম উম্মাহর আলোকিত মানুষ উলামায়ে কেরাম। হাদিসের ভাষায় উলামায়ে কেরাম আম্বিয়ায়ে কেরামের উত্তরসূরী জাতির পথ প্রদর্শক। রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, “ঐ ব্যক্তি আমার আদর্শের ওপর নেই, যে বড়দের সম্মান করে না, ছোটদের স্নেহ করে না এবং আলেমদের প্রাপ্য মর্যাদা প্রদান করে না -মুসনাদে আহমদ;২২১৪৩।
ইসলামের আদিলগ্ন থেকে বিরোধীরা এর বিরোধীতা করে আসছে। মূসা (আঃ) এর বিরোধীতা করেছে ফেরাউন বাহিনী। ইব্রাহিম (আঃ) এর বিরোধীতা করেছে নমরুদ বাহিনী। আমার প্রিয় নবীজীর (সাঃ) বিরোধীতা করেছে আবু জেহেল, আবু লাহাব ও মুসলিম নামধারী মুনাফেক আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সলুল বাহিনী। সেই অপশক্তির উত্তরসূরীরা এখনো সক্রিয়। একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বব্যাপী ইসলামের পুর্নজাগরণ শুরু হয়েছে।
ইসলামী শক্তির এই উত্তাণ ও গণজোয়ার দেখে ইসলাম বিদ্বেষী অপশক্তির হৃদকম্পন শুরু হয়েছে। এজন্য তারা আজ কুফুরীবাদের নীল নকশা অনুযায়ী ইসলামকে দুনিয়া থেকে নিশ্চিহ্ণ করতে আদাজল খেয়ে লেগেছে। এ প্রসঙ্গে মহাগ্রন্থ আল কুরআনে বর্ণিত হয়েছে; “তারা মুখের ফুৎকারে আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহপাক তার আলোকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে-৮;৬১।
ইসলাম বিদ্বেষী অপশক্তি বুঝতে সক্ষম হয়েছে তাওহিদী জনতা ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানের এদেশে ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়ে তারা সমাজ ও রাষ্ট্রে ঠিকতে পারবে না। এজন্য তারা আবু জেহেল ও আবু লাহাবের অবস্থান থেকে সরে এসে মুনাফিক আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সলুল বাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। মিথ্যা মামলা, ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের পথ বেচেঁ নিয়েছে।
একদিকে তারা আজ ধর্মনিরপেক্ষতার দোহাই দিচ্ছে অন্যদিকে শুধুমাত্র ইসলামের বাণী প্রচার করার অপরাধে উম্মতের আলোকিত মানুষ নিরীহ নিরাপরাধ উলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর মুফাসসিরে কেরাম, মাসের পর মাস মুহাদ্দিসিনে ইজাম, দিনের পর দিন ওয়ায়েজিনদের কারাগারে অন্তরীণ করে রেখেছে।
একদিকে তারা ইসলামের জন্য মায়াকান্না করছে অন্যদিকে রাজপথে তাওহিদী জনতা, ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও তালেবে ইলমদের নির্বিচারে গুলি করে মারছে।
একদিকে মাদরাসা শিক্ষার আধুনিকায়নের কথা বলছে অন্যদিকে মিথ্যা অজুহাত তোলে হাজারো বছরের ইসলামী সংস্কৃতি ওয়াজ মাহফিল ও মাদরাসা বন্ধের পায়তারা করছে। ভারতের কর্ণাটকে হিজাব নিষিদ্ধ ও মসজিদ বন্ধের পায়তারা আর বাংলাদেশে ওয়াজ মাহফিল নিষিদ্ধ ও মাদরাসা বন্ধের পায়তারা একসূত্রে গাথাঁ! এতেই প্রমাণিত ইসলামের বিরুদ্ধে বিশ্বকুফুরী শক্তি ঐক্যবদ্ধ।
বার আউলিয়ার পূণ্যভূমি তাওহিদী জনতার এদেশে ইসলাম বিরোধী অপশক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তারা মুসলিম জনতার হৃদয়ের স্পন্দন পীর মাশায়েখ ও ওয়ায়েজিনে কেরামের বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্রে মেতেছে। একশত ষোল জন বিশিষ্ট আলেম ও এক হাজার মাদরাসার বিরুদ্ধে বাইশ শত পৃষ্ঠার শ্বেতপত্র সেই মহা ষড়যন্ত্রের মহা আয়োজন।
দুঃখজনক হলেও সত্য নাস্তিকরা তাওহিদী জনতা, ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও উলামায়ে কেরামকে ধর্মান্ধ, মৌলবাদ ও ধর্মব্যবসায়ী বলে গালি দেয় অথচ আজ পর্যন্ত তারা এসব কাল্পনিক অভিযোগের প্রমাণ, সার্বজনীন ও গ্রহণযোগ্য কোনো ব্যাখা ও সংজ্ঞা জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারেনি। ইসলাম পরিপূর্ণ জীবন বিধান এবং বাস্তবসম্মত ধর্ম । আল্লাহপাক দ্বীনে কোনো প্রকার অচলাবস্থা রাখেননি। উল্লেখ্য, স্বেচ্ছায় হাদিয়া দেয়া এবং হাদিয়া নেয়া দু’টিই রাসূল (সা.) এর সুন্নাহ।
অতএব, হাদিয়ে নিয়ে আপত্তি তোলা বিদ্বেষপ্রসূত ও অজ্ঞতা! দূর্নীতিবাজদের লক্ষ কোটি টাকা দূর্নীতি ও পাচারের অপকর্ম ঢাকার অপপ্রয়াস। জনগণের দৃষ্ঠি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার বৃথা চেষ্ঠা। এক কথায় শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা।
বিগত ষোল বছরে আমার প্রিয় সোনার বাংলা থেকে পাচার হয়েছে এগার লক্ষ কোটি টাকা। (দৈনিক কালের কন্ঠ ৬ই জুলাই ২০২১)। পিকে হালদার একাই পাচার করেছে তিন হাজার পাচঁশত কোটি টাকা। তথাকথিত গণকমিশন কী এসব দূর্নীতি চোখে দেখে না?
গুলশান ট্রাজেডি জাতির চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কারা জঙ্গিবাদে লিপ্ত। তারপরও তারা উলামায়ে কেরাম ও মাদরাসা নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা কৌশলে এদেশ থেকে ইসলামকে নিশ্চিহ্ণ করতে চায়। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, “তারা ইসলামের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছে আল্লাহ তায়ালা কৌশল অবলম্বন করেছেন। আল্লাহ তায়ালাই শ্রেষ্ট কৌশলী” -৫৪;৩।
স্বঘোষিত গণকমিশনে অতি উৎসাহী দুই আইনজ্ঞের বিরুদ্ধে রয়েছে অনৈতিক ও বেআইনী কর্মকান্ডের অভিযোগ। একজনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্বীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সন্তানের বিরুদ্ধে গর্ভধারিণী মায়ের সংবাদ সম্মেলন এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার দাবী ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা।
অন্যজনের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করে বিচারপতি হওয়া, পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ এবং কালো টাকায় ইংল্যান্ডে বাড়ী করার অভিযোগ। এসব বিতর্কিত ও অভিযুক্তরা সরকারের বেডলিষ্ট থেকে গুডলিস্টে আসার ব্যর্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত।
দুঃখজনক হলেও সত্য সেইসব বামপন্থী অভিযুক্তরাই আজ সাধু সেজে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের হৃদয়ের স্পন্দন, শ্রদ্ধা ও ভালবাসার পাত্র উলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলছে। যা অনভিপ্রেত, অনাকাক্সিক্ষত ও উদ্দেশ্যপ্রনোদিত। তারা উলামায়ে কেরামকে ধর্মপ্রাণ মুসলমান থেকে বিচ্ছিন্ন করার এবং জাতির সামনে হেয় প্রতিপন্ন করার গভীর এক ষড়যন্ত্রে মেতেছে! দুই আইনজ্ঞের বেআইনী ও বির্তকিত কর্মকান্ডে জাতি হতবাক ও বিরক্ত!
তাদের ভাষায় উলামায়ে কেরাম নাকি ধর্মের অপব্যাখা করছে? জাতির কাছে সবিনয়ে জানতে চাই, ধর্মের অপব্যাখা করছে নাকি সঠিক ব্যাখা করছে তা মূল্যায়ণ করবে ধর্মীয় বিশেষজ্ঞরা নাকি ধর্মাজ্ঞরা? ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসীরা নাকি ইসলাম বিদ্বেষীরা?
সচেতন মহল মনে করেন রাষ্ট্রের সর্মথন না থাকলে বির্তকিতরা এ দুঃসাহস দেখাত না। কাদের ইন্ধন, কাদের অর্থায়ন এবং কাদের মিশন বাস্তবায়নে এই তথাকথিত গণকমিশন কাজ করছে তা জাতি জানতে চায়। শাহবাগীদের মত তারা উলামায়ে কেরাম ও সরকারকে মুখোমুখী দাড় করিয়ে দেশের শান্তিময় পরিবেশ ও সম্প্রীতির বন্ধন বিনষ্ট করতে চায়।
বিদ্বেষপ্রসূত শ্বেতপত্রের কারণে তথাকথিত গণকমিশন আজ গণধিকৃত ও গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে। ইসলাম বিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে উলামায়ে কেরাম, ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও ঈমানদারগণ ঐক্যবদ্ধ।
অপশক্তির জনসমর্থন আজ শূন্যের কোটায়। পক্ষান্তরে উলামায়ে কেরামের প্রতি ভক্তি, শ্রদ্ধা ও ভালবাসা ধর্মপ্রাণ মুসলমানের অন্তরে আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। মসজিদ, মাদরাসা ও ওয়াজ মাহফিলে এখন স্থান সংকুলান হয় না। তাদের ভাষায় নাউজুবিল্লাহ উলামায়ে কেরামকে নাকি আর বাড়তে দেয়া যায় না!
তারা কতবড় জালেম! তাদের কত বড় স্পর্ধা! আল্লাহর জমিনে আল্লাহর কথা নিষিদ্ধ করতে চায়! মুসলিম রাষ্ট্রে তাদের অবাঞ্জিত ঘোষনা করা উচিত। তারা উলামায়ে কেরামের মুখে তালা লাগাতে চায়। বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিতে চায়। মিথ্যা মামলা, জেল-জুলুম, ও জুজুর ভয় দেখিয়ে রাজনৈতিক দল গুলোর মত উলামায়ে কেরামদেরও নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।
নাস্তিক তাসলিমা লিখেছে, “যারা মৌলবাদকে বিদায় করতে চায় তাদের উচিত ধর্মকে আগে বিদায় করা। কেননা সাপকে যতই বোঝানো হোক না কেন সে আজ না হয় কাল আপনাকে ছোবল দিবে। সাপ (ধর্ম) না থাকলে ছোবল মারার প্রশ্নই উঠে না। (বাহির অন্তরে কলাম সাপ্তাহিক খবরের কাগজ ১৮ মে ১৯৯৩)।
নাস্তিক তাসলিমার উত্তরসূরীরা চায় এদেশে তাওহিদী জনতার ধর্মীয় বিশ্বাস, ইসলামী মূল্যবোধ ও ধর্মীয় সংস্কৃতি ধ্বংস করে নাস্তিকের মত বেপরোয়া জীবন যাপন করতে। তারা এ পবিত্র ভূমিকে কৃত্রিম নরক বানাতে চায়।
উলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে কাল্পনিক শ্বেতপত্র ও আষাঢ়ে গল্প সেই নীল নকশারই বহিঃপ্রকাশ। উল্লেখ্য, ত্রিশ নম্বরে যার নাম এসেছে তিনি কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিক নয়। সৌদী আরবে দাওয়াতি কাজ করেন। এ থেকেই প্রতীয়মাণ ব্যক্তি নয় দেশ নয় বরং ইসলামই এই অশুভ শক্তির টার্গেট।
ইসলামকে যারা সহ্য করতে পারে না, ধর্মের নাম শুনলেই যাদের গায়ে গাত্রদাহ শুরু হয়ে যায় সেসব ধর্মবিদ্বেষী অপশক্তি ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে এটি স্বাভাবিক। তবে আমরা ধর্মপ্রাণ মুসলমান, উলামায়ে কেরাম, ওয়ায়েজিনে কেরাম ও পীর মাশায়েখগণ সেইসব ধর্মবিদ্বেষী তাসলিমার অনুসারীদের কোনোভাবেই আমাদের ঈমান ডাকাতির সুযোগ দিতে পারি না।
জাতিকে নাস্তিক বানানোর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা বাস্তাবয়নে সহযোগী হতে পারি না। হাদিসে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, “তুমি আলেম হও অথবা আলেমের ছাত্র হও অথবা আলেমের সহযোগী হও অথবা আলেমকে ভালবাস তবে কোনভাবেই পাচঁ নম্বর তথা আলেম বিদ্বেষী হয়ো না, তাহলে ধ্বংস অনিবার্য”।
এসব ইসলাম বিদ্বেষী অপশক্তি ও ইসলামের শত্রুদের প্রতিহত ও প্রতিরোধ করা প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও ঈমানদারের ঈমানী দায়িত্ব। মুসলিম রাষ্ট্রে এসব ইসলাম বিদ্বেষীদের কার্যকলাপ কোনোভাবে চলতে পারে না। পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক বলেন, “তোমরা ইসলাম বিরোধীদের সাথে লড়াই কর, যে পর্যন্ত না ফেতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়-১৯৩:২।
আমিন আস্তে না জোরে, হাত ওপরে না নিচে, রফয়ে এদাইয়ন একবার না বার বার। দোয়া’তে হাত তোলা না তোলা, সালাতু সালাম বসে না দাড়িয়ে, ঈদ দু’টি না তিনটি এগুলো ইসলাম ধর্মের বেসিক কোন বিষয় নয়। ইখতেলাফ আসলাফের মধ্যেও ছিল তবে সীমাবদ্ধ। ইখতেলাফ সত্ত্বেও পরস্পর এহতেরাম ও মহব্বত ছিল।
এসব মুস্তাহাব্বাত, ফরোআত ও জুজিয়াত এবং হাদিসের ভাষায় ‘মা’লা’ঈয়ানি’ এড়িয়ে ইসলাম বিরোধীদের মোকাবেলায় সমগ্র তাওহিদী জনতা, সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও সমস্ত উলামায়ে কেরাম মতবিরোধ ও ভেদাভেদ ভুলে দ্বীনের বৃহত্তর স্বার্থে ইসলামের হেফজতে আল্লাহর ওয়াস্তে নবীজীর(সা.) ভালবাসায় সিক্ত হয়ে সাদা দিলে উদার মনে এক প্লাটফর্মে জনপ্রিয় দ্বীনি সংগঠন হেফাজতে ইসলামের পতাকা হাতে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে গেলে ইসলামবিরোধী অপশক্তি অতীতের মত লেজ গুটিয়ে পালাতে বাধ্য হবে ইনশাআল্লাহ।
ঈমানী শক্তিতে বলিয়ান, আমার প্রিয় বোন ‘মুসকান’ ঈমানী অস্ত্র আল্লাহু আকবর ধ্বনি দিয়ে যদি হয়ে গেরুয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে একাই লড়ে সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে তাহলে আমরা আঠার কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলমান কেনো পারব না?
পরিশেষে বলতে চাই, ইসলামের শিক্ষায় হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা। আসুন যার যার অবস্থান থেকে আমাদের ভালবাসা ও সম্মানেরপাত্র আলেম সমাজকে অসম্মান ও হেয়প্রতিপন্ন করার প্রতিবাদ করি। হেফাজতে ইসলামের সৃষ্টি ও লক্ষ্যই হচ্ছে ইসলাম বিদ্বেষীদের দমন এবং অশুভ শক্তির মোকাবেলা করা।
শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফি রহিমাহুল্লাহ ও কায়েদে মিল্লাত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী রহিমাহুল্লাহর পরীক্ষিত ও প্রদর্শিত পন্থায় শাপলার চেতনায় ইসলাম বিরোধীদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
ইসলাম বিদ্বেষী অশুভ শক্তি মনেহয় ভুলে গেছে আল্লামা শফি(র.) ও আল্লামা বাবুনগরী(র.) মৃত্যুবরণ করলেও উনাদের আদর্শ ও অনুসারীরা কিন্তু জীবিত। ইসলাম বিদ্বেষীদের স্মরণ করে দিতে চাই এক শফি কবরে লক্ষ শফি ওপরে, এক বাবুনগরী কবরে লক্ষ অনুসারী ওপরে। হেফাজতে ইসলাম সক্রিয় হলে অশুভ শক্তি অটো নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
মহাগ্রন্থ আল কুরআনে আল্লাহপাক বলেন, “তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করোনা, যদি তোমরা মুমিন হও তবে তোমরাই জয়ী হবে-১৩৯:৩।