ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা থেকে জেদ্দা, মদিনা, দাম্মাম রুটে টিকিটের মূল্য গ্রুপ নামেই প্রায় এক লাখ টাকায় বিক্রি হতো এবং কম্পিউটার সিস্টেমে এটি প্রায় এক লাখ ৭০ থেকে এক লাখ ৮০ হাজার টাকায় ঠেকেছিল। সউদী এয়ারলাইন্স এক লাখ ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত উচ্চমূল্যের রেকর্ড ছাড়িয়েছিল। সরকারের হস্তক্ষেপ ও কঠোর নজরদারিতে বর্তমানে এসব টিকিট কম্পিউটার রিজার্ভেশন সিস্টেমে ৪৮ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
কোনো কোনো এয়ারলাইন্স ঢাকা-দাম্মাম, ঢাকা-রিয়াদের টিকিট ৩৫ হাজার টাকাতেও বিক্রি করছে। বিষয়টিকে অবিশ্বাস্য এবং সিভিল এভিয়েশন অথরিটিকে এ ধারা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের। একই সঙ্গে বর্তমান সরকারের আন্তরিকতায় এই অসাধ্য সাধন সম্ভব হয়েছে। যা অন্য সরকারের পক্ষে সম্ভব হতো না। অনেকের মতে, উড়োজাহাজের টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যরোধে সরকারের ১০ দফা নির্দেশনা ‘জাদু-মন্ত্রের’ মতো কাজ করেছে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের রুটে টিকিটের দাম অর্ধেকে নামার তথ্য দিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ।
তবে বিদেশি অনেক এয়ারলাইন্স এখনো আগের মতো উড়োজাহাজ ভাড়া আদায় করছে। এ বিষয়েও দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। তাদের মতে, বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো নিজ দেশে টিকিট বিক্রির ডলার পাঠানোতে আগের সঙ্কট নেই। তাই তাদের উড়োজাহাজ ভাড়া কমানোর সময় এসেছে। এক্ষেত্রেও সিভিল এভিয়েশনকে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর টিকিটের বাড়তি দামের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছেন। সরকারের বাস্তবমুখী পদক্ষেপে দেশের ট্রাভেল এজেন্টদের সংগঠন আটাব বলেছে, সরকারি নির্দেশনার ফলে টিকিট ‘ব্লক’ করে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়ানোর যে ধারা চলছিল তা বন্ধ হওয়ার ফলে এই পরিবর্তন এসেছে।
সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, সবার সম্মিলিত সহযোগিতায় টিকিটের দাম কমেছে। মন্ত্রণালয়, টাস্কফোর্সের সুপারিশসহ শক্তিশালী মনিটরিং ব্যবস্থা এবং রেগুলেটরি থেকে প্রত্যেকটি এয়ারলাইন্সকে চিঠি দেয়া হয়েছে টিকিটের উচ্চমূল্য ও নিম্ন মূল্যের বিষয়ে। যা টিকিটের দাম নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রেখেছে। বিদেশি এয়ারলাইন্স বা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রুটে এয়ারলাইন্সগুলো এখনো উচ্চমূল্যে টিকিট বিক্রি করছে।
এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক সপ্তাহ হয়েছে প্রত্যেকটি বিদেশি এয়ারলাইন্সকে টিকিটের উচ্চমূল্য ও নিম্ন মূল্য বিষয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। আশা করছি, দ্রুতই বিদেশি এয়ারলাইন্সের টিকিটের দাম কমে যাবে। একই সঙ্গে টিকিটের দাম নিয়ন্ত্রণে সার্বক্ষণিক মনিটিরিং জোরদার করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
দেরিতে হলেও বিদেশ গমনেচ্ছু প্রবাসী শ্রমিকদের মধ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস। এয়ার টিকিটের বাজারে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে চড়া দামে টিকিট বিক্রি করে প্রবাসী শ্রমিক ও ওমরাহ যাত্রীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতনের পরেও সিন্ডিকেটের বেড়াজালে পড়ে দীর্ঘ দিন যাবত আন্তর্জাতিক রুটের বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিটের মূল্য নিয়ে তুঘলকি কা- ঘটেছিল। আসন সঙ্কটের দোহাই দিয়ে দফায় দফায় এয়ার টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে মধ্যপ্রাচ্যগামী প্রবাসী শ্রমিক ও ওমরাহ যাত্রীদের নাভিশ্বাস উঠেছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশনায় অবশেষে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ ও কঠোর নিয়মের কারণে আন্তর্জাতিক রুটের এয়ার টিকিটে নাটকীয় মূল্য হ্রাস হয়েছে।
সূত্র মতে, এক লাফে এয়ার টিকিটের মূল্য প্রায় ৭৫ শতাংশ কমেছে। টপটেন নামক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গ্রুপ বুকিং পদ্ধতির কারণে মধ্যপ্রাচ্যগামী শ্রমিকদের বিমান ভাড়া এক লাখ ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। সরকারের মনিটরিং ও নতুন বিধিনিষেধ কার্যকরের ফলে বর্তমানে সউদী আরবের টিকিটের মূল্য ৪৮ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে নেমে এসেছে। এমনকি কিছু এয়ারলাইন্স ঢাকা-দাম্মাম ও ঢাকা-রিয়াদ রুটে মাত্র ৩৫ হাজার টাকায় টিকিট বিক্রি করছে। ফলে প্রবাসী শ্রমিকরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছেন। মাহে রমজানের দু’মাস আগেই ওমরাহ টিকিট নিয়ে বাজারে নৈরাজ্যের সৃষ্টি করা হয়। চড়া দামে ওমরাহ টিকিট কিনতে যাত্রীদের গলদঘর্ম পোহাতে হয়েছে।
সরকারের হস্তক্ষেপ ও কঠোর নজরদারিতে এয়ার টিকিটে অভাবনীয় মূল্য হ্রাসের ঘটনায় অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আন্তরিক মোবারকবাদ জানিয়েছে। আটাবের মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ এক বিবৃতিতে এ মোবারকবাদ জানান। এয়ার টিকিটের মূল্য নির্ধারণে নিয়ন্ত্রণের কোনো কার্যকরী উদ্যোগ না থাকায় দফায় দফায় ওমরাহ টিকিটের দাম বাড়ায় এয়ারলাইন্সগুলো। রমজানের ওমরাহ টিকিটের জন্য বাজারে শুরু হয়েছিল হাহাকার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা থেকে সউদী আরবের বিভিন্ন শহরে যেতে টিকিটের মূল্য ছিল বেশ চড়া। এয়ারলাইন্সগুলোর সাথে টপটেন ট্রাভেলস এজেন্সিগুলোর যাত্রীর নাম ও পাসপোর্ট ছাড়াই গ্রুপ বুকিং পদ্ধতির কারণে ভাড়া এক লাখ ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। আটাবের মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ জানান, টিকিটের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে ও বাজারে শৃঙ্খলা আনতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় গত ১১ ফেব্রুয়ারি এক পরিপত্র জারি করে। এই নির্দেশনার ফলে জেদ্দা, মদিনা, দাম্মাম ও রিয়াদসহ বিভিন্ন গন্তব্যের টিকিটে কৃত্রিম মূল্যবৃদ্ধি কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে যাত্রীদের নাম, পাসপোর্টের বিস্তারিত তথ্য এবং পাসপোর্টের ফটোকপি ছাড়া কোনো টিকিট বুক করা যাবে না। ফলে এয়ারলাইন্সগুলো তাদের আগে থেকে ব্লক করা টিকিটগুলো উন্মুক্ত করতে বাধ্য হয়েছে। যার ফলে কম্পিউটার রিজারভেশন সিস্টেমে সিট সহজলভ্য হয়েছে। এতে যাত্রীরা ও ট্রাভেল এজেন্সিগুলো রিয়েল টাইমে টিকিটের মূল্য ও সিটের অবস্থা দেখতে পারছে। যার ফলে এয়ারলাইন্সগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে এবং ভাড়া উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে। এই পদক্ষেপ কৃত্রিম সিট সঙ্কট দূর করেছে, যা গত কয়েক মাস ধরে টিকিটের মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ ছিল।
আটাব সরকারের এই উদ্যোগকে সময়ের দাবি ও জরুরি পদক্ষেপ বলে প্রশংসা করেছে। বিশেষ করে প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আটাবের মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ বলেন, এই উদ্যোগ শুধু যাত্রীদের জন্য নয়; বরং পুরো ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রির জন্যও উপকারী। এটি বাজারে আরো স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করবে। আমরা সরকারের এই কার্যকর পদক্ষেপের জন্য কৃতজ্ঞ। এর সুফল দীর্ঘস্থায়ী করতে সরকারের মনিটরিং আরো জোরদার করা জরুরি।
তিনি বলেন, বাজারে এয়ার টিকিটের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এয়ারলাইন্সগুলোর ওপর নিয়মিত নজরদারি এবং কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে, যাতে তারা আগের অনিয়মে ফিরে না যায়। বাজারকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত রাখতে নতুন কিছু আইন ও বিধিমালা তৈরির সুপারিশও করা হয়েছে জানিয়ে আটাব মহাসচিব বলেন, যদি সরকারের এই উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে এয়ার টিকিট বাজারে দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন আসবে। বিশেষ করে প্রবাসী শ্রমিকরা সাশ্রয়ী মূল্যে ভ্রমণের সুযোগ পাবেন।
বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মাহে রমজানে মক্কা-মদিনায় বেশি সওয়াবের আশা ওমরাহ পালনের প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। কিন্তু এয়ারলাইন্সিগুলোর আকাশচুম্বী বিমান ভাড়ার দরুণ এবং ওমরা মোফা ইস্যু অঘোষিতভাবে বন্ধ থাকায় অনেক ওমরাযাত্রী রমজানের ওমরাহ পালন করতে সউদী যেতে পারেননি। রমজানের ওমরায় যাওয়ার জন্য যেসব যাত্রী সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের অগ্রিম টিকিট ক্রয় করেছিলেন ওমরাহ ভিসা না হওয়ায় তারা আর সউদী যেতে পারেননি। এসব যাত্রীদের এয়ার টিকিটের টাকা এখনো ফেরত দেয়া হয়নি। এতে ওমরাযাত্রীরা চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন।
অপর দিকে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সিস্টেমে টিকিট বিক্রির ঘোষণা দিলেও ওমরাহ এজেন্সিগুলো মাসের পর মাস ঘুরেও সিস্টেমে কোনো ওমরাহ টিকিট পায়নি। মধ্যপ্রাচ্যগামী বিমানের টিকিটের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মী ও ওমরাহ যাত্রীকে টিকিট কিনতে হিমশিম খেতে হয়েছে। ঢাকা থেকে মধ্যপ্রাচ্যগামী কর্মীরা ওয়ানওয়ে টিকিট ৮০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ ১০ হাজার টাকায় কিনতে বাধ্য হয়েছেন। ভুক্তভোগী একাধিক বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মী এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর টিকিটের ভাড়া নিয়ন্ত্রণের কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা না থাকায় অহরহ ওমরাহ টিকিটের দাম বাড়ছে। ফলে টিকিটের অতিরিক্ত টাকা জোগাতে ওমরাহযাত্রী ও বিদেশগমনেচ্ছু কর্মীরা চরম ভোগান্তির শিকার হন। সাউদিয়া অ্যারাবিয়া এয়ারলাইন্সের প্রধান কার্যালয় থেকে গত ১ মার্চ রমজানের ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটের ওমরাহ টিকিটের দাম ৮০০ মার্কিন ডলার থেকে ৮১৫ মার্কিন ডলার ঘোষণা দিয়ে সার্কুলার জারি করা হয়। এর মাত্র এক দিন পরে ঢাকাস্থ সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের অফিসের সেলস বিভাগের ম্যানেজার শুভ সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা তোয়াক্কা না করে রমজানের ওমরাহ টিকিটের মূল্য ৮৮০ মার্কিন ডলার থেকে ৯০০ মার্কিন ডলার বাড়িয়ে ট্রাভেলস ও ওমরাহ এজেন্সিগুলোর কাছে ই-মেইল করেছে।
রমজান না আসতেই ওমরাহ টিকিটের আকাশচুম্বী মূল্য বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে একাধিক ওমরাহ এজেন্সি মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের সেলস বিভাগের কর্মকর্তা শুভ সেলস প্রতিনিধি সিফাত ম্যাডাম ও নাজমুল এ ব্যাপারে কোনো সঠিক জবাব দিতে পারেননি। এয়ারলাইন্সে থেকে শুধু জানিয়েছে, রমজানের ওমরাহ টিকিটের অস্বাভাবিক চাহিদা থাকায় এক দিনের মধ্যেই প্রায় ২১ হাজার ওমরাহ টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।
আটাব কর্তৃপক্ষ ওমরাহ টিকিট নিয়ে সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা বন্ধ এবং টিকিটের দাম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর নাম ছাড়া বুকিং দিয়ে টিকিট বিক্রির সেলস পলিসি বন্ধ রাখার জন্য কার্যকরী উদ্যোগ নেয়ার জন্য সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছিলেন। বিমানসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্সে চাহিদানুযায়ী ওমরাহ টিকিট পাওয়া যায়নি। শতবার চেষ্টা করেও বিমানের সিস্টেমে কোনো ওমরাহযাত্রীর টিকিট মেলেনি।
বিমানের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সিন্ডিকেট চক্র ওমরাহ টিকিট ব্লক করে রাখার গুরুতর অভিযোগ উঠছিল। ওমরাহ টিকিটের জন্য হাহাকার অবস্থা বিরাজ করায় এক মাস ধর্ণা দিয়ে বিমানের মতিঝিল অফিস থেকে একটি ওমরাহ টিকিট কিনতে সক্ষম হননি একাধিক হজ এজেন্সির মালিক। আবার বেশি টাকা দিলে চিহ্নিত এজেন্সি থেকে বিমানের টিকিট মিলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ ওমরাহযাত্রীর টিকিটের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ওমরাহ এজেন্সি ও যাত্রীদের মধ্যে অহরহ বাকবিত-া হচ্ছে। ওমরাহযাত্রীরা চড়া দামে টিকিট কিনতে গিয়ে অতিরিক্ত টাকা জোগাতে হিমশিম খেতে হয়েছে। তারা দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সহনীয় পর্যায়ের ওমরাহ টিকিট পাননি। একাধিক ভুক্তভোগী ওমরাহযাত্রী এ তথ্য জানিয়েছেন। বাংলাদেশ হজযাত্রী ও হাজী কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল্লাহ আল নাসের মদিনা থেকে জানিয়েছেন, রমজান আসার আগেই এক শ্রেণির অতিমুনাফালোভী ট্রাভেলস এজেন্সির বিভিন্ন এয়ারলাইন্সে হাজার হাজার ওমরাহযাত্রীর টিকিটের জন্য অগ্রিম বুকিং দিয়ে রেখে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করেছিল।
এ সুযোগে এয়ারলাইন্সগুলো অস্বাভাবিক চাহিদা দেখিয়ে দফায় দফায় ওমরাহযাত্রীর টিকিটের দাম বাড়ানোর সুযোগ পায়। তিনি বলেন, সাউদিয়া এয়ারলাইন্স ওমরাহযাত্রীদের টিকিটের মূল্য অস্বাভাবিক বাড়িয়েছে। এটি ওমরাহযাত্রীদের সাথে এক ধরনের জুলুম। তিনি বলেন, সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের জুলুম থেকে ধর্মপ্রাণ ওমরাহযাত্রীরা বাঁচতে চান। ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর অসুস্থ প্রতিযোগিতার দরুণ বিমানসহ বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো যাত্রীদের টিকিটের দাম বৃদ্ধি করে কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা হাতিয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়েছে।
তিনি সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপে এবং ওমরাহ ভিসা বন্ধ থাকায় এয়ার টিকিটের মূল্য প্রায় ৭৫ হ্রাস পাওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। অবশ্য আটাবের একাধিকবার দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সের হজ ও ওমরাহযাত্রীদের টিকিটের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণের লক্ষ্যে বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েও এতদিন কোনো সাড়া পাননি।
আপনার মতামত লিখুন :