নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) যেন সরকারপ্রধানকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে না ফেলে সে বিষয়ে এ বাহিনীর সদস্যদের খেয়াল রাখতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জনগণের সঙ্গে না মিশলে একজন রাজনীতিকের অবস্থা ‘জলের মাছ ডাঙায় ওঠার’ মতো অবস্থা হয়। আমরা রাজনীতি করি জনগণের জন্য। এই জনগণই আমাদের প্রাণশক্তি। তাদের জন্যই রাজনীতি। কাজেই আমি শুধু ওইটুকু চাই যে, মানুষ থেকে যেন বিচ্ছিন্ন না হই বা মানুষ যেন আমার কাছে আসতে কোনো আঘাতপ্রাপ্ত না হয়।
গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এসএসএফ-এর ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের বিরোধিতাকারীরা যাতে কোনো রকম ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালাতে না পারে সে জন্য সেনাবাহিনীসহ নৌ ও বিমান বাহিনী, র্যাব, পুলিশসহ সব বাহিনীকে সজাগ থাকার নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলে যখন ছিলাম, মানুষকে কী দিতে পেরেছি, একটু কথা, একটা আস্থা বা মানুষের বিশ্বাস অর্জন। সেই জনবিচ্ছিন্ন যেন না হয়ে পড়ি, এটা একটু দেখতে হবে। প্রধানমন্ত্রিত্ব আমার কাছে ‘ভোগের কোনো বস্তু নয়’। বাবা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সর্বাধিনায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ’৫৪ সালে মন্ত্রী ছিলেন, এরপর ’৫৬-৫৭ পর্যন্ত মন্ত্রী ছিলেন। পরে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু পাঁচ ভাই-বোন কখনোই ক্ষমতা ভোগ করার কথা কখনো চিন্তাই করিনি। এটি বাবা-মায়ের নির্দেশ ছিল।
পদ্মা সেতু নির্মাণ ও উদ্বোধন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের মতো এত বড় একটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে সেতু নির্মাণের কাজ আমরা সম্পন্ন করেছি। কিন্তু যারা সেতু নির্মাণের বিরোধিতা করেছিল তাদের একটা উদ্দেশ্য রয়েছে। যার কিছু কিছু তথ্যও আমরা পেয়েছি। আমরা জানতে পেরেছি, এমন একটা ঘটনা ঘটানো হবে যাতে ২৫ তারিখে আমরা উদ্বোধন অনুষ্ঠান করতে না পারি। বিরোধিতাকারীরা কী করবে তা কিন্তু আমরা জানি না।
সেনাবাহিনীর প্রধানসহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত তিন বাহিনী প্রধান, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি এবং আনসার ও ভিডিপির প্রধানদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে। সমস্ত বিষয়টিই একটু রহস্যজনক। এ জন্য সবাইকে বলব একটু সতর্ক থাকতে হবে এবং আমাদের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার দিকেও সবাইকে নজর দিতে হবে। সেগুলোর নিরাপত্তা দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভুয়া দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এ দেশের ব্যক্তিবিশেষের প্ররোচনায় বিশ^ ব্যাংক পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়ন বন্ধ করে দিলে আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করব, না হলে করব না। সরকার সেই পদ্¥া সেতু নিজেদের অর্থে নির্মাণ করেছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আপনারা দেখেছেন রেলে আগুন, লঞ্চে আগুন, ফেরিতে আগুন এমনকি সীতাকুন্ডে যে আগুনটা সেটা একটা জায়গা থেকে লাগতে পারে; কিন্তু বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটা জায়গায় আগুন লাগে কিভাবে? আর রেলের আগুনের বিষয়ে একটি ভিডিও পাওয়া গেছে যেখানে দেখা গেছে রেলের চাকার কাছে আগুন জ¦লছে, সেটা কী করে সম্ভব?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তিকে মানুষের নাগালের মধ্যে এনে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছে। কিন্তু এসবের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদ সৃষ্টির অপপ্রয়াস সম্পর্কেও সকলকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি আরো বলেন, এই ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা যেমন একদিকে আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করেছে, অপরদিকে এই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেই সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি গোষ্ঠী তাদের নানা কর্মকাণ্ড পরিচালিত করে থাকে।
সেজন্য সরকার আধুনিক বিশ্ব এবং যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এসএসএফসহ অন্য বাহিনীগুলোকে প্রযুক্তিনির্ভর ও শক্তিশালী করে গড়ে তুলছে। কারণ, আমাদের বিশে^র সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে এবং বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকেও দমন করতে হবে। অতীতে বিভিন্ন বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণেই সরকার বিগত জোট সরকারের আমলে দেশে সৃষ্ট সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন ও নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে আমাদের আরো সতর্ক থাকতে হবে এবং মনে রাখতে হবে আমরা যখন এগিয়ে যাই তখনই এ ধরনের ঘটনা কোনো কোনো মহল ঘটনানোর চেষ্টা করে থাকে। এটাই আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যের বিষয়। সে জন্য সবাইকে আমি সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
দেশে প্রযুক্তি শিক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাইটেক পার্ক ও কম্পিউটার ল্যাব করে প্রযুক্তি শিক্ষার দিকে নজর দেয়া হয়েছে।
পাশাপাশি, স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে, রাজধানীতে মানুষের চলাচল সুবিধার জন্য মেট্রোরেল প্রকল্পও আজকে দৃশ্যমান। এছাড়া, এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে, চট্টগ্রাম কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ করা হচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোরও নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে হবে।
নোবেল বিজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূস বেঈমানি করেছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে একটা মিথ্যা অপবাদ আমাদের দিয়েছিল। দুর্ভাগ্য, আমাদের একজন স্বনামধন্য মানুষ, যাকে আমি সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা দিয়েছিলাম, সেই ড. ইউনূস বেঈমানি করেছেন। গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে থাকতে না পেরে তিনি এ কাজ করেছেন।
তিনি তার বন্ধু তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের স্বামীর ‘ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে’ তিন লাখ ডলার ডোনেশনও দিয়েছিলেন। হিলারি ক্লিনটন আমাকে ফোনও করেছেন। আমার কাছে ড. ইউনূসের হয়ে ধরনাও দেন। তবে তাকে আমি আইনের কথা বলেছিলাম। অন্যদিকে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে বলে তারা (ড. ইউনূস) বিশ্ব ব্যাংকের কাছে বার বার মেইল পাঠিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম যে, দুর্নীতির প্রমাণ করতে হবে। পরে কানাডার আদালতে এটা ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু ড. ইউনূসের প্ররোচনায় বিশ্ব ব্যাংক অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ায়। আমরা বলেছিলাম, নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করব। কাজেই, খুব স্বাভাবিকভাবে অনেকেই ভেবেছিল এটা বোধহয় আমরা কোনোদিন করতে পারব না। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমরা কিন্তু সেটা করে ফেলেছি।
রাজনীতিকের কাছে জনগণই ‘প্রাণশক্তি’ এ কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে জোর করে দেশে ফিরে আসার পর থেকে বারংবার হত্যা প্রচেষ্টার শিকার হয়েছি। আল্লাহর রহমতে এবং দলের নেতা-কর্মীর সৃষ্ট মানবঢালে প্রাণে রক্ষা পেয়েছি। গুলি ও বোমার মুখে পড়েছি। আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছেন। হয়তো আল্লাহ আমাকে দিয়ে কোনো কাজ করাবেন, এ জন্য বাঁচিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেন, জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পেরেছিলাম বলেই দেশ আজ অভিশাপমুক্ত হয়েছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন দেশ হিসেবে আমরা যে মর্যাদা পেয়েছি সেই মর্যাদা নিয়ে আমরা যেন মাথা উঁচু করে চলতে পারি। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের যে মর্যাদা পেয়েছি তা নিয়েই যেন সামনে এগিয়ে যেতে পারি এবং দেশি-বিদেশি কোনো শক্তিই যেন এই অগ্রযাত্রায় বাধা সৃষ্টি করতে না পারে। তিনি বলেন, জাতির পিতার করে দেয়া পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়,’ এই নীতি নিয়েই বাংলাদেশ আগামীতেও সামনে এগিয়ে যাবে।
এসএসএফের দক্ষতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে যেসব বিদেশি অতিথিরা আসেন তারা এসএসএফ-এর ভূয়সী প্রশংসা করেন। আমি নিজেও তাদের পারদর্শিতায় গর্ববোধ করি। তবে এটাই সব সময় মাথায় রাখতে হবে পেশাগত দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি চারিত্রিক দৃঢ়তা, সততা শৃঙ্খলা সবকিছু মেনেই চলতে হবে এবং আমাদের এসএসএফ সে ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। তিনি আরো বলেন, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীতে নারী সদস্য নিয়োগ আমরা শুরু করি।
পুলিশে নারী সদস্য নিয়োগ জাতির পিতাই শুরু করেছেন। ভৌগোলিক সীমারেখায় আমরা হয়তো ছোট, কিন্তু জনসংখ্যায় বড়। আমরা বড় হয়ে চলব, বিশ্বে মর্যাদা নিয়ে চলব। আমরা দেশটাকে সেভাবে গড়ে তুলতে চাই। স্বাধীন দেশ হিসেবে আমরা যে মর্যাদা পেয়েছি সেই মর্যাদা নিয়ে আমরা যেন মাথা উঁচু করে চলতে পারি। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের যে মর্যাদা পেয়েছি তা নিয়েই যেন সামনে এগিয়ে যেতে পারি এবং দেশি-বিদেশি কোনো শক্তিই যেন এই অগ্রযাত্রায় বাধা সৃষ্টি করতে না পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি সব সময় যখন দোয়া করি আমি আমার ছেলে-মেয়ের জন্য যেমন দোয়া করি, নাতি-পুতির জন্য যেমন দোয়া করি, তেমনি ঠিক সেই রকমভাবে আমার সাথে যারা কাজ করেন প্রত্যেকের জন্য আমি দোয়া করি। এসএসএফের জন্য বিশেষ করে দোয়া করি। আমার নিরাপত্তা দিতে গিয়ে যেন কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটা সব সময় আমি চিন্তায় রাখি। এসএসএফের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) মো. মজিবুর রহমান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
রেমিট্যান্স প্রবাহ স্বাভাবিক ধারায় ফিরছে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশর রেমিট্যান্সের প্রবাহ কোভিড পূর্ববর্তী স্বাভাবিক ধারায় ফিরতে শুরু করেছে। জাতীয় সংসদে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে গতকাল বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এ কথা জানান। এ দিন প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম উচ্চ রেমিট্যান্স অর্জনকারী দেশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে রেমিট্যান্স হিসেবে ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জিত হয় এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে এটি রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। সেই সুবাদে প্রবাস আয় প্রাপ্তিতে বিশ্বে সপ্তম স্থান অধিকার করে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে রেমিট্যান্স কিছুটা হ্রাস পেয়েছে এবং জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে ১৭ দশমিক ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জিত হয়েছে, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কম। বিগত ২০১৯-২০, ২০১৮-২০১৯ ও ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসের রেমিট্যান্সের গড় ছিল ১৩ দশমিক ৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, কোভিড পূর্ববর্তী তিন বছরের প্রথম ১০ মাসে প্রাপ্ত রেমিট্যান্সের গড় অপেক্ষা ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে প্রাপ্ত প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি ২৮ দশমিক ৯১ শতাংশ বেশি। কাজেই, চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স হ্রাস পাচ্ছে না বলে বলা যেতে পারে। রেমিট্যান্সের প্রবাহ কোভিড পূর্ববর্তী স্বাভাবিক ধারায় ফিরতে শুরু করেছে। অন্যদিকে, ২০২০-২১ অর্থবছরে কোভিড অতিমারির সময় প্রবাস আয়ে অস্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি ঘটেছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে বিগত ২০২০-২১ অর্থবছরের তুলনায় প্রবাস আয় হ্রাসের কারণসমূহ হলো: ২০২০-২১ অর্থবছরে শুরুতে কোভিড অতিমারিতে প্রবাসীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তা থেকে তাদের জমানো টাকা দেশে পাঠিয়েছিলেন। অনেকে চাকরি হারিয়ে কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে সব অর্থ দেশে নিয়ে এসেছেন। এখন পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। অনেক প্রবাসী নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে গিয়ে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দিয়েছেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতি কোভিড-১৯ অতিমারিকে সফলভাবে মোকাবিলা করে স্বাভাবিক ধারায় ফিরে এলেও বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগকারী প্রধান প্রধান দেশের অর্থনীতিসমূহ এখনও স্বাভাবিক ধারায় ফিরে আসেনি। ফলে ওই দেশসমূহে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের প্রবাস আয় তুলনামূলকভাবে কম থাকায় রেমিট্যান্স পাঠানো হয়েছে। করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ-যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্য সচল হয়েছে। ফলে, ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরেও অর্থের লেনদেন বেড়ে যাওয়ায় রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
কীভাবে রেমিটেন্স বাড়ানো যেতে পারে সে বিষয় তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি ও বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ানো সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও কার্যক্রম চলমান রয়েছে।