যশোর প্রতিনিধি: যশোরের নবাগত পুলিশ সুপার মো: জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ জানিয়েছেন, যশোরের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে প্রকৃত অস্ত্রধারীদের শনাক্ত করে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে। এছাড়া লাইসেন্স স্থগিত অস্ত্র যারা জমা দেননি তাদের বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানায় খোঁজখবর নেয়া হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শহরের যানজটের জন্য পৌরসভার লাইসেন্স কার্যক্রমকে দায়ী করে তিনি বলেন, কার্যকর ভূমিকা রাখতে সংলাপ করবেন। ৫ আগস্টের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে যে হামলা ভাংচুর প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে সে অর্থে যশোর ছিল অনেকটাই স্বাভাবিক। অনেকটাই সুন্দর পরিবেশ বজায় ছিল। পুলিশের সাথেও শান্তিপূর্ণ সহঅবস্থান ছিল যশোরের মানুষের। তবে গত এক মাসে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে গেছে তার ব্যাপারে ভিকটিমরা অভিযোগ করলে যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতিমধ্যে পুলিশ মাঠে নেমেছে। থানাগুলোতে মামলা ও জিডি নেয়া হছে। সাংবাদিক ও যশোরের মানুষের সহযোগিতা নিয়ে পুলিশ সকল অনাকাঙ্খিত ঘটনায় জোরালোভাবে কাজ করতে চায়।
(৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় পুলিশ সুপার তার কনফারেন্স রুমে যশোরের সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়ের সময় এসব কথা বলেন।
যশোরের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের পরামর্শমূলক বক্তব্যের জবাবে পুলিশ সুপার জানান, আরো বড় কথা যশোরের কোনো থানা ফাঁড়ি পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হয়নি। এরপরও কাজে এবং অভিযানের সুবিধার্থে ইন্টারন্যাল বদলি শুরু করেছেন। দ্রুত যশোরের মানুষ এর সুফল পাবেন। তিনি যোগদান করেই নিজের মত করে মাঠে নেমেছেন, দেখেছেন যশোর একটি সুন্দর জায়গা। এখানে সাংবাদিকদের জন্যও সুন্দর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। পবিত্র কুরআনের একটি আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলতে হাবে। তথ্য যাচাই বাছাই করে বস্তুনিষ্ট সাংবাদিকতা করতে হবে। মত বিনিময়ের সময় যশোরের সিনিয়র সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ পুলিশ সুপারকে
জানান, যশোরের সাংবাদিকদের সাথে পুলিশের বরাবরই সম্পর্ক ভালো। মানুষের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের সব অভিযানে সাংবাদিকরা পাশে ছিল, এখনও থাকবে। তারা জানান, যশোরে কেনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয়নি। তবে দ্রুত পুলিশকে কার্যকরভাবে মাঠে নামতে হবে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী শনাক্ত করতে, দ্রুত অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। আর যানজট রোধে এখানই পদক্ষেপ নিতে হবে। থানা ফাঁড়িতে পুলিশ কাজ করছে না। ট্রাফিক পুলিশ মাঠে নেই বললেই চলে। যানজট প্রকট আকার ধারণ করেছে। কিশোর গ্যাংয়ের হাতে অস্ত্র রয়েছে। বিগত একটি রাজনৈতিক বলয়ের নেতা-কর্মীর দখলে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র রয়েছে, দ্রুত তা উদ্ধার করতে হবে। দৃশ্যত পুলিশকে অভিযানে নামতে হবে।
নেতৃবৃন্দ এসপিকে আরো জানান, বিগত সময়ে দাপিয়ে বেড়ানো সন্ত্রাসী অস্ত্রধারীদের নতুন তালিকা করতে হবে। দাগী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের আটক না করলে পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরবে না।
মত বিনিময় অনুষ্ঠানে অংশ নেন, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, দৈনিক গ্রামের কাগজের প্রকাশক সম্পাদক ও যশোর জেলা সংবাদপত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিন, প্রেসক্লাব যশোরের সাধারণ সম্পাদক এস এম তৌহিদুর রহমান, দৈনিক লোকসমাজের প্রকাশক শান্তনু ইসলাম সুমিত, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আনোয়ারুল কবীর নান্টু, দৈনিক টেলিগ্রামের সম্পাদক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক, প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও যশোর জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নে সভাপতি শেখ দিনু আহমেদ, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনোতোষ বসু, দৈনিক গ্রামের কাগজের বার্তা সম্পাদক সরোয়ার হোসেন, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি আকরামুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক এসএম ফরহাদ, দৈনিক গ্রামের কাগজের বিশেষ প্রতিনিধি ও যশোর জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মোর্শেদ আলম, যুগ্ম বার্তা সম্পাদক এম আইউব, প্রেসক্লাব যশোরের অর্থ সম্পাদক ও দৈনিক গ্রামের কাগজের অনলাইন এডিটর জাহিদ আহমেদ লিটন, প্রেসক্লাবের সাবেক সহসভাপতি সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরে সাবেক সভাপতি নুর ইসলাম, সিনিয়র সাংবাদিক ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল, রাজেক জাহাঙ্গীর, সাকিরুল কবীর রিটন, তৌহিদ জামান, মনিরুল ইসলাম, ইন্দ্রজিৎ রায় প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপস) বেলাল হোসাইন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফিরোজ কবীর।