ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে কর্মবিরতি শেষ করলেন না পশ্চিমবঙ্গের জুনিয়র ডাক্তাররা। শীর্ষ আদালত সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বলেছিল যে পশ্চিমবঙ্গের যে জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতি পালন করছেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে, তাদের কর্মবিরতি শেষ করে মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে কাজে ফিরতে হবে।
কর্মবিরতি শেষ না করে কয়েক হাজার জুনিয়র ডাক্তার মঙ্গলবার দুপুর থেকে রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগের সদর দফতর ‘স্বাস্থ্য ভবন’-এর সামনে বিক্ষোভ অবস্থান শুরু করেছেন। তাদের সাথে বহু সিনিয়র ডাক্তার এবং সাধারণ মানুষও যোগ দিয়েছেন।
প্রতিবাদীরা অভিযোগ করছেন, স্বাস্থ্য দফতরে যে ব্যাপক দুর্নীতি চলছে, তারই শিকার হয়েছিলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের তরুণী চিকিৎসক। তাই স্বাস্থ্য দফতর ‘সাফাই অভিযান’ চালাতেই মঙ্গলবারের অভিযান, এমনটাই জানাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
চিকিৎসকদের একজন বলছেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করছি। আমাদের দাবিগুলো নির্দিষ্ট – ধর্ষণ ও খুনের শিকার হওয়া তরুণী চিকিৎসকের বিচার, কলকাতার পুলিশ কমিশনার, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা অধিকর্তার পদত্যাগ। রাজ্য সরকার যদি আমাদের দাবিগুলো মেনে নেয়, তারপরেই আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেব।’
কয়েক হাজার চিকিৎসক মিছিল নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনের বাইরে পৌঁছলে একাধিক ব্যারিকেড দিয়ে প্রতিবাদীদের আটকিয়ে দিয়েছে পুলিশ। সেখানেই বসে পড়েছেন চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, যতক্ষণ না তাদের দাবিগুলি মেনে নেয়া হবে, ততদিন তারা ওই স্থানেই অবস্থান-বিক্ষোভ চালাবেন।
সোমবার রাত থেকেই চিকিৎসকদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলিতে বার্তা ছড়াতে থাকে যে মঙ্গলবারের জমায়েতে যেন সবাই রাতভর, এমনকি একাধিক দিন-রাত অবস্থানের জন্য প্রস্তুত হয়ে আসেন।
ঠিক এক সপ্তাহ আগে কলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজারের দিকে এক মিছিল নিয়ে যেতে গেলে পুলিশ ব্যারিকেডের সামনেই বসে পড়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। রাতভর, এমনকি পরের দিন দুপুর পর্যন্ত চলেছিল সেই অবস্থান।
চিকিৎসকদের ওই অবস্থানে পৌঁছিয়ে তাদের খাবার, জল, রোদের হাত থেকে বাঁচার জন্য ত্রিপল এনে দিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। অনেক দোকান এবং আশপাশের বাড়িগুলি তাদের টয়লেট খুলে দিয়েছিল অবস্থানরত চিকিৎসকদের ব্যবহারের জন্য।
সূত্র : বিবিসি