পাকিস্তান তাহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) এর প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের কাছে দ্বিতীয় খোলা চিঠি লিখে কারাগারের নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন এবং রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর কথিত ভূমিকার সমালোচনা করে তাদেরকে ‘তাদের সাংবিধানিক সীমানায় ফিরে যাওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
৩ ফেব্রুয়ারির আগের চিঠির পর এ চিঠিটি এসেছে, যেখানে তিনি সেনাবাহিনী এবং জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দূরত্ব দাবি করেন এবং কথিত বিভাজন দূর করার জন্য নীতিমালা পুনর্মূল্যায়নের আহ্বান জানান।
প্রথম চিঠির পর, নিরাপত্তা সূত্রগুলো বলেছিল যে, এটি সেনাবাহিনী গ্রহণ করেনি এবং এর অস্তিত্ব সম্পর্কে মিডিয়া রিপোর্টগুলোকে উড়িয়ে দিয়েছে। তিনি দাবি করেন যে, সামরিক প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের চিঠি পাওয়ার কোনো আগ্রহ নেই। শনিবার তার এক্স অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা তার সর্বশেষ চিঠিতে ইমরান খান বলেছেন, ‘আমার (পূর্ববর্তী) চিঠির জবাব ছিল খারিজ এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন’, তিনি আরো যোগ করেছেন যে, তার উদ্বেগ ‘শুধুমাত্র আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সুনাম এবং সেনাবাহিনী ও জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ব্যবধানের বিপজ্জনক পরিণতির জন্য। এ কারণেই আমি চিঠিটি লিখেছি’।
তিনি উল্লেখ করেন যে, যদি তার বর্ণিত ছয় দফার ওপর একটি গণভোট অনুষ্ঠিত হয়, ‘আমি বিশ্বাস করি, ৯০ শতাংশ পাকিস্তানি তাদের সমর্থন করবেন’। এসব বিষয়ের মধ্যে রয়েছে নির্বাচনের আগে কারচুপি এবং নির্বাচনের ফলাফলে কারচুপির অভিযোগ, ২৬তম সাংবিধানিক সংশোধনী বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিচার বিভাগ দখল, পিইসিএ-এর মতো কঠোর আইনের মাধ্যমে নিপীড়নের বিরুদ্ধে কণ্ঠস্বর দমন, ইচ্ছাকৃত রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং ‘জান্তার ক্ষমতা’ নীতি, পাকিস্তানের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের ওপর দমন-পীড়ন এবং সমস্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে তাদের প্রকৃত কর্তব্যের পরিবর্তে রাজনৈতিক প্রকৌশল এবং প্রতিশোধের জন্য ব্যবহার করা। তিনি বলেন, এ কথিত কর্মকা- কেবল জনসাধারণের অনুভূতিতে আঘাত করছে না বরং জনগণ এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে ফাটলও বাড়িয়ে তুলছে।
ইমরান খান আদিয়ালা কারাগারে নিয়োজিত একজন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তাকে হয়রানি এবং তার অধিকার লঙ্ঘনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগও করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, অফিসার আদালতের আদেশ উপেক্ষা করেছেন এবং ‹দখলদার› সেনাবাহিনীর মতো আচরণ করেছেন। আদিয়ালা কারাগারের সাবেক সুপারিনটেনডেন্ট আকরাম দাবি করেছেন যে, তাকে ২০ দিন ধরে একটি অন্ধকার কক্ষে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রাখা হয়েছিল, যেখানে সূর্যের আলোর কোনো প্রবেশাধিকার ছিল না, তার কক্ষের বিদ্যুৎ সংযোগ পাঁচ দিন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, যার ফলে তিনি অন্ধকারে ছিলেন এবং এমনকি তার ব্যায়ামের সরঞ্জাম, টেলিভিশন এবং সংবাদপত্রও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল এবং বই পড়ার সুযোগ ইচ্ছামতো সীমিত করা হয়েছিল।
পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা দাবি করেছেন যে, ছয় মাসে তাকে তার ছেলেদের মাত্র তিনবার ফোন করার অনুমতি দেওয়া হয়, যেখানে আদালতের আদেশে এর চেয়ে বেশিবার ফোন করার অনুমতি ছিল। তাছাড়া, প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত পিটিআই সদস্যদের তার সাথে দেখা করতে দেয়া হয়নি। তিনি তার স্ত্রী বুশরা বিবির সাথে দেখা করতে না দিয়ে আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করার অভিযোগও করেন, যাকে তিনি নির্জন কারাগারে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। সূত্র : ডন অনলাইন।