সেনাবাহিনীর সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে তা রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ। আর রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতে থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চল সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। শুক্রবার (২১ মার্চ) রাতে রাজধানীর বাংলামটরে রূপায়ণ টওয়ারে দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এর আগে সূচনা বক্তব্য দেন দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
সেনাপ্রধান আপনাদের সঙ্গে একটা ইনফরমাল মিটিং করেছেন। সেখানে কী আলোচনা হয়েছে-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চল সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যে আলোচনা হয়েছে, আমরা মনে করছি সেটি চলমান রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার শামিল। রাজনীতি রাজনীতিবিদরাই নির্ধারণ করবেন। পরবর্তী রাজনীতি কোন দিকে যাবে সেটি রাজনীতিবিদদের হাতেই থাকা উচিত। সে জায়গা থেকে গত বৃহস্পতিবার আমার স্ট্যান্ডটি নিতে হয়েছে। ৫ আগস্টের পর ফরমাল ইনফরমাল বিভিন্ন জায়গায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে আমাদের দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে। ১১ তারিখের মিটিংয়ের প্রেক্ষাপট ভিন্ন ছিল। সে জায়গায় অপরপ্রান্তের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ উপস্থিত ছিলেন। আমি আমার স্ট্যাটাসে সেটি পিসক্লোজ করেছি। ওখানে সব কিছু উপস্থাপন করা হয়েছে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার জন্য আমাদের আহ্বান জানানো হয়।
তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে আপনারা সেনাপ্রধানের একটা বক্তব্য লক্ষ্য করেছেন। সেটা নিয়ে দেশের মধ্যেও কথা হয়েছে। এটাকে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অসমীচিন হিসাবে ধরা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধানকে যেভাবে সম্বোধন করা হয়েছে, যেভাবে ইনক্লুসিভ নির্বাচনের ইঙ্গিত করা হয়েছে, আওয়ামী লীগসহ-সার্বিক বিষয়ে যখন আলোচনার কথা বলা হয়েছে। তখন গিয়েছিলাম। আমার স্ট্যাটাসে সবকিছু স্পষ্ট করা হয়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় আছেন কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমাদের লড়াই অব্যাহত রয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত ছাত্র-নাগরিক ও ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ রয়েছি, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি নিরাপত্তা ঝুঁকি বোধ করছি না।
সেনাবাহিনীর বক্তব্যটা আসলে কী ছিল-স্পষ্ট করার অনুরোধ করলে হাসনাত আবদুল্লাহ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, আমার ডিরেক্ট স্পিচ আছে। আমাদের কনভারসেশনটা কী হয়েছে, ওপর থেকে কী আসছে, আমাদের পাশ থেকে কী আসছে। আমরা বলেছি, ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ গণহত্যার দায় স্বীকার করেনি। আমরা আমাদের জায়গায় বলছি, আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। দল হিসাবে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তাদের অপরাধ স্বীকার করতে হবে। তারপর অন্য কোনো আলোচনা হলে হতে পারে। এর আগে কোনো আলোচনা হতে পারে না। এটা অসম্ভব। ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নাম পুনরাবৃত্তি করছি, অথচ ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নাম, মার্কা এবং আদর্শ এই তিনটাই অপ্রাসঙ্গিক। এখানে যদি কোনো দেশি-বিদেশি যড়যন্ত্র চালানো হয়, আমরা এজেন্সি বা বিদেশি কোনো কর্তৃপক্ষ কারও কাছেই আমরা কমিটেড নই।
আপনার মতামত লিখুন :