খুলনায় টানা দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার (৭ জুলাই) বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কখনও ভারি, কখনও হালকা বৃষ্টিপাত হয়। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টিপাতে নগরীর টুটপাড়া, রয়েল মোড়, মিস্ত্রিপাড়া, খালিশপুর, নিউ মার্কেট এলাকা, বাস্তুহারা এলাকা, শান্তিধাম মোড়, দিলখোলা রোড, পূর্ব বানিয়া খামার, বসুপাড়া, ফুলবাড়ি গেট, আলমনগর, মুজগুন্নি আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে।
এদিকে, বিভিন্ন সড়কে পানি উঠে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন পথচারীসহ সাধারণ মানুষ। যানবাহন চলাচলেও ভোগান্তিতে পড়ে। অনেক সড়কে জলাবদ্ধতার কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মোটরে পানি প্রবেশ করে অনেক যানবাহন বিকল হতেও দেখা গেছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা বেহাল থাকার কারণে এমন জলাবদ্ধতা বলে অভিযোগ নগরবাসীর। সিটি করপোরেশনের কাছে দ্রুত সমস্যার সমাধানের দাবি তাদের।
মৌলভিপাড়া এলাকার বাসিন্দা হেমায়েত উদ্দিন বলেন, ‘রাস্তা আর ড্রেনের সমস্যা ১৯৯৬ সাল থেকে দেখে আসছি। ড্রেন থেকে পানি নদীতে যাবে কী? উল্টো নদীর পানি মনে হয় ড্রেন দিয়ে শহরে ঢুকে। জলাবদ্ধতা এ শহরের স্থায়ী সমস্যা।’ ২০১৯ সালে খুলনা সিটি করপোরেশন বৃহৎ ড্রেনেজ উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়। ৮২৩ কোটি টাকার এ প্রকল্পে রয়েছে ৯টি খাল খনন, ৮টি স্লুইস গেট, প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি ড্রেন নির্মাণ, আউটলেট খনন, জমি অধিগ্রহণ ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহসহ ময়ূর নদীর ওপর তিনটি সেতু নির্মাণ। ২০২৩ সালে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও অগ্রগতি আশানুরূপ নয়। এছাড়া গত ৭ বছরে ৬৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯৮টি ড্রেন পুনর্র্নিমাণ করেছে কেসিসি। কিন্তু বাস্তবতা হলো, বর্ষা এলেই খুলনার রাজপথে নামে পানির স্রোত।
কেসিসির প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবির উল জব্বার বলেন, ‘নগরবাসীর সমস্যা সমাধানে ড্রেনেজ প্রকল্প বাস্তবায়ন চলছে। তবে ২০১৩ সালে নেয়া প্রকল্পগুলোর জন্য নির্ধারিত নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য এখন দ্বিগুণেরও বেশি। নতুন বরাদ্দ ছাড়া কাজ এগোনো সম্ভব নয়। আমরা যতই ড্রেন নির্মাণ করি, যদি আবর্জনা পরিষ্কার না হয়, তাহলে জলাবদ্ধতা কমবে না। নতুন একটি প্রকল্পে স্লুইস গেট ও পাম্প হাউস বসানোর পরিকল্পনা আছে। এটি বাস্তবায়ন হলে পরিস্থিতি উন্নতি হবে।’