ঢাকা শহরের ব্যস্ততম হানিফ ফ্লাইওভারের নতুন নামকরণ করা হয়েছে যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান ফ্লাইওভার। ইতোমধ্যে পুরান ঢাকার চানখারপুলে হানিফ ফ্লাইওভারে ওঠার বিল বোর্ডে ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড, যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান ফ্লাইওভার প্রকল্প লেখা সাইন বোর্ড লাগানো হয়েছে।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যার আগে চানখানপুল মোড়ে ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার কোম্পানির সেইফটি অ্যান্ড ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো: মোয়াজ্জেম হোসেন ফ্লাইওভারের নাম পরিবর্তন হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তার সাথে থাকা ওরিয়ন কোম্পানিরই অপর একজন সদস্য বলেন, সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নাম যেভাবে পরিবর্তন হয়েছে এটাও সেভাবেই পরিবর্তন হয়ে গেছে। এখন থেকে যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান ফ্লাইওভার নামেই সবাই চিনবে জানবে ও ডাকবে। কবে থেকে নাম পরিবর্তন করা হয়েছে জানতে চাইলে তারা বলেন, পরিবর্তন হয়েছে সাইন বোর্ডে সেটি আছে। তা ছাড়া এটা গুগল ম্যাপে যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান ফ্লাইওভার নামে আগে থেকেই আছে বলে জানান তারা। এর আগে ব্যাপক যানজটে থমকে থাকা ফ্লাইওভার হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এই ফ্লাইওভারের গুলিস্তান-চানখানপুল অংশে গতকাল দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ডিএমপি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তাদের অধীনস্থ পুলিশ ও সার্জেন্টদের যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিতে দেখা যায়।
এ দিকে দেখা যায়, গুলিস্তান থেকে টোল দিয়ে চানখারপুল অংশে নামার রাস্তাটি এখন একমুখী করা হয়েছে। দু’টি লেন দিয়েই সব ধরনের গাড়ি সোজা নেমে বকশীবাজার এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে চলে যেতে পারছে। আগে নিমতলী গেট দিয়ে গাড়িগুলো যেতে পারত। সেটির মুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
অপর দিকে ঢাকা মেডিক্যাল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিক থেকে ফ্লাইওভারে ওঠা গাড়িগুলোকে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সামনে দিয়ে চলাচল করার জন্য মোড়ে মোড়ে সাইন বোর্ড লাগিয়ে চালকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আগে চানখারপুল মোড় হয়ে যেসব গাড়ি ফ্লাইওভারে উঠতে পারত, সেই গাড়িগুলো এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বার্ন ইউনিটের (পশ্চিম) রাস্তার মুখটি পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। এতে ফ্লাইওভার থেকে চানখারপুল মোড়ে নামা যানবাহনের গতি আগের থেকে বাড়ার সাথে সাথে সড়কে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরেছে বলেও মনে করছেন পুলিশ, ফ্লাইওভার সংশ্লিষ্ট ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
চানখারপুল মোড়ে ঢাকা মেডিক্যাল ভিউ নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক ওয়াদুদ নয়া দিগন্তকে এ বিষয়ে বলেন, কয়েক দিন আগেও ফ্লাইওভারে যানজটের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। ফজরের নামাজের পরও গাড়িগুলো এই এলাকা দিয়ে ঠিকভাবে চলতে পারত না। মানুষের কী যে কষ্ট হতো তা আমরা দেখেছি। এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে, যানজট কমেছে। ফটোস্ট্যাট মেশিন ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, আগের থেকে যানজট কমেছে। আগে তো ট্রাফিক পুলিশদের আরামে দাঁড়ানোর সুযোগই ছিল না। এখন তারা একটু স্বস্তি পাবেন। তা ছাড়া এখন এই রাস্তা একমুখী করে দেয়ায় যানজটে গাড়ি থমকে দাঁড়ায় না। আস্তে আস্তে হলেও চলতে থাকে। এ ছাড়া ওরিয়ন কোম্পানির কর্মকর্তারা দাবি করছেন, এই এলাকার যানজট ৯৯% কমে এসেছে।
গতকাল সন্ধ্যার আগে দেখা গেছে, পুলিশ কর্মকর্তারা যানজট নিরসনের পাশাপাশি ব্যাটারিচালিত রিকশা আটক করে হ্যান্ডেল থেকে বৈদ্যুতিক লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছেন। তবে ক্ষুব্ধ চালকরা এ সময় পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে বলছেন, আপনারা যেখানে এগুলো বানাচ্ছে সেখানে যাচ্ছেন না কেন? তখন এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সেই কৈফিয়ৎ তোমাকে দেবো না। এই রোডে এলেই লাইন কেটে দেবো।
আপনার মতামত লিখুন :