স্বৈরাচারদের পতন অনিবার্য। ইতিহাসে কোন স্বৈরাচারই স্থায়ী হতে পারেনি। এই তো গত বছর মোদির পরম মিত্র ফ্যাসিস্ট হাসিনা প্রবল ছাত্র আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। শুধু কি হাসিনা? এরপর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ২৪ বছরের স্বৈরতন্ত্রও ধসে পড়ে গত বছরই। তিনিও আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে চোরের মত পালিয়ে যেতে বাধ্য হোন।
কট্টর হিন্দুত্ববাদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও যে সে পথেই হাঁটছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। একের পর এক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছেন বিরোধীদলসহ সংখ্যালঘুদের ওপর। তাই অনেকেরই ধারণা হাসিনা-আসাদের পরিণতি বরণ করতে হতে পারে মোদীকেও। বিগত ১৬ বছরে হাসিনা কেঁড়ে নিয়েছিলো মানুষের ভোটের অধিকার। তার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেই করা হতো নির্যাতন, গুম-হত্যা। হাসিনার আয়নাঘরের আয়নাবাজিতো দেখেছে পুরো বিশ্ব। ২০১৪ সালে হেফাজতে ইসলামকে কিভাবে মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে নিধন করেছিলো তাও অজানা নয় কারোরই।
অপরদিকে ২০০০ সালে বাবার মৃত্যুর পর ক্ষমতায় এসেছিলেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। আসাদের পিতা ঊনত্রিশ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলেন। উত্তরাধিকার সূত্রেই তিনি শক্তভাবে নিয়ন্ত্রিত এবং দমনপীড়নমূলক রাজনৈতিক কাঠামো পেয়েছিলেন, যেখানে বিরোধীদের প্রতি কোনো ধরনের সহনশীলতা ছিল না তার।
এক সময় এই বাজে নীতিই কাল হয়ে দাঁড়ায় তার জন্য। ২০১১ সালে তার সরকারের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলন এতটাই নৃশংসভাবে দমন করেছিলেন এই নেতা যা বিশ্ব বিবেককে রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়েছিলো। এই যুদ্ধে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে আসাদ সরকার।
ভারতের মোদি সরকারও একই পথে হাটছে। মুসলমানদের ওপর দিনের পর দিন যে অন্যায় অবিচার করে যাচ্ছে নরেন্দ্র মোদি তার প্রতিফলন ঘটবে এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না । ভারতীয় মুসলমানদের ঐতিহ্য মোঘল আমলের বাবরি মসজিদ দখলে নিয়ে সেখানে রাম মন্দির স্থাপন করেছে হিন্দুত্ববাদি কট্টরপন্থী এই নেতা। সেসময় নির্বিচারে হত্যা করেছে মুসলমানদের। মোদির এই ন্যক্কারজনক কর্মকান্ডে মুসলমানরা আন্দোলনে নেমেছিলো বিশ্বজুড়ে।
শুধু কি বাবরি মসজিদ? মুসলমানদের আরও বেশ কিছু উপাসনালয় ভেঙ্গে দেয়ার খবর পাওয়া যায়। জয় শ্রী রাম না বলায় দিনদুপুরে মুসলমানদের ওপর আক্রমণ ও হত্যার ঘটনাও কম নেই ভারতে। তাই গণঅভ্যুত্থানের মুখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও সিরিয়ার বাশার আল আসাদ যেভাবে লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে তেমন পরিণতিই হবে নরেন্দ্র মোদির এমনটিই ধারণা অনেকের নেটিজেনদের।