রোবট ট্যাক্সি – সংগৃহীত
হিউম্যানয়েড বা মানুষরূপী রোবট কি ভবিষ্যতে গাড়ি চালাতে পারবে? টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে একদল গবেষক এই গবেষণাই করছেন। তারা দেখতে চাচ্ছেন অত্যাধুনিক সেন্সর এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাযুক্ত রোবট গাড়ি কতটা নিখুঁতভাবে চালাতে পারে। হিউম্যানয়েড রোবট চোখে থাকা ক্যামেরায় রাস্তা স্ক্যান করছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ঠিক করছে গাড়ি চালাতে কী পদক্ষেপ দরকার এবং ট্রাফিক লাইটের পরিবর্তন হলে বা কোনো মানুষ রাস্তায় নামলে কী করতে হবে।
জাপানের রাজধানী টোকিওর এক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা মুসাশি নামের রোবটটি তৈরি করছেন। এটির মানুষের মতো দেখতে অস্থি, পেশী এবং হাত, পায়ে ফোর্স সেন্সর রয়েছে। ৭৪টি কৃত্রিম পেশী এবং ৩৯টি জয়েন্টের এই রোবটটি হ্যান্ডব্রেক, ব্লিংকার এবং গ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
মানুষের বিকল্প হতে মুসাশিকে এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। বর্তমানে রোবটটি একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালাতে পারে। কিন্তু ভবিষ্যতে এটি যেকোনো গাড়ি চালাতে সক্ষম হতে পারে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, মুসাশির মতো রোবট সেল্ফ-ড্রাইভিং কারের চেয়ে অনেক সস্তা হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সোলের মানুষ যদিও চালকবিহীন গাড়ি দেখে আর বিস্মিত হন না, এই বাসগুলো প্রথমবারের মতো গণপরিবহন হিসেবে শুধু রাতের বেলা চলছে। যাত্রী ইওয়ানজু চা বলেন, ‘আমি বাসের সামনে একটি সাইনবোর্ড দেখেছি যেখানে লেখা আছে এটি স্বচালিত গাড়ি। শুরুতে আমি ঘাবড়ে গিয়েছিলাম, পরে দেখলাম যতটা ভেবেছি তত খারাপ না।’
স্বচালিত গাড়িটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে সোলের ব্যস্ত শহরতলী হংডে এবং ডংডেমুনের মধ্যে চলছে।
এক্ষেত্রে নিরাপত্তা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। যাত্রীরা দাঁড়িয়ে যেতে পারেন না। অবশ্যই সিট বেল্ট পরতে হয়।
স্যুম ইন্কের হেড অব অপারেশন্স সেংউক পার্কে বলেন, ‘ছয় বছরের কম শিশুরা এই গাড়িতে চড়তে পারে না, এমনকি সাথে অভিভাবক থাকলেও।’
তবে স্বচালিত গাড়িটি এখন অবধি পুরোপুরি স্বাধীন নয়। গাড়িতে একজন রিসার্চ ইঞ্জিনিয়ার থাকেন যিনি বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করেন এবং একজন ‘সেফটি ড্রাইভার’ চালকের আসনে বসে থাকেন জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায়।
সেফটি ড্রাইভার বাইওংউ ওহ বলেন, ‘হুইল নিজে ঘুরতে শুরু করার পরও আমি ধরে রাখতাম। কারণ সবকিছু আমার কাছে নতুন ছিল। আমি এখন বুঝতে পারছি যে বাসটি নিজে নিজেই ভালো চলছে এবং আমি এমন বাসে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি।’
যাত্রীরা এই প্রযুক্তি নিয়ে উৎসাহী। তবে কারো কারো নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগও রয়েছে বিশেষ করে যদি ভবিষ্যতে কোনো সেফটি ড্রাইভার না থাকেন।
সেই পরিস্থিতি আসতে আরো অনেক সময় লাগবে। দক্ষিণ কোরিয়ার পুরোপুরি স্বাধীন, চালকবিহীন গাড়ি এখনো বৈধ নয়।
আপাতত যাত্রীরা স্বচালিত গাড়িটিতে বিনা খরচায় চড়তে পারেন। কিন্তু সোল অন্যান্য রাতের বাসের মতো এটিতেও একসময় ভাড়া যুক্ত করবে। পাশাপাশি এরকম আরো গাড়ি বিভিন্ন গন্তব্যে ছাড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
স্যুম ইন্কের হেড অব অপারেশন্স সেংউক পার্কে বলেন, ‘গণপরিবহনকে পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করতে পারে স্বচালিত রাতের বাস।’
সূত্র : ডয়চে ভেলে
আপনার মতামত লিখুন :