২০ লাখ টাকার তায়কোয়ানদো সিন্ডিকেট, দুর্নীতিবাজদের বিচার চায় দেশ!


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : মার্চ ২২, ২০২৫, ৯:২০ পূর্বাহ্ণ /
২০ লাখ টাকার তায়কোয়ানদো সিন্ডিকেট, দুর্নীতিবাজদের বিচার চায় দেশ!

সৃষ্টি তালহাঃ কক্সবাজারে হরিজন কলোনীতে বেড়ে ওঠা রণজিৎ দাস পিতা অন্ন দাস তরুণ বয়সে মায়ানমারে গিয়ে মার্শাল আর্ট শেখেন। এরপর ঢাকায় এসে রণজিৎ দাস বড় পদ পাওয়া সমস্যা হতে পারে বিবেচনায় নাম পাল্টিয়ে হয়ে যান মাহমুদুল ইসলাম রানা । যুক্ত হন কারাতে ফেডারেশনের সঙ্গে। কয়েক বছর পরেই অনিয়ম ও দূর্ণীতির দায়ে তাকে কারাতে ফেডারেশন থেকে বহিষ্কার করা হলে ১৯৯৫ সালে গড়ে ওঠা তায়কোয়ানদো অ্যাসোসিয়েশনে যোগ দেন।

দুই বছরের মাথায় ১৯৯৭ সালে সেই অ্যাসোসিয়েশন ফেডারেশনের স্বীকৃতি পেলে অপকৌশলে রানা হন তাঁর প্রথম সাধারণ সম্পাদক। অদ্যাবধি সেই পদেই আছেন তিনি। দীর্ঘ ২৭ বছর একটি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের চেয়ার ধরে রাখা রানাই একমাত্র উদাহরণ নন, ক্রীড়াঙ্গনে এমন আরো বেশ কয়েকজনই আছেন।

গত ৫ই আগস্ট এর পর বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ফেডারেশনের মূল দায়িত্ব অর্থাৎ সাধারণ সম্পাদকের পদে আছেন তাঁদের আর না রাখার নির্দেশনা পেয়েছিল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রানালয় এর নির্দেশায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সার্চ কমিটি। কিন্তু এরই মাঝে ২ই মার্চ বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে দুর্নীতির ভয়াল ছায়া দেখা মিলেছে। বাংলাদেশ তায়কোয়ানডো ফেডারেশনের (BTF) এডহক কমিটির সদস্য সচিব পদের দর হাঁকা হয়েছে ২০ লাখ টাকা। দীর্ঘ ২৭ বছর ক্ষমতায় থাকা বিতর্কিত সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল ইসলাম রানা নিজে পদ হারানোর আশঙ্কায় অনুগতদের দিয়ে এই পদ কেনার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে তায়কোয়ানদো ক্রীড়াপ্রেমীদের থেকে ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে। তারা বলছেন, ক্রীড়া ফেডারেশন নিয়ন্ত্রণে চলছে টাকার খেলা। কারাতে ফেডারেশনের এডহক কমিটির সদস্য সচিবের পদ ১২ লাখ টাকায় বিক্রির পর এবার তায়কোয়ানডোতে দর ২০ লাখ টাকা। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত রানার সিন্ডিকেট ক্রীড়া ফেডারেশনকে বানিয়েছে ব্যক্তিগত সম্পত্তি, ফেডারেশনের জিমনেসিয়াম বাদেও ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে রানার ব্যাক্তিগত ক্লাব যা থেকে রানার প্রতিমাসে আয় হয় ১০ লাখ টাকার ও বেশি।

সংবাদিকদের কাছে ক্রীড়াপ্রেমীরা অভিযোগ জানায়, রানা ভয়ভীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দমন করে ২৭ বছর ধরে একই চেয়ারে রয়েছেন । তিনি দেশের বিভিন্ন জেলার কোচকে নানান লোভ দেখিয়ে তাদের খেলোয়াড়দের আনসার ও বিজিবিতে খেলোয়াড় চুক্তিতে চাকরির নামের আড়ালে মোটা অংকের ঘুষ আদায় করে এবং পরবর্তীতে খেলোয়াড়দের বেতন হতে ৫০% টাকা জোর পূর্বক আদায় করে, বেতন হতে ৫০% টাকা আদায় না হলে ন্যাশনাল গেমস্সহ সকল খেলা থেকে তাকে বঞ্চিত করা হবে বলে রানা ভয় দেখান ।

বিদেশে খেলোয়াড় পাঠানোর নামে গোপনে চলে মানব পাচার যার জলজন্ত প্রমান ইউএস ওপেন তায়কোয়ানদো চ্যাম্পিয়নশিপ এ উজ্জল কুমার দেব আমেরিকায় খেলতে গিয়ে থেকে যান। এছাড়াও মিরপুর ডিওএইচএস তায়কোয়ানডো দোজাংয়ে নারী ও মদের আসর বসিয়ে প্রতি সপ্তাহেই চলে রমরমা পার্টি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন তায়কোয়ানদো কোচ জানাই, এই দুর্নীতির হোতা- মাহমুদুল ইসলাম রানা- বিতর্কিত সাধারণ সম্পাদক, মোসলেম মিয়া- নির্বাহী কমিটির সদস্য, পলাশ মিয়া- নির্বাহী কমিটির সদস্য খন্দকার রেজা,নুরুল ইসলাম, নবাব, ইমরান, বাবুল হোসেন রানার দুর্নীতির সহযোগী ও সিন্ডিকেট সদস্য। দেশের ক্রীড়াঙ্গন রক্ষায় এখনই আমাদের সোচ্চার হতে হবে। খেলাধুলার মর্যাদা রক্ষা করতে, তায়কোয়ানডো ফেডারেশন সহ অন্যান্য ফেডারেশন থেকে দুর্নীতিবাজদের আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হোক – এই দাবি জানাচ্ছে দেশের ক্রীড়া সংশ্লিষ্টরা।