অবশেষে সাড়ে তিন ঘণ্টায় খুলনা থেকে ঢাকায় ট্রেন যাত্রার সূচি চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে পদ্মা সেতু রেল লিংকের নতুন এ রুটে যাত্রা শুরু হবে। একই দিন ঢাকা থেকে বেনাপোল রুটেও শুরু হবে ট্রেন চলাচল।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কার্যালয় থেকে উপপরিচালক মো. খায়রুল কবির স্বাক্ষরিত চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের ব্যবস্থাপক মো. মামুনুল ইসলাম।
বাসের পর এবার ট্রেনে করেও মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টায় খুলনা থেকে ঢাকায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুত পুরো রেল লাইন। পদ্মা রেললিংকের দ্বিতীয় ফেজের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরুর আগে গত নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে যাত্রীবাহী ট্রেন নিয়ে হয়ে গেলো ট্রায়াল রান। বাণিজ্যিক যাত্রা শুরুর আগে সফলভাবেই সম্পন্ন হয়েছে নতুন রুটের পরীক্ষামূলক রেল চলাচল। এবার এলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
প্রতিদিন একবার একটি ট্রেন খুলনা থেকে ঢাকা, ঢাকা থেকে বেনাপোল, বেনাপোল থেকে ফের ঢাকা এবং ঢাকা থেকে বিকেলে খুলনায় ফিরবে।সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২৪ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন খুলনা থেকে যশোরের সিঙ্গিয়া, নড়াইল, মধুমতি সেতু, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি, ভাঙা হয়ে ঢাকায় যাবে ট্রেনটি। ঢাকা থেকে ফিরতি ট্রেনটি যশোর হয়ে যাবে বেনাপোল। বেনাপোল থেকে একই রুটে ঢাকায় ফিরবে ট্রেনটি। বিকেলে আবার ঢাকা থেকে নড়াইলের একই রুট ধরে ফিরবে খুলনায়।
এতে ৩৭৬ কিলোমিটার থেকে পথ কমে আসবে ২০৮ কিলোমিটার। আর খুলনা থেকে ঢাকায় যেতে সময় লাগবে সাড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা। নতুন এ রুটে খুলনা-ঢাকা ট্রেনটির নামকরণ করা হয়েছে ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’ আর ঢাকা-খুলনা রুটের ট্রেনটির নামকরণ করা হয়েছে ‘রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস’। সপ্তাহে সোমবার বন্ধ থাকবে ট্রেনটি।
এ বিষয়ে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের ব্যবস্থাপক মো. মামুনুল হক বলেন, প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর থেকেই আমাদের প্রস্তুতি ছিল। কিছু জটিলতা ছিল, সেগুলো দূর হয়েছে। নতুন রুটটি খুলনা থেকে যাত্রা শুরু করে যশোরের সিঙ্গিয়া থেকে নড়াইল হয়ে মধুমতি সেতু পার হয়ে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি, সেখান থেকে ফরিদপুরের ভাঙা হয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ঢাকায় যাবে।
ট্রেনটি পরবর্তীতে ঢাকা থেকে যশোর হয়ে বেনাপোলে যাবে। একইভাবে বেনাপোল থেকে ঢাকা ও বিকেলে ঢাকা থেকে খুলনায় ফিরবে। খুলনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত এবং বেনাপোল থেকে ঢাকায় পৌঁছাতে সময় লাগেবে সাড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা। সুন্দরবন এক্সপ্রেসে যেখানে ৩৭৬ কিলোমিটার দূরত্ব ছিল, সেখানে নতুন এ রুটের দূরত্ব হবে ২০৮ কিলোমিটার।
এ রুটে নতুন যাত্রীবাহী ট্রেন চললেও আগের কোনো ট্রেনের রুটের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। এ বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চলের ব্যবস্থাপক বলেন, ‘আমাদের সারাদেশেই রেল চালানোর চাহিদা আছে। এ কারণে সুন্দরবন ও চিত্রা এক্সপ্রেস আগে যেভাবে ঢাকায় যেতো সেভাবেই আগের মতো ট্রেন দুটি ঢাকায় যাতায়াত করবে।
আর নতুন এ রুটে ট্রেন চালানোর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন খুলনা রেল স্টেশন কর্তৃপক্ষেরও।’
খুলনা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মাসুদ রানা বলেন, ‘আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে নতুন রুটে ট্রেন চলবে বলে আমরা জানতে পেরেছি। যাত্রীদের মধ্যে নতুন এই ট্রেন নিয়ে অনেক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে লোকবল নিয়োগ ও অন্যান্য পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলো সম্পন্ন করা হয়েছে।’
আপনার মতামত লিখুন :