৩০০ বছরের সূর্যমুখী আম গাছটির কদর  


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জুন ৩০, ২০২৫, ৯:০৭ পূর্বাহ্ণ /
৩০০ বছরের সূর্যমুখী আম গাছটির কদর    

বট গাছের মতো বিশাল আকৃতি হলেও গাছটি আসলে বট গাছ নয়, এটি একটি আম গাছ। ৩০০ বছরের আম গাছটি ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারী সীমান্তে মন্ডুমালা গ্রামে প্রকৃতির আপন খেয়ালে বেড়ে উঠে আজও ইতিহাস হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শুধু ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের কাছে নয়, এ গাছটি এখন বিস্ময় হয়ে দাঁড়িয়েছে গোটা দেশে। গাছটির ছড়িয়ে যাওয়া ডালপালা আর থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা আম দেখে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এ গাছটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ মৌসুমে পর্যাপ্ত পরিমাণে আমের ফলন হওয়ায় গাছটির সৌন্দর্য আরও বেড়ে গেছে। প্রায় ৭৩ শতক জমিজুড়ে বিস্তৃত এ গাছটি থেকে এবার ১৫০ মণ আমের ফলন হয়েছে বলে জানান গাছের মালিক। গাছটির মালিক স্থানীয় বাসিন্দা দুই ভাই সাইদুর রহমান ও নূর ইসলাম। তাদের অনুমান প্রায় ৩০০ বছর হবে গাছটির বয়স। জানা যায়, গাছটির উচ্চতা ৮০ থেকে ৯০ ফুট। এটির অদ্ভুত দিক হলো ডালগুলো। মূল কাণ্ড থেকে ডাল বেরিয়ে একটু ওপরে উঠে আবারও তা মাঠিতে নেমে গেছে, তারপর আবারও ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওপরে উঠেছে। দেখতে অনেকটা নদীর ঢেউয়ের মতো উঁচু-নিচু। মূল কাণ্ড থেকে বেরিয়েছে ২০টির মতো শাখা। গাছটির শাখাগুলোর দৈর্ঘ্য ৪০ থেকে ৫০ ফুটের মতো। গাছের প্রতিটি ডালে চাইলে অনায়াসে হাঁটাচলা করা ও বসা যায়। এদিকে দৃষ্টিনন্দন আম গাছটি দেখতে দর্শনার্থীরা দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন। তবে গাছটি কাছ থেকে দেখতে সংগ্রহ করতে হয় টিকিট। যার মূল্য ২০ টাকা। লালমনিরহাট থেকে বেড়াতে আসা হুমাইয়ুন, ফরিদ ও জব্বার বলেন, বিচিত্র এ গাছ সম্পর্কে অনেক গল্প শুনেছি।

গাছ টিভিতেও দেখেছি, তবে কখনো সরাসরি দেখিনি। এবার এখানে এসে গল্পের সত্যতা পেয়ে বেশ ভালো লাগছে। এখানে এসে শতবর্ষী এই গাছের আমও খেলাম। আমটি বেশ সুস্বাদু। সাক্ষী হিসেবে গাছের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছি।

গাছটির মালিক সাইদুর রহমান জানান, ২০২৩ সালে তিনি প্রায় ২ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছিলেন এ গাছ থেকে। গত বছর আমের ফলন কম হয়েছিল। তবু লাখ টাকার আম বিক্রি হয়। তবে এবার প্রচুর আম ধরেছে, আশা করছেন আগের চেয়ে বেশি টাকার আম বিক্রি করতে পারবেন। এখনই সব আম পাড়বেন না। গাছ পাকা আম বিক্রি করছেন।

প্রতিদিন গড়ে ৩০ কেজির ওপর আম বিক্রি হচ্ছে এখান থেকে। এবারে ১৫০ মণের মতো আমের ফলন হয়েছে। খ্যাতির কারণে গাছের আমের কদর একটু বেশি। ব্যতিক্রমী গাছের সুস্বাদু আম পেতে আগ্রহী অনেকেই। অন্যান্য আম যেখানে বিক্রি হয় প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, এ গাছের আমের কেজি ১০০ টাকা। বেশি দাম হলেও আমের স্বাদ পেতে দর্শনার্থীদের আগ্রহের কোনো কমতি নেই।

ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, সূর্যপুরী একটি জনপ্রিয় আমের জাত। আমটি কেবল ঠাকুরগাঁওয়েই ভালো হয়। এ কারণে জেলার পরিচিতি তুলে ধরতে সূর্যপুরী আমকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।