দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের পাঠ্যবইয়ে ইসলামি বিষয়বস্তু বাদ দিয়ে সেখানে হিন্দুত্ববাদি বিষয়বস্তু ঢোকানো হয়েছে- ময়মনসিংহ-৮ আসনের সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের এমন একটি বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সংসদ সদস্যের ওই বক্তব্যকে সমর্থন করে অনেকেই এটি শেয়ার করে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে কথা বলতে গিয়ে তিনি এ বিষয়টি উত্থাপন করেন। তার এই বক্তব্য মুহুর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তার সাথে একাত্মতা শোষণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমালোচনায় ফেটে পড়েন নেটিজেনরা।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত কিছু কনটেন্টের বিষয়ে ব্যাপক সমালোচনা করে সংসদ অধিবেশনে ফখরুল ইমাম বলেন, বর্তমানে যে শিক্ষাব্যবস্থা প্রাইমারিতে আছে সেখানে ‘সবাই মিলে কাজ করি’ শিরোনামে মহানবীর সংক্ষিপ্ত জীবনী ছিল সেটা বাদ দিয়েছে।
তৃতীয় শ্রেণিতে খলিফা হযরত আবু বকর শিরোনামে একটা সংক্ষিপ্ত জীবনী সেটা বাদ দিয়েছে। চতুর্থ শ্রেণিতে হযরত ওমর শিরোনামে একটা সংক্ষিপ্ত জীবনী বাদ দেওয়া হয়েছে। পঞ্চম শ্রেণিতে একটা বিদায় হজ নামে নবীজির জীবনী ছিল সেটা বাদ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া পঞ্চম শ্রেণিতে ‘বই’ নামে একটা কবিতা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যেটা ধর্মীয়গ্রন্থ কোরআন বিরোধী কবিতা। এছাড়া ষষ্ঠ শ্রেণিতে ‘লাল গরু’ নামে একটি ছোট গল্প আনা হয়েছে যেখানে মুসলিম শিক্ষার্থীকে শেখানো হচ্ছে গরু হচ্ছে মায়ের মতো, তাই জবাই করা ঠিক নয়। অর্থাৎ হিন্দুত্ববাদ।
তিনি বলেন, সপ্তম শ্রেণিতে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘লালু’ নামক একটা গল্প অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যাতে শেখানো হচ্ছে হিন্দুদের কালী পুজা ও পাঠা বলীর কাহিনী। এগুলো কীসের আলামত? আমরা সবাই একসঙ্গে থাকতে চাই। একটা সংস্কৃতি বাদ দিয়ে অন্য একটা সংস্কৃতি গুরুত্ব দিবেন সেটা কিন্তু শিক্ষামন্ত্রণালয়কে দেখতে হবে।
সংসদ সদস্যকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফেসবুকে রাসেল শেখ নামে একজন পাঠক লিখেছেন, ‘‘মাননীয় সংসদ সদস্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সময়োপযোগী সাজেশন দেওয়ার জন্য।
এরাতো সংসদকে জলসা ঘর বানিয়ে রেখেছে যাতে এসব কিছু মানুষ ভুলে যায়, মানুষের চিন্তা ধারা গুলো অন্যদিকে ঘুরে থাকে, কিন্তু আপনি সত্যটা তুলে ধরেছেন সাহসীকতার সাথে অতি সাবলীল ভাবে! আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা আপনাকে নেক হায়াত দান করুন। প্রত্যেক ক্লাসের ইসলামিক পাঠ্যবই পুস্তকে রাসূলুল্লাহ সাঃ ও তার সাহাবীদের জীবনী অন্তর্ভুক্ত করা হোক।’’
পাঠ্যবইয়ে পরিবর্তনের প্রতিবাদ জানিয়ে সালমান অনিক লিখেছেন, ‘‘মহানবী(সঃ), চার খলিফার মত চরিত্র এই দুনিয়ায় আর কাদের আছে? তাদের মহানুভবতা, উদারতা, শাসনব্যবস্থা, সহনশীলতা, মানবিকতা, সৃজনশীলতা আধুনিকতা…….. এগুলো উন্নত বিশ্ব গবেষণা করে, আর আমরা হতভাগ্যরা এগুলো পরিবর্তন করি।
এই জন্যেইতো নতুন প্রজন্মের এই অবস্থা অস্থিরতা, মূল্যবোধের অবক্ষয়। আসুন এখনো সময় আছে পূর্বের পাঠ্যে ফিরে যায়। এর ভিতর আমাদের কল্যাণ নিহিত।’’
মেহতাজ আহসান লিখেছেন, ‘‘এই বিষয়গুলো সরাসরি প্রমাণ করে দেয় দেশে হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। যাতে তাদের নৈতিক এবং এবং আত্মিকভাবে দুর্বল করে দিয়ে দেশের জনগণকে শোষণ করা যায়। ইসলামিক মূল্যবোধের শিক্ষিত একটি জাতিকে কোনোভাবে দমন করা সম্ভব নয়। তাই হিন্দুত্ববাদী শিক্ষা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’’
আপনার মতামত লিখুন :