শীত চলে গেছে। এখন চলছে গ্রীষ্মকাল। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে গ্রীষ্মের তীব্রতা। আর এতেই নাজেহাল শিশু থেকে বয়স্করা। অফিসে এসি থাকলেও বাসায় সবার এসি থাকে না। আবার বাসায় এসি থাকলেও বাসা থেকে বের হলেই অসহ্য লাগে তাপমাত্রা। এ পরিস্থিতিতে তাপমাত্রা সহনীয় করতে খাদ্যতালিকায় নজর দেয়া উচিত।
প্রচণ্ড গরমে শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য অনেকেই ভাত খেয়ে থাকেন। আবার অনেকেই ভাতের বিকল্প হিসেবে বেছে নেন রুটি। এতে এক পক্ষের দাবি, ভাতে শরীর ঠান্ডা থাকে। আবার বিপরীতে আরেক পক্ষ শরীর ঠান্ডা ও শীতল রাখতে রুটির পক্ষে যুক্তি দেখান। এ নিয়ে নানা তর্ক-বিতর্ক রয়েছে। তবে গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে ভাত ভালো, না রুটি―এ ব্যাপারে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ শর্মিষ্ঠা রায় দত্ত।
ভাতের গুণাগুণ: ভাত হচ্ছে কার্ব রিচ খাবার। এতে ভিটামিন বি, ম্যাঙ্গানিজ ও আয়রন রয়েছে প্রচুর। প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেশিয়াম থাকায় হাড়, নার্ভ ও পেশির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুবই উপকারী ভাত। আবার কার্বজাতীয় খাবার অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কাজ করে। এ জন্য সুস্থ থাকতে সব ঋতুতেই ভাত খেতে পারেন।
রুটিও কম নয়: ফাইবারের ভাণ্ডার রুটি অনেকেরই প্রিয় খাবার। যা কোলানের হাল ফেরানোর কাজে দারুণ কার্যকরী। এমনকী এই উপাদান আপনার ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সহায়ক। আবার রুটি খেলে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল থেকে শুরু করে নানা ক্রনিক রোগকে কন্ট্রোল করতে পারবেন। এ জন্য বিশেষজ্ঞরা সবাইকে নিয়মিত রুটি খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
শরীর ঠান্ডা রাখতে ভাত না রুটি, কোনটি খাবেন: পুষ্টিবিদ শর্মিষ্ঠা বলেন, কথাতেই রয়েছে ‘শীতে রুটি, গরমে ভাত।’ এর পেছনে যুক্তিও রয়েছে। রুটির থেকে ভাতে অধিক পরিমাণে জলীয় অংশ রয়েছে। এ জন্য গ্রীষ্মে ভাত খেলে ঠান্ডা থাকে শরীর। বিপরীতে যদি রুটি খাওয়া হয়, তাহলে পানি পিপাসা পায়। এ জন্য গ্রীষ্মে ডায়েটে ভাত রাখা ভালো।
রুটিতেও ক্ষতি নেই: কেউ যদি ডায়াবেটিসের মতো রোগ বা নিজের পছন্দের কারণেই ভাতের পরিবর্তে রুটি খান, তাহলে সমস্যা নেই। নির্দ্বিধায় একবেলা রুটি খেতে পারেন। তবে রুটি খাওয়ার পর অবশ্যই দুই গ্লাস পরিমাণ পানি পান করা উচিত। তা না হলে পানিশূন্যতার ঘাটতি থেকে যাবে। এ কারণে গ্রীষ্মে রুটি খাওয়া এড়িয়ে চলতে পারেন।
পান্তা ভাতই সেরা: গ্রীষ্মের সময় গরম ভাত খাওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত পান্তা ভাতও খেতে পারেন। কেননা, পান্তা ভাত ফার্মেন্টেড প্রসেসে তৈরি থাকে। এ জন্য ভাত খেলে শরীরে নানা ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে। যা অন্ত্রের হাল ফেরায়। আর অন্ত্রের হাল ফিরলে সহজেই খাবার হজম হয়। এ জন্য সুস্থ থাকতে পান্তা ভাতও খেতে পারেন।
আপনার মতামত লিখুন :