১২ অক্টোবর, পারসটুডে: হিব্রু-ভাষার একটি মিডিয়া এক বিশ্লেষণে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সঙ্গে ইসরাইলের বিরোধের পরিণতি এবং তেল আবিবের কেন তেহরানের সঙ্গে বড় ধরনের সংঘাত এড়িয়ে চলা উচিত তা নিয়ে আলোচনা করেছে। ইহুদি বিশেষজ্ঞ ইতালি ল্যান্ডসবার্গ ইহুদিবাদী ইসরাইলের জামান নিউজ ওয়েবসাইটে এক নিবন্ধে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর নেতাদের ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার দিকে মনোযোগ দিতে এবং পরাজয়ের মুখোমুখি না হয়ে সংযমের পথ বেছে নেওয়ার জন্য এবং ইরানের সঙ্গে সংঘাত এড়াতে পরোক্ষভাবে সতর্ক করেছেন।
নূর নিউজের উদ্ধৃতি দিয়ে পার্সটুডের রিপোর্ট অনুসারে ল্যান্ডসবার্গ তার নিব্ন্ধে ৬টি কারণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন কেন ইসরাইল ইরানের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানো উচিত হবে না। এখানে তার নিবন্ধের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ তুলে ধরা হল।
১. ইসরাইল এবং ইরানের মধ্যে ব্যালিস্টিক যুদ্ধ একটি অসম যুদ্ধ। ইরান একটি আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে তার জনশক্তি, অস্ত্র, জ্বালানি মজুদ এবং অর্থনৈতিক সুবিধা ইত্যাদিতে পরিপূর্ণ হয়ে একটি শক্ত অবস্থানে রয়েছে এবং অন্যদিকে ইসরাইল সামরিক কাঠামোগতভাবে এবং জনসংখ্যায় এর সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
২. ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধের সক্ষমতা ইসরাইলের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ক্রমাগতভাবে দুর্বল অবস্থানের দিকে নিয়ে যাবে।
৩. ইরানে মাতৃভূমিকে রক্ষা এবং এর জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করার ক্ষেত্রে কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। ইরাকের বিরুদ্ধে ৮ বছরের যুদ্ধে ইরান হাজার হাজার জীবন উৎসর্গ করেছিল কিন্তু তারা আত্মসমর্পণ করেনি। যদিও ইসরাইলএমন কোনো বিশ্ব শক্তি না যে তারা ইরানের উপর একই ধরনের পরিস্থিতি চাপিয়ে দিতে পারবে।
৪. ইরান তার পারমাণবিক উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছে এবং ইসরাইল এটি ঠেকাতে পারবে না, কারণ ইরানের পারমাণবিক শক্তি ধ্বংস করার জন্য প্রয়োজনীয় সক্ষমতা তাদের নেই।
৫. ইসরাইলী বিমান বাহিনী বর্তমানে একটি বহুমুখী যুদ্ধে জড়িত। ইরানে আক্রমণ করার জন্য এই বাহিনীর ঘনত্ব তার যোদ্ধাদের শক্তি হ্রাস করতে পারে এবং ইসরাইলি যোদ্ধাদের গুলী করে মারার এবং এর পাইলটদের বন্দী করার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
৬. পরিশেষে অত্যন্ত সংযম প্রদর্শনের মাধ্যমে ইসরাইলকে যুদ্ধ ছাড়া অন্য সমাধানগুলোর বিষয়ে সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করা উচিত যা অতীতে ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যার মাধ্যমে ব্যবহার করেছিল। লেখক তারপরে উপসংহারে বলেছেন, যদি এই কারণগুলো ইসরাইলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য যথেষ্ট না হয় তবে আমাদের তাদের সতর্ক করা উচিত যে ইসরাইলের আক্রমণ অবশ্যই একটি আঞ্চলিক হুমকি তৈরি করবে এবং তারপরে আমাদের ইরাক ও সিরিয়ায় শক্তি ব্যবহার করার বিষয়ে চিন্তা করা উচিত। সম্ভবত ইয়েমেন যে সারা বিশ্বে ইসরাইলী দূতাবাসগুলোকে আক্রমণের মুখে ফেলেছে সেটাও বিবেচনা করতে হবে।
তিনি এরপর যোগ করেছেন, সেনাবাহিনীর শক্তির ৭৫ ভাগ রিজার্ভ বাহিনী দ্বারা গঠিত, যে বাহিনীগুলো এক বছরের যুদ্ধে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে এবং ইরানকে যুদ্ধে জড়ালে লেবানন এবং গাজা যুদ্ধ আরো কয়েক বছর ধরে দীর্ঘাংয়িত হতে পারে এবং অর্থ হচ্ছে সৈন্যদের মধ্যে এক পর্যায়ে ক্লান্তি ও অবসাদ ঢুকে পড়া। যারা বোঝেন না তাদের জন্য বলা উচিত যে এটি ইসরাইলকে সামরিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরাজয়ের দিকে নিয়ে যাবে যেখানে ইরানের এই ধরনের পরিস্থিতি নেই। ইসরাইলী মন্ত্রিসভা ইসরাইলীদের জন্য একমাত্র যে কাজ করতে পারে তা হল কিছুই না করা এবং ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকা।
আপনার মতামত লিখুন :