অভিনেতা ধীরাজের বাড়ীটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে নেওয়া অতীব জরুরী!


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : অক্টোবর ১৫, ২০২৪, ১:১৮ অপরাহ্ণ /
অভিনেতা ধীরাজের বাড়ীটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে নেওয়া অতীব জরুরী!

সাবা প্রতিবেদকঃ যশোর কেশবপুর উপজেলার পাঁজিয়ায় প্রখ্যাত অভিনেতা ও সাহিত্যিক ধীরাজ ভট্টাচার্যের বাড়িটির অবস্থা খুব করুণ। একটি পরিবার দেখলাম পেছনের কিছু জায়গা দখল করে বসবাস করছে। তারা আবার ধীরাজ ভট্টাচার্যকে চেনেন না। শুনেছেন পরিত্যক্ত ‘বাড়িটি কোন এক হিন্দুর’, যারা জমি জায়গা বিক্রি করে ভারতে চলে গেছেন বহু আগে।

অভিনেতার বাড়িটি এখন আর রাস্তা থেকে দেখলে বোঝাই যায়না। এর একপাশে সামনের রাস্তার পাশে নির্মিত হয়েছে অট্টালিকা, চত্ত্বরে বিচালি, খড়ির স্তুপ, গাছগাছালি বাড়িটিকে প্রায় আড়াল করে ফেলেছে। প্রত্নতাত্ত্বিক কোনো নির্দেশনাও চোখে পড়েনা। তাই মানুষের কাছেই শুনতে হয়। হয়ত অযত্নে অবহেলায় একদিন কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে অভিনেতা ও সাহিত্যিক ধীরাজ ভট্টাচার্যের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক এই বাড়িটি।

১৯০৫ সালের ৫ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন ধীরাজ ভট্টাচার্য। পিতা ছিলেন শিক্ষক ললিতমোহন ভট্টাচার্য। পাঁজিয়া স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে ভর্তি হন কোলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশনে। সেখান থেকে১৯২৩ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে আশুতোষ কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু সিনেমার প্রতি প্রবল আগ্রহের কারণে তিনি পড়ালেখা বন্ধ করেন।

১৯২৪ সালে একটি নির্বাক চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে অভিনয় জীবন শুরু করেন তিনি। পরে পরিবারের চাপে পুলিশে চাকরি নেন, যুক্ত হন কোলকাতা ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চে। সেখান থেকে বার্মায় বদলি হন। কিন্তু একসময় চাকরি ছেড়ে চলে আসেন। ফের পুলিশের অফিসার হিসেবে যোগদান করেন কক্সবাজারের টেকনাফে।

সেখান থেকে কোলকাতায় ফিরে পরিচালক মধুবাবুর মাধ্যমে আবার সিনেমার জগতে প্রবেশ করেন। অভিনয় করতে থাকেন একের পর এক নির্বাক ও সবাক চলচ্চিত্রে। তাঁর সাড়া জাগানো চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে মরণের পরে, হানাবাড়ি, রাত একটা, ডাকিনলার চর ও ধূমকেতু। নিজের অভিনয় দক্ষতা দিয়ে ধীরাজ ভট্টাচার্য কালজয়ী অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

এছাড়া, তিনি একজন সু-সাহিত্যিক হিসেবেও সুনাম অর্জন করেছেন। তার বিখ্যাত দুটি উপন্যাস ‘যখন আমি পুলিশ ছিলাম; এবং ‘যখন আমি নায়ক ছিলাম’। ১৯৫৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন ধীরাজ ভট্টাচার্য। কালের প্রবাহে আজ সবই হারিয়ে যেতে বসেছে । তাই আজ তার এই বাড়ীটিকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে নেওয়া অতীব জরুরী বলে মনে করেন কেশবপুরবাসী।