কলকাতা প্রতিনিধি।
বাংলাদেশের বেআইনি অভিবাসীদের ভারতের বিভিন্ন কারাগারে ও ডিটেনশন সেন্টারে কেন বছরের পর বছর ধরে আটকে রাখা হয়েছে ,সরকারের কাছে তার জবাব চেয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। আর এই আটক বাংলাদেশিদের একটা বড় অংশ পশ্চিমবঙ্গে রয়েছেন, তাই এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কী করণীয়, তা-ও জানাতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবন আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্র এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট রিপোর্ট অথবা হলফনামা পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আবার মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের অন্য একটি বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকার এবং আসাম সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, আসামের ট্রানজিট শিবিরে আটকে থাকা ৬৩ জন বিদেশি নাগরিক কোন দেশের তা চিহ্নিত করে দুই সপ্তাহের মধ্যে সে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে বলে বিচারপতি এ এস ওক এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়া নির্দেশ দিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের কারাগারগুলোতে এমনিতেই উপচে পড়া ভিড়। এর মধ্যে প্রায় প্রতিদিন নতুন নতুন বাংলাদেশি বন্দী যুক্ত হওয়ায় কারাগারগুলোতে স্থান সঙ্কুলানের সমস্যাও দেখা দিয়েছে।পশ্চিমবঙ্গের কারা দফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১ লা জানুয়ারির হিসাব অনুযায়ী সব মিলিয়ে ২৫০১ জন বিদেশি বন্দি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের কারাগারগুলোতে।
তার মধ্যে ১৪২২ জন বিচারাধীন বাংলাদেশি বন্দি ও ৭৭৭ জন সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশি বন্দি। শুধু তাই নয়, সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ১৭৯ জন বন্দি হিসাবে রয়েছেন। কীভাবে বছরের পর বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের কারাগারগুলোতে বাংলাদেশি বন্দিরা আটক রয়েছেন তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
আদালত জানিয়েছে, ফরেনার্স অ্যাক্টে সাজা হয়ে যাওয়ার পরে নাগরিকত্ব নির্ণয়ের বিষয়টি অমিমাংসিত বলার সুযোগ নেই। ফরেনার্স অ্যাক্টে সাজার মেয়াদ নির্দিষ্ট করা রয়েছে। অর্থাৎ এই সাজার মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। অন্যদিকে ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ২০০৯ সালের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে সন্দেহভাজন বাংলাদেশিদের নাগরিকত্ব নিয়ে নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হবে ৩০ দিনের মধ্যে।
আদালতের বিচারপতিরা প্রশ্ন তুলেছেন,নির্দিষ্ট নির্দেশনামা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশি নাগরিকরা পশ্চিমবঙ্গে কারাগারে বন্দি থাকতে পারেন। সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও যেভাবে জানখালাস উল্লেখ করে পশ্চিমবঙ্গের কারাগারে বাংলাদেশি বন্দিদের রাখা হয় তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট একাধিক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করেছে। এই বন্দিদের নিয়ে কোন সরকারের কী ধরনের ভূমিকা, এমন ধরনের বন্দির প্রকৃত সংখ্যা কত, কোন সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে তা বিস্তারিত জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
আপনার মতামত লিখুন :