অন্তর্বর্তী সরকার আইনি দলিল ও জনগণের অভিপ্রায়ে গঠিত-হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ

নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত ও বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছা এবং অভিপ্রায় অনুযায়ী গঠিত- পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিট খারিজের পূর্ণাঙ্গ আদেশে গতকাল বুধবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব এবং বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর ডিভিশন বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ দেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বিষয়ে প্রেসিডেন্ট সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চান। সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের মতামতের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এরপর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা শপথ নেন।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঠানো রেফারেন্স ও মতামতের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ। শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব এবং বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর ডিভিশন বেঞ্চ গত ১৩ জানুয়ারি রিটটি সরাসরি খারিজ করে আদেশ দেন। রিট খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া পূর্ণাঙ্গ আদেশ গতকাল প্রকাশিত হয়।

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ আদেশে বলা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কোনো আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত নয় বলে রিট আবেদনকারীর (অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ) বক্তব্যে এসেছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ও এক অনন্য পরিস্থিতিতে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উপদেষ্টামূলক মতামত গ্রহণ করেন। মতামত অনুযায়ী কাজ করেছেন। তাই এটি একটি আইনি দলিল দ্বারা সমর্থিত, বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার দ্বারা সমর্থিত।

আদেশে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, সেটি আমাদের ইতিহাসের অংশ। আশা করি আগামী বহু বছর ধরে জনগণ যতেœ থাকবে। ওই রেফারেন্স চ্যালেঞ্জ করে করা রিটটি ভ্রান্ত ধারণা, বিদ্বেষপ্রসূত ও হয়রানিমূলক বলে উল্লেখ করে সরাসরি খারিজ করা হয়।

সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে সুপ্রিম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ারের বিষয়ে বলা আছে। অনুচ্ছেদটি বলছে, যদি কোনো সময়ে প্রেসিডেন্টের নিকট প্রতীয়মান হয়, আইনের এরূপ কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে বা উত্থাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা এমন ধরনের ও এমন জনগুরুত্ব সম্পন্ন যে সেই সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ করা প্রয়োজন, তাহলে তিনি (প্রেসিডেন্ট) প্রশ্নটি আপিল বিভাগের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করতে পারবেন। ওই বিভাগ স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত শুনানির পর প্রশ্নটি সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট স্বীয় মতামত জ্ঞাপন করতে পারবেন।