পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পে অনিয়মের মাধ্যমে প্লট বরাদ্দের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং তাদের পরিবারের সদস্যসহ মোট ২৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদকের অনুমোদনের পর সোমবার (১০ মার্চ) এই চার্জশিট আদালতে দাখিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর আগে গত ১২, ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি অভিযোগগুলোর ভিত্তিতে মামলাগুলো দায়ের করা হয়। চার্জশিটে নতুন করে সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিনের নাম যুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে তার পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনদের জন্য পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের কূটনৈতিক জোনে ৬০ কাঠা জমি বরাদ্দ নেন, যা আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য ছিল না।
চার্জশিটে উল্লেখিত আসামিদের মধ্যে আছেন শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা এবং শেখ রেহানার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক। এছাড়া, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৪ জন সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের নামও চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বরেই দুদক হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত অনিয়মসহ বিদেশে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগেই, তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান চলছিল।
দেড় দশক ক্ষমতায় থাকার পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :