

ব্যাংকের লকার ভেঙে প্রায় হাজার ভরি স্বর্ণ জব্দ করায় চরম খেপলো ভারত-পলাতক। লুটপাটের অর্থে কেনা বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ হারিয়ে চরম মায়াকান্না করা কিন্তু হাজারো ছাত্রজনতা গণহত্যার ঘটনায় কোনো অনুশোচনা প্রকাশ না করায় ইতিহাসের বর্বর এই গণহত্যাকারীকে ধিক্কার জানিয়েছেন নেটিজেনরা। অন্যদিকে, নিষেধাজ্ঞা সত্বেও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের (আইসিটি) ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত একজন আসামির বক্তব্য প্রচার করায় সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ জানিয়েছেন অনেকে।
আদালতের অনুমতিতে গত মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাতে মানবতাবিরোধী হাসিনার নামে অগ্রণী ব্যাংকে থাকা দুটি লকার ভেঙে ৮৩২.৫১ ভরি স্বর্ণালংকার জব্দ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)। ব্যাংকের প্রধান শাখায় ভল্ট দুটি ভাঙার পর পাওয়া বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার জব্দ করা হয়। এছাড়া অঢেল বিদেশি উপহার সামগ্রীও পাওয়া যায়, যা সরকারি তোষাখানায় জমা দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়নি দিল্লির দাসী হাসিনা।
বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার জব্দের পর সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত একটি অডিও ক্লিপে ক্ষমতা থেকে উৎখাত হওয়া হাসিনাকে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। নিজের অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে ভারতের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং দেশের জনগণকে গুমখুন করা কোনো ব্যাপারই ছিল না তার কাছে। পাহাড় পরিমাণ সম্পদ থেকে মাত্র ৮৩২ ভরি স্বর্ণ জব্ধ হওয়ায় সারাজীবন ‘স্বজন হারানোর বেদনার নাটক’ করে রাজনীতি করা আওয়ামী প্রধান যেভাবে ক্ষিপ্ত হয়েছেন তাতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন দেশপ্রেমিক জনতা।
যদিও কে বা কারা এই অডিওটি ভাইরাল করেছে তা জানা যায়নি। তবে এতে স্বর্ণ হারিয়ে ব্যাপক ব্যথিত ও ক্ষিপ্ত বলে মনে হয় জনগণকে শত্রু বানিয়ে দেশ শাসন করা হাসিনাকে। এই জব্দের ঘটনায় সে সরাসরি ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে। লকার ভাঙার বৈধতা নিয়েও হাস্যকর প্রশ্ন তোলে জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এই সাবেক স্বৈরাচার, কারণ সে জীবিত আছে এবং চাবি রয়েছে তার কাছে।
অডিওতে হাসিনা স্বীকার করে, লকারে স্বর্ণ ছিল, কিন্তু তা সম্পূর্ণ পারিবারিক সম্পদ। তার দাবি, এটি তার দাদি, নানি, মা, ভাই কামাল ও জামালের স্ত্রী এবং পুতুলের (আত্মীয়) গহনা। লকারে রাখা স্বর্ণ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে জমা রাখা হয়েছে—এই অভিযোগকে সে চ্যালেঞ্জ করে। ‘চোরের মার বড় গলা’য় সে দাবি করে, ১৯৯৬ সালে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে সে কোনোদিন অগ্রণী ব্যাংকে যায়নি বা লকার খোলেনি।
জনশ্রুতি আছে, ফ্যাসিস্ট হাসিনা অভ্যুত্থানের মুখে পালানোর তিন দিন আগেই নেতাকর্মীদের জনরোষের মধ্যে রেখে নিজের আত্মীয়স্বজনকে নিরাপদে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়। তাদের সাথে পাচার করে নিয়ে যাওয়া হয় বিপুল পরিমাণ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার। এমনকি হাসিনা দিল্লি পালানোর দিনও নিজের হেলিকপ্টার ভর্তি করে অর্থসম্পদ নিয়ে গেছে বলে জানা যায়। তবে কোনো কারণে জব্দ করা ওই স্বর্ণ ফেলে যায় বিতাড়িত এই স্বৈরাচার।
এদিকে, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত আওয়ামী লীগ সভাপতি হাসিনার বক্তব্য ও বিবৃতি প্রচার না করতে গণমাধ্যমকে নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া স্বত্বেও তা মানছে অনেক গণমাধ্যম। যা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন সচেতন মহল।
আপনার মতামত লিখুন :