বিজ্ঞানীরা ‘ব্লু কোয়ানডংকে বিশ্বের একমাত্র নীল ফল চিহ্নিত করলেন


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২৮, ২০২৫, ৩:৫৪ অপরাহ্ণ /
বিজ্ঞানীরা ‘ব্লু কোয়ানডংকে বিশ্বের একমাত্র নীল ফল চিহ্নিত করলেন

বিশ্বের একমাত্র নীল ফল চিহ্নিত করলেন বিজ্ঞানীরা, এই বিরল ফলের নাম ‘ব্লু কোয়ানডং’।  প্রকৃতিতে নীল রঙের ফল না থাকার ধারণা বদলে দিলেন বিজ্ঞানীরা। তারা জানাচ্ছেন, পৃথিবীতে মাত্র একটি ফল আছে, যা কোনো রঙদ্রব্য বা পিগমেন্ট ছাড়াই স্বাভাবিকভাবেই উজ্জ্বল নীল দেখা যায়। এই বিরল ফলের নাম ‘ব্লু কোয়ানডং’ (Blue Quandong)। বৈজ্ঞানিক নাম Elaeocarpus angustifolius।

অস্ট্রেলিয়া, পাপুয়া নিউগিনি ও ইন্দোনেশিয়ার কিছু অঞ্চলের বৃষ্টি-অরণ্যে গাছটি পাওয়া যায়।

ফলটি দেখতে এত উজ্জ্বল ও ধাতব নীল রঙের যে, অনেকেই মনে করেন, ছবির রঙ এডিট করা। কিন্তু গবেষকেরা নিশ্চিত করেছেন, এই রঙ সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক। আশ্চর্যের বিষয় হলো, ফলে কোনো নীল পিগমেন্টই নেই। ফলটি নীল দেখায় ‘স্ট্রাকচারাল কালারেশন’ কারণে।

এটি এক ধরনের অপটিক্যাল প্রভাব, যেখানে ফলের খোসার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র স্তর আলোকে এমনভাবে প্রতিফলিত করে যে শুধু নীল তরঙ্গদৈর্ঘ্য চোখে পৌঁছায়। ময়ূরের পালক বা প্রজাপতির ডানা একই কারণে নীল দেখা যায়।

Nature এবং PNAS–এ প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, ফলের খোসায় ন্যানো-স্তরের সেলুলোজ স্তর গঠিত থাকে। নানা কোণে সাজানো এই স্তরগুলো নীল আলো প্রতিফলিত করে এবং অন্য সব রঙ বাতিল করে দেয়। তাই ফলটি প্রকৃত নীল দেখায়। বিজ্ঞানীরা যখন ফল থেকে নীল রঙ বের করার চেষ্টা করেন, তখন তা ধূসর হয়ে যায়—এতে প্রমাণ মেলে, রঙটি কোনো রাসায়নিক নয়।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই উজ্জ্বল নীল রঙ পাখিদের আকৃষ্ট করার জন্য বিকশিত হয়েছে। বৃষ্টি–অরণ্যের ঘন ছায়াতেও নীল ফলটি দূর থেকে চোখে পড়ে। ফলে পাখিরা সহজে ফল খুঁজে পায় এবং বীজ ছড়িয়ে দেয়।

ব্লু কোয়ানডং পৃথিবীর মাত্র কয়েকটি ফলের মধ্যে অন্যতম, যা পিগমেন্ট ছাড়া শুধু আলো প্রতিফলনের কৌশলে রঙ তৈরি করে। তাই একে প্রকৃতির এক বিরল বিস্ময় হিসেবে উল্লেখ করছেন গবেষকেরা। সূত্র: এনডিটিভি